
-সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেছেন, টাইফয়েড থেকে শিশুদের রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মরণব্যাধি থেকে বাঁচার উপায় হলো টিকা।তিনি বলেন,টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে নগরবাসী ও জেলাবাসী সুফল পাবে আশা করি। শনিবার সকালে “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫” উপলক্ষে জেলা তথ্য অফিস, সিলেট আয়োজিত ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় মিডিয়া পার্সনদের টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কনসালটেশন ওয়ার্কসপে(District Level Consultation Workshop with Media Personnel) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভাগীয় তথ্য অফিসের পরিচালক মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি আরো বলেন, গুজব প্রতিরোধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। যে কোন সংবাদের উৎস পর্যবেক্ষণ করলে গুজব বা অবাঞ্চিত সংবাদ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন,সত্যকে খুঁজে বের করতে পারলে বা সত্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারলে গুজব প্রতিরেধ সম্ভব।টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানোর আরেকটি কারণ হলো অনেক কোম্পানীর টিকা নিয়ে ব্যবসা।তিনি বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সরকার বিনামূল্যে যে টিকা দিচ্ছে তা বেসরকারি উৎস হতে সংগ্রহ করলে প্রায় ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা লাগবে। অনুষ্ঠানে টিকা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষষ নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ স্বপ্নীল সৌরভ রায়। তাঁর উপস্থাপনায় টাইফয়েড জ্বর কী, কীভাবে ছড়ায়, টাইফয়েড জীবানুর সুপ্তকাল, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী কারা, টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণসমূহ, কখন টিকা দেয়া যাবেনা, কোথায় টিকা দেয়া যাবে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী, কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করা হয়, টিকা কার্ড ছাড়াও টিকা দেয়া যাবে কী না ইত্যাদি বিষয় উঠে আসে।
টিকা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষষ নিয়ে সাধারণ আলোচনা ও নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জাহিদুল ইসলাম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ জন্মেজয় দত্ত ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ স্বপ্নীল সৌরভ রায়। জেলা তথ্য অফিসের সহকারী পরিচালক রকিবুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে ইউনিসেফ সিলেট হেলথ অফিসার ডাঃ মির্জা ফজলে এলাহী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিলেট বিভাগের ডিভিশনাল কো-অর্ডিনেটর ডাঃ খালিদ আহমেদ ও বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সিলেট এর বিভাগীয় উপপরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ জন্মেজয় দত্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রচার ও সমন্বয়) ডালিয়া ইয়াসমিন সংযুক্ত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন। সভাপতির বক্তব্যে মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন বলেন, সংবাদ পরিবেশন করার পূর্বে ফ্যাক্ট চেক করতে পারলে ভালো। আমাদের সংবাদ হবে জনকল্যাণমূলক। সিলেটের প্রত্যেকেই যেন স্বাস্থ্য সেবা পায় এবং নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী টাইফয়েড টিকার আওতায় আসে সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রাখতে হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৫শত ২২ জনসহ সিলেট জেলায় টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা রযেছে ১০ লক্ষ ১৬ হাজার ৫শত ২ জনকে। ৯ মাস হতে ১৫ বছর (১৪ বছর ১১ মাস ২৯ দিন) পর্যন্ত সকল শিশুই যেন টিকা প্রদান কার্যক্রমের আওতায় আসে। আমাদের লক্ষ্য হবে ১০০%। সিলেট বিভাগে টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা রযেছে ২৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৭৯ জন অর্থাৎ প্রায় ৩০ লক্ষ শিশুকে এই টিকা প্রদান করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য,টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন আগামীকাল থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে।চার সপ্তাহে মোট ১৮ কর্মদিবস ক্যাম্পেইন চলবে।প্রথম ১০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,পরবর্তী ৮ দিন কমিউনিটিতে।১৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে টিকাদান।৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি/সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ১ডোজ টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে।