
কোম্পানীগঞ্জের কালিবাড়ির সালিস ব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ছালাতুন নেছা অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর পাথরখেকো সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ওই সিন্ডিকেটের হোতা সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহার ও তার লোকজন ভোলাগঞ্জ-কালাইরাগ কোয়ারিতে তার ২ কোটি টাকার পাথর ও বালু লুট করে নিয়েছে। বাধা দেয়ায় তার সন্তানদের মারধর মারধর করেছে। পুলিশ তার সন্তানদের উদ্ধার করলেও কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি তাদের মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
সোমবার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে ছালাতুন নেছা জানান, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে গত ৭-৮ মাস ধরে বালু ও পাথর লুট করা হচ্ছে। আর এই লুটে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুবদল নেতা বাহার ও আজিদ সিন্ডিকেট। তাদের শেল্টার দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা। সঙ্গে রয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান। তাদের অবাধ লুটপাটের কারণে এবার ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে শতকোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ৮ এপ্রিল হঠাৎ করে পাশ্বর্তী গ্রামের বাসিন্দা আলোচিত পাথরখেকো বাহার, তার ভাই গিয়াস ও নাজিম উদ্দিন সহ পাথরখেকো সিন্ডিকেটের কয়েকজন সশস্ত্র সদস্য তাদের ভূমি থেকে পাথর লুট শুরু করে। এ সময় বাড়িতে থাকা তার ছেলে বিলাল, হেলাল ও ইউনুছ মিয়া সেখানে গিয়ে বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে বাহারের নেতৃত্বে তার ভাই ও সিন্ডিকেট সদস্যরা লাঠিসোটা দিয়ে তার ছেলেদের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে এলাকার লোকজন এগিয়ে গিয়ে তার ছেলেদের উদ্ধার করে। গুরুতর আহত তিন ছেলেকে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দিকে রওয়ানা দিলে সন্ধ্যায় লাজুখাল সেতুর ওখানে ফের পাথর খেকোরা তার ছেলেদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে তার ছেলেদের উদ্ধার করে। কিন্তু পুলিশ তার ছেলেদের রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে না নিয়ে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ পাথর খেকোদের নির্দেশে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।
ছালাতুন নেছা আরো জানান, তার ছেলেদের গ্রেফতারের পর তার বাড়ির পাশের ভূমিতে যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করে অবাধে বালু ও পাথর লুট শুরু করে ওই সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে প্রায় ২ কোটি টাকার বালু ও পাথর লুট করে নিয়েছে। এসব বিষয়ে তিনি থানায় একাধিকবার অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পুলিশের কাছে ন্যায় বিচার না পেয়ে তিনি নিজে বাদি হয়ে গত ২০ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহন করে তদন্তের জন্য সিলেটের ডিবি পুলিশকে দিয়েছেন। এর পাশাপাশি কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির নাটকীয় ভূমিকার জন্য গত ১৫ এপ্রিল সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বলেও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ভোলাগঞ্জের কোয়ারিতে বাহার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে বালু ও পাথর লুট করছে। তাদের ভয়ে অনেক জায়গার মালিক মুখ খুলেন না। পাথর খেকোরা তার ওপর মিথ্যা মামলা ও হামলার আশংকা রয়েছে বলে জানান। জানমালের নিরাপত্তায় তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সেই সাথে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে অপসারণের দাবি জানান।