সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মহি উদ্দিন বলেছেন, ‘কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা' এ বিষয়টিকে ধারণ করে ইংল্যান্ড-ভারত বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে ২০১০ সালের ০৮ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর পর সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সিলেট তথা বাংলদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য আমাদের অভিযাত্রা সুপরিকল্পিত, প্রাণবন্ত ও প্রতিশ্রুতিশীল।
প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বায়নের এ যুগে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা। মূলত গতানুগতিক
পদ্ধতির পাঠদান, নিম্ন মানের শিক্ষার পরিবেশ, প্রাইভেট ও নোট বই নির্ভর শিক্ষাপদ্ধতি, দক্ষ ও
প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের সংকট এবং ধারণ ক্ষমতার বেশি শিক্ষার্থী থাকার কারণে বাংলাদেশের
অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদিচ্ছা থাকার পরেও মানসম্মত শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে
রয়েছে। সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ সিলেট তথা বাংলদেশের শিক্ষাব্যবস্থার নেতিবাচক
দিক সমূহ মাথায় রেখে একটি নতুন এবং যুগান্তকারী বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা
ইতোমধ্যে সচেতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহলকে প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে। মূলত শ্রেণিকক্ষে
মানসম্মত পাঠদানের অভাবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়ার প্রতি ধাবিত হয়। এতে সময়
ও অর্থের অপচয় হয়। এ অবস্থা থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেয়ার জন্য আমরা নিয়ে এসেছি Spot
Learning Method-SLM। এ পদ্ধতিতে একজন শিক্ষককে ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করার
গাইডলাইন দেয়া হয় এবং শিক্ষার্থীরাও Class Oriented হতে বাধ্য হয়। ফলে একজন শিক্ষার্থী
কোন প্রকার প্রাইভেট পড়া ছাড়াই অধিকতর ভালো ফলাফল করতে সক্ষম হয় এবং পরবর্তীতে উচ্চ
শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কিংবা বিদেশের কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে self
confident হয়ে ওঠে।
সোমবার সন্ধ্যা সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ড. রাগীব আলী মিলনায়তনে অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পাঠদান পদ্ধতি বাংলা মাধ্যম, ন্যাশনাল কারিকুলাম ও সেমিস্টারভিত্তিক। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা- এই তিন বিভাগেই পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতি সেমিস্টার শেষে একটি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাসে উপস্থিতি, ড্রেসকোড, ক্লাস পারফরমেন্স, ডিসিপ্লিন ও দুটি টার্ম টেস্টের মার্কস যোগ করে সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বছরের শুরুতে বার্ষিক একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়। প্রতি সেমিস্টারের শুরুতেই প্রত্যেক শিক্ষক নিজ নিজ বিষয়ের পাঠ পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে পৌছে দেন। সেমিস্টার এর শুরুতেই সবলদের পাশাপাশি দুর্বলদের ও আলাদাভাবে যত্ন নেয়া হয় যাতে কমপক্ষে
এসএসসির তূলনায় এইচএসসিতে জিপিএ বাড়ানো যায় ৷ ক্লাস বেইসড ওয়ান টু ওয়ান ফর্মুলা প্রয়োগের ফলে দুর্বল শিক্ষার্থীরাও ভালো ফলাফল করার সুযোগ
পেয়ে থাকে। আমাদের রয়েছে স্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত একঝাঁক দক্ষ, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সেরা শিক্ষকমন্ডলী যারা শিক্ষার্থীদের সেরা প্রতিভা বিকশিত করতে বদ্ধপরিকর। এ ছাড়াও ক্লাসে কঠিন বিষয়গুলো খুবই
সহজে প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় ৷
অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসের নির্ধারিত সময়ের পরে Intensive Care Learning System-ICLS এর ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে ওয়ান টু ওয়ান টিচিং এবং পরীক্ষা ও নোট প্রদানের মাধ্যমে আলাদাভাবে যত্ন নেয়া হয় ।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার উন্নয়নের লক্ষে আমাদের রয়েছে একাডেমিক গার্ডিয়ানশিপ এবং
শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক সামগ্রকি আচার আচরণের উপর দৈনন্দিন গ্রেডিং পদ্ধতি। যার ফলে একজন শিক্ষার্থী সহজেই আদর্শ মানুষ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিঙ্গার রিডার অটোমেশিন এর
মাধ্যমে উপস্থিতি নিশ্চিত ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি-অনুপস্থিতি সহ সকল বিষয়ে এসএমএস এর
মাধ্যমে অভিভাবকদের অবগতিকরণ, সার্বক্ষণিক নিজস্ব গার্ড এবং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিরাপত্তা
নিশ্চিত এর সু ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ, বিকল্প বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, সমৃদ্ধ পাঠাগার, সুবিশাল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার ল্যাব, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, ক্যাফেটেরিয়া, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বার্ষিক শিক্ষা সফর ইত্যাদি।
উন্নত বিশ্বের সুযোগ সুবিধা প্রদান করলেও সকল কোর্সের ফিস কিন্তু খুবই যুক্তিগ্রাহ্য। আমাদের
মৌলিক শ্লোগান হচ্ছে-কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা। আমরা সবসময় আন্তর্জাতিক মানসম্মত
শিক্ষাসেবা প্রদান করার চেষ্টা করি কিন্তু ফিস সবসময় সাধারণ মানুষের সামর্থের মধ্যে থাকছে
প্রিন্সিপাল বলেন, সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ তার শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক বিষয়েই যে গুরুত্বারূপ করে থাকে বিষয়টি এমন নয়। বরং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই বছরব্যাপী শিক্ষার্থীদের
সহপাঠ্যক্রমের ও ব্যাপক অনুশীলন করে থাকে। যেমন, শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ, বণ্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ, রোহিঙাদের সহযোহিতা, ইভটিজিং ও মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং, পিঠা উৎসব, বিজ্ঞান মেলা, বই মেলা, ডিজিটাল মেলাসহ আরো অনেক কিছু। এছাড়া সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ২০২৪ সাল হতে সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্মত শিশুদের জন্য করেছে The Special Childhom নামে একটি স্কুল।
তিনি ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ টি বিষয় বিবেচনা করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের পরামর্শ আপনার সন্তানকে যে কোন কলেজে ভর্তির পূর্বে অন্তত ০৫ টি বিষয় বিবেচনায় রাখুন ।
১. কলেজটি কি রাজনীতি, ধূমপান ও সন্ত্রাসমুক্ত?
২. ঐ কলেজে বছরে কতদিন ক্লাস হয় বা আদৌ ক্লাস হয় কি না?
৩. ঐ কলেজের শিক্ষকরা স্থায়ী না খন্ডকালীন?
৪. ভর্তির পর আবারো প্রাইভেট টিচারের বাসায় গিয়ে পড়তে হবে কি না?
৫. শিক্ষার্থীরা এসএসসি'র তুলনায় এইচএসসি'তে ভালো ফলাফল করতে পারবে কি না?
সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে অনেকেই সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। পড়াশোনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে পরবর্তিতে ডাক্তার,
ইঞ্জিনিয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সমাজের উচ্চাসনে নিজেদের সমাসীন করেছে। যা নিয়ে
আমরা গর্বিত । পরিশেষে সচেতন অভিভাবকমন্ডলীদেরকে বলতে চাই, আমাদের সকল আযোজনের মূল প্রতিপাদ্য আপনার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এবং তাকে মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। তাই সম্মানিত অভিভাবদের প্রতি একটি অনুরোধ, ‘আপনার
সন্তানকে অন্য কোন কলেজে ভর্তি করার পূর্বে অন্তত একবার আমাদের সাথে কথা বলুন, আমাদের
কথা শুনুন এবং আমাদের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করুন।'
উল্লেখ্য, সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বাংলাদেশ এ ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির যোগ্যতা যথাক্রমে বিজ্ঞান
বিভাগ=৩.৫, মানবিক বিভাগ=২.৫ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ=২.৫।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ সবল কুমার তালুকদার, প্রভাষক রনি কুমার, প্রভাষক আস্রাফুল ইসলাম ও মার্কেটিং অফিসার নিহার রঞ্জন।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net