
সিলেটের সনামধন্য কাজী জালাল উদ্দিন বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালিকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার দুপুরে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ড. রাগীব আলী মিলনায়তনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ উত্থাপন করেন এলাকাবাসী, অভিভাবক, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক এবং সিলেটের সচেতন নাগরিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালিক বিদ্যালয়ের ফিক্সড ডিপোজিট (FDR) ভেঙে এবং বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৬৭ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সিলেটের বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে শুরু করেন।
সাবেক শিক্ষক অধীর চন্দ্র নাথের দেওয়া তথ্য ও ব্যাংক সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার দাবি জানান আয়োজকরা।
তারা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অনিয়ম করেছেন, যা বিদ্যালয়ের ৮২ বছরের সুনাম ও শিক্ষার মানকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১২ অক্টোবর এলাকাবাসী মানববন্ধনের আয়োজন করলেও বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হায়াতুল ইসলাম আকুঞ্জি এবং সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর বিশেষ অনুরোধে প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষার্থে তা স্থগিত করা হয়।
পরবর্তীতে অভিভাবক প্রতিনিধি দল সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এছাড়াও মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে ডাকযোগে আরও একটি অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালিক অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় আন্দোলনকারীদের কাছে “অনৈতিক প্রস্তাব” দেন এবং রাজি না হওয়ায় তাদের “মামলার হুমকি” প্রদান করেন।
আয়োজকরা চারটি মূল দাবি তুলে ধরেন—
- অভিযোগের বিষয়ে নিরপেক্ষ প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন
- স্বচ্ছ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত পরিচালনা
- তদন্ত চলাকালে প্রধান শিক্ষককে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান
- দোষ প্রমাণিত হলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ
বক্তারা বলেন, “এই আন্দোলন কারও ব্যক্তিগত বিরুদ্ধে নয়; বরং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাক্ষেত্রের পবিত্রতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রয়াস।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক, স্থানীয় বাসিন্দা, প্রাক্তন শিক্ষক এবং সিলেটের বিভিন্ন স্তরের সচেতন নাগরিকরা।
বক্তব্যে একাধিকবার উল্লেখ করা হয়, “আমরা প্রধান শিক্ষক খালিক সাহেবের বিরুদ্ধে নয়, তার আর্থিক কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে। আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক স্বচ্ছতার প্রতীক, দুর্নীতির আশ্রয়স্থল নয়।”