
কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা কমরেড দ্বিজেন সোম-এর ২২-তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।
২৭ জুন বিকেল ৫.৩০ মিনিটের সময় সংগঠনের সুরমা মার্কেটস্থ জেলা কার্যালয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে এবং সহ সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, সিলেট সদর উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি হজর আলী, মীরের চক শ্রমজীবী সংঘের আহবায়ক আলী আহমদ।
সভার শুরুতে কমরেড দ্বিজেন সোমের জীবনী ও তাঁর কর্ম নিয়ে লিখিত বক্তব্য রাখেন এনডিএফ জেলা কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম। এ দিন সকাল ৮ টায় চালিবন্দরস্থ উঁনার সমাধিস্থলে পুষ্পস্থপবক অর্পণ করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটি।
বক্তারা বলেন বাংলাদেশ একটি নয়া উপনিবেশিক আধা সামন্তবাদী রাষ্ট্র, বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে অদ্যবধি প্রতিটি সরকারই অনেক জাতীয় স্বার্থ বিরোধী প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়ন করছে যা সা¤্রাজ্যবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করে চলছে। পূর্বের সকল সরকারের ধারাবহিকতায় বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার সা¤্রাজ্যবাদী আমেরিকার স্বার্থে মায়ানমারেকে মানবিক করিডোর প্রদানের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা মুখে ভারত বিরোধীতার কথা বললেও ভারতের সাথে শেখ হাসিনা সরকারের করা কোনো চুক্তি বাতিল করেনি উপরন্তু ক্ষমতা গ্রহনের পর প্রভু সা¤্রাজ্যবাদকে খুশি রাখতে দেশ বিরোধী চুক্তি গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সা¤্রাজ্যবাদী যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দেশের শ্রমিক-কৃষক মেহণতি মানুষ ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী সকল দেশপ্রেমিক শক্তি ব্যক্তির প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন ১৯৩৭ সালে দোকান কর্মচারি থাকাবস্থায় কমরেড দ্বিজেন সোম ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং অনুধাবন করেন সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব ব্যাতীত জনগণের মুক্তি আসবে না। কমিউনিস্ট পাটির নেতৃত্বে তেভাগা কৃষক আন্দোলন এবং সিলেট অঞ্চলে গড়ে ওঠা নানকার প্রথা বিরোধী কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার কাজে কমরেড অজয় ভট্টাচার্যের সাথে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
দীর্ঘ ৬৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে প্রায় ৪০ বছর তাঁকে আত্মগোপনে থেকে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে হয়। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা প্রতিকূলতা সত্তে¡ও মার্কসবাদ লেনিনবাদ এর লাল পতাকাকে সমুন্নত রাখেন এবং সকল রূপের সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম পরিচালনা করেন। আমাদের মতো নয়াউপনিবেশিক ও আধাসামন্তবাদী দেশে জাতীয় জীবনের দূর্দশা ও সংকটের মূল কারণ সাম্রাজ্যবাদ ও দালালদের নির্মম শোষণ নির্যাতন। আর এই শোষণ নির্যাতন থেকে মুক্তির একমাত্র পথ শোষণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উচ্ছেদ এবং যা শ্রমিক কৃষক জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসতে পারে। এই ছিল তাঁর প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকার। এ লক্ষ্যে সমগ্র জীবন তিনি দ্বিধাহীন চিত্তে লড়ে গেছেন তাঁর আদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদই মানব মুক্তির একমাত্র পথ- এই ছিল তাঁর দর্শন।