হিন্দু সম্প্রদায়ের ভুমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা ও ভুমি বিক্রি করতে বাধ্য করা সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত সিলেটের বহুল আলোচিত সিলেট সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও জালালাবাদ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল আমিন খুকুকে আটক করেছে পুলিশ। সে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও চাতলীবন্দ গ্রামের মৃত আবুল কালামের পূত্র। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে জালালাবাদ থানার সোনাতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ চৌধুরী। আটক খুকু ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। ৪ আগস্ট নগরীর কোর্ট পয়েন্টেও সস্ত্র অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এলাকায় মাদক বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর ফ্যাস্টিস্ট আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান মেম্বাররা পালিয়ে গেলেও মাদকাসক্ত নূরুল আমিন খুকু বিএনপি-জামায়াতের একটি ভুমিখেকু চক্রের সেল্টারে টুকেরাবাজার ইউনিয়নের চাতল-মৌলাটিকর এলাকায় প্রকাশ্যে ভুমি দখল, চাদাবাজি করে আসছিলো। সম্প্রতি চাতলীবন্দ এলাকায় দিরাই-শাল্লার অধিবাসী হিন্দু ধর্মালম্বী ১৭ জন মালিকের শতাধিক শতক ভুমি দখল করে তাদের ভুমি বিক্রি করতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। এর পেছন থেকে সাপোর্ট দেন বিএনপি-জামায়াতের একটি চক্র। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিস করে নানাভাবে ভুমি বিক্রির চাপ প্রয়োগ করেন ভুমি মালিকদের। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে খুকু মেম্বারকে গ্রেফতারের উদ্যোগী হয় পুলিশ। এরপরপরই আটক হয় খুকু। তার বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার মামলা নম্বর-৫০ (৩০/১২/২০২৪), ০১ (১২/০৯/২০২৪), ২৫ (১২/০৯/২০২৪) ও জালালাবাদ থানার মামলা নং ০৬, (২৪/০৮/২০২৪)সহ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় আরো মামলা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে মেম্বার হওয়ার কারনে এলাকায় কোন ভুমি বিক্রি হলেই তাকে ৫ অথবা ১০ ভাগ চাঁদা দেয়া লাগতো। এলাকায় তার রয়েছে কিশোর গ্যাং। যারা চুরি ছনিতাইসহ নানা অপরাধ সংঘটতি করে। তাকে সহায়তা করেন বিএনপি-জামায়াতের একটি প্রভাবশালী চক্র ও এলাকার কিছু সালিশি ব্যক্তিবর্গ। সর্বশেষ লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এক নেতার ভুমি দখলেরও চেষ্টা করেন নূরুল আমিন খুকু। এছাড়া এলাকায় মাদক বিস্তারেরও অভিযোগ রয়েছে এই খুকুর বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের গ্রাম চাতলীবন্দ হওয়ায় কুমারগাও তেমুখি এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পতিত সরকারের নির্যাতন নিপিড়নমূলক সকল কর্মকান্ডে জড়িত ছিল নূরুল আমিন খুক। কুমারগাও তেমুখি এলাকায় সন্ত্র অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতো সে। অভিযোগ রয়েছে শাবি এলাকায় রুদ্রসেনকে ধাওয়া দেয়া ছাত্রলীগের মিছিলেরও সামনে ছিলো নূরুল আমিন খুকু। ধাওয়া খেয়ে লেকে পড়ে গিয়ে রুদ্র সেনের মৃত্যু হয়।
এব্যাপারে জালালাবাদ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ চৌধুরী বলেন, নূরুল আমিন খুকু আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কতটা মামলা রয়েছে তার তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net