জাতীয় ছাত্রদলের প্রধান পৃষ্টপোষক মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮-তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। ১৭ নভেম্বর’২৪ সন্ধ্যা ৬ টায় সুরমা মার্কেটস্থ এনডিএফ কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তুখোর আরেং এর সভাপতিত্বে ও শুভ আজাদ শান্ত’র পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ন আহবায়ক সায়মন কবির (বন্ধন), সদস্য সোলেমান ইসলাম, রুহেল আহমদ।
নেতৃবৃন্দ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর রাজনৈতিক বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি রাজনীতি করেছেন সমাজের খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ তথা কৃষক-শ্রমিক-সাধারণ জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। গত ৫ আগস্ট দেশে একটি রক্তক্ষয়ী পরিস্তিতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতার হাতবদল হয়। সা¤্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় আরেক দালাল। ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও স্বৈরাচারী রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সরকার, সংবিধানসহ স্বৈরাচারের প্রতিটি প্রতিষ্টান এখনও অক্ষুন্ন রয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের নামে ক্ষমতাসীন হয়েছে মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের আরেক দালাল ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার উপদেষ্টা পরিষদ। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী, চাকরি ছাঁটাই, বেকারত্ব প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। শ্রমিকের কাজের নিশ্চয়তা নেই। কৃষকের কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয়নি। এসকল বিষয় থেকে দৃষ্টি সরাতে নেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের স্টান্টবাজি।
শিক্ষা শেষে চাকরি নেই, উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা যখন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া, ১৬ বছরের স্বৈরাচারী দমন-পীড়ন দুর্নীতি, লুটপাট এবং অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বে জন-জীবন যখন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছে তখন স্বাভাবিক ভাবেই তা থেকে মুক্তি পেতে সরকার পতনের আন্দোলনে জনসাধারণ অংশগ্রহণ করে। আন্দোলনকারীদের দিয়ে বলানো হয় অনেক চমকপ্রদ কথা! স্বৈরাচার থাকবে না, বৈষম্য থাকবে না, দুর্নীতি হবেনা, চাঁদাবাজি হবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি বলা হলেও বাস্তবে দেশের শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র জনতা যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়ে গেছে। সেই লর্ড মেকেলের আমলের বৃটিশদের কেরানী তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, শিক্ষা শেষে চাকুরীর নিশ্চয়তার পরিবর্তে বিভিন্ন এনজিও মার্কা ফর্মুলা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ন্যায় রাষ্ট্রীয় পেটুয়া বাহিনীর গুলির শিকার হচ্ছে শ্রমিকরা।
নেতৃবৃন্দ সা¤্রাজ্যবাদের দালাল স্বৈরাচারী রাষ্ট্রযন্ত্রের বর্তমান উলঙ্গ প্রকাশের বিপরীতে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করে ছাত্র আন্দোলনকে সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করতে ছাত্র সমাজের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান এবং শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ, শিক্ষাঙ্গনে শাসক-শোষকগোষ্ঠীর পরিকল্পিত সন্ত্রাস ও বিভেদ সৃষ্ঠিকারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে সচেতন করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অগ্রসর করা আহŸান জানান।