একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী সিলেটের কৃতি পুরুষ সুজেয় শ্যাম মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন মেয়ে রুপা মঞ্জুরী শ্যাম।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৮ বছর। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সিলেটসহ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন সুজেয় শ্যাম। সম্প্রতি তার হৃদ্যন্ত্রে ‘পেসমেকার’ বসানো হয়। পরে তার শরীরে সংক্রমণ দেখা দেয়। সংক্রমণ পরে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া ডায়াবেটিসও ছিল অনিয়ন্ত্রিত। সমস্যা ছিল কিডনিতেও।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রেজাউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সুজেয় শ্যাম সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যুর খবর পাই।
একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানের সুর করেন সুজেয় শ্যাম। গীতিকার শহীদুল আমিনের লেখা ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি।
তার সুর করা গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি’, ‘আয় রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘শোন রে তোরা শোন’ ইত্যাদি। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক পান।
১৯৪৬ সালের ১৪ মার্চ সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামের শৈশব কাটে চা–বাগানে। দশ ভাইবোনের মধ্যে সুজেয় ছিলেন ষষ্ঠ। তার বাবা অমরেন্দ্র চন্দ্র শাহ ‘ইন্দ্রেশর-টি’ নামে একটি চা–বাগানের মালিক ছিলেন।