সহকর্মীদের ষড়যন্ত্রে হয়রানির শিকার ডাক বিভাগের কর্মচারী

পোস্ট অফিসে চাকরি জীবনে সহকর্মীদের ষড়যন্ত্রের কারণে অবসরে এসেও নানা জটিলতায় ভুগছেন প্রাক্তন পোস্টম্যান মো.ইকবাল হোসেন। গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ কায়স্থগ্রামের অবসরপ্রাপ্ত ডাক বিভাগের এই কর্মচারী মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, তার পিতা মরহুম আব্দুস ছত্তার ডাক বিভাগে সুনামের সাথে চাকরি করে গেছেন। পোষ্য কোটায় তিনি ১৯৯৮ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। সহকর্মী বন্ধু খালিদ মিয়া খালিলের পরামর্শে (বর্তমানে অপারেটার) বিয়ে করে হয়রানির সম্মুখীন হন। যার কারণে ২০১৮ সালে স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন। তালাকের পর খালিদ মিয়া নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। খালিদের কু-পরামর্শে ডাক বিভাগের ইউনিয়ন নেতা দুলন দত্ত, পরিদর্শক রুনু চক্রবর্তী, এপিএম ছাত্তার মিয়া ও পোস্ট মাষ্টার শাহজাহান পরিকল্পিতভাবে ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি অফিসে ডেকে নেন। এ সময় অফিসে পূর্ব থেকে অবস্থান করছিলেন তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী।
তার সহকর্মীরা তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ঘরে তুলতে চাপ প্রয়োগ করেন ও একপর্যায়ে তাকে মারধর করেন। এ ঘটনার পরদিন হয়রানিমূলক তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। সেই সাথে ওই মহিলাকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করানো হয়। এই মামলা চালাতে গিয়ে তাকে পৈত্রিক ভিটা বিক্রি করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আদালত এসব মামল থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। যড়যন্ত্রকারীরা বিষয়টি সমঝোতার নামে মুহিত লাল রায়ের মাধ্যমে তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বলেও জানান।
ইকবাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর পিএমজি পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম কার্যলয়ে উপস্থিত হয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে আনুতোষিক মজুরী ও পেনশনের জন্য লিখিত আবেদন করেন। পিএমজি বরাবরে দায়েরকৃত আবেদন সম্পর্কে পোস্ট মাস্টার প্রধান ডাকঘর সিলেট এই দরখাস্ত সম্পর্কে ওয়াকিফ থাকাবস্থায় পোস্ট মাস্টার সুজিত চক্রবর্তী ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবেদন দেন। ন্যায় বিচারের আশায় পোস্ট মাস্টার জেনারেল পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বরাবরে আপিল করেন। দীর্ঘ দিন অপেক্ষার পর জানতে পারেন এডিশনাল পিএমজি ড. নিজাম উদ্দিন ৭ সেপ্টেম্বর সিলেট আসছেন। তিনি পিএমজির সাথে সাক্ষাৎ করেন। পিএমজি ফাইল দেখার পর ডিপিএমজি সুজিত চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন অভিযোগকারীনিকে ইনসাফ সরূপ কিছু দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে। ডিপিএমজি সুজিত চক্রবর্তী সেই নির্দেশনা অমান্য করে চলেছেন। ডিপিএমজি প্রতিপক্ষের যোগসাজসে চারটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। যা তার এখতিয়ারের বর্হিভূত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইকবাল হোসেন জানান, ২১ বছর বাংলাদেশ ডাক বিভাগে পোস্টম্যান তথা সাব-পোস্ট মাস্টারের কাজ করেছেন সততা ও নিষ্ঠার সাথে। অবসর জীবনটা শান্তিতে কাটাতে পরিকল্পিত হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

শেয়ার করুন