
এক্সেলসিয়রের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ জামাল নুরুল হুদা এবং বর্তমান এমডি মাশুকুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন গোয়াইনঘাটের জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা ও রিসোর্টের অপারেশন এডমিন বিলাল উদ্দিন আহমদ। তাদের রোষানলে পড়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিলাল।
লিখিত বক্তব্যে বিলাল উদ্দিন জানান, ২০২৩ সালে তিনি এক্সেলসিয়রে যোগদান করেন। তখন ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন শাহ জামাল নুরুল হুদা। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা শেয়ার হোল্ডার না হয়েও জনৈক যুবলীগ নেতার শেল্টারে তিনি প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে পরিচালকগণ (সবাই প্রবাসী) দেশে এসে সভা করে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে জিলু মিয়াকে এবং এমডি হিসেবে মাশুকুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। চলতি বছলের ১৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকগণ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে অবৈধভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী শাহজামাল নুরুল হুদাকে প্রতিষ্ঠান ছাড়তে বলেন। যার প্রেক্ষিতে তিনি চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে যান। যাওয়ার আগ মূহুর্তে তিনি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে সবাইকে তার সাথে প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেই অনুরোধ রক্ষা করেন।
তিনি আরো জানান, নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেয়ার পর সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের নতুন করে চাকুরিতে যোগদানের অনুরোধ জানান। সেদিন অনেককে পদোন্নতি দেয়া হয়। তাকে ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে অপারেশন এডমিন পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের এমন খবর পেয়ে তার ওপর ক্ষেপে যান শাহ জামাল নুরুল হুদা। ক্ষিপ্ত নুরুল হুদা ফোন করে হুমকি দেন। তার রোষানলে পড়ে আজ তিনি দুইটি রাজনৈতিক মামলা ও একটি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর/ মারামারি মামলার আসামি বলে জানান। এই তিনটি মামলার বাদী শাহ জামাল নুরুল হুদার গাড়ি চালক ও পিএস মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। এমনকি তিনটি মামলার সাক্ষীও একই।
বিলাল উদ্দিন আরো জানান, ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতনের সুযোগে ৫ আগস্ট বিকেলে শাহ জামাল নুরুল হুদার নির্দেশে তার গাড়ি চালক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম লোকজন নিয়ে এক্সেলসিয়রে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দখলে নেন। তারা কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধর করে বের করে দেন। প্রাণভয়ে তিনিও সবকিছু ফেলে পালিয়ে যান। পরের দিন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মোবাইল, কাপড়চোপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উদ্ধার করেন। ১৯ অক্টোবর এক্সেলসিয়র পরিচালকগণ প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের কবল থেকে উদ্ধার করলে পূণরায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দেন। এরইমধ্যে ঘটে আরেকটি ঘটনা। বর্তমান এমডি মাশুকুর রহমান আয় ব্যায়ের হিসাবে চরম গরমিল তৈরি করেন। যেটি পরিচালকরা বুঝতে পারেন। এছাড়া, মাশুকুর রহমানের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিষয়ে পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারগণ ক্ষুব্ধ হন। মাশুকুর রহমান ব্যাতীত অপর ৯ পরিচালক প্রবাসে জরুরী বৈঠকে বসেন। তারা অনিয়মের বিষয়ে মাশুকুর রহমানের নিকট জানতে চান। তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। তখন পরিচালকগণ মাশুকুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একমত হন। এমন খবর পেয়ে মাশুকুর রহমান কৌশল অবলম্বন করে নুরুল হুদার পক্ষ অবলম্বন করেন। তারা দুজনে মিলে প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় দখলে নেয়ার পায়তারা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক হুদার গাড়ি চালক আমিনুল ইসলাম এবং মাশুকের ভাতিজা এমদাদুল হক সনি একদল সন্ত্রাসী নিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় দখল নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেন। খবর পেয়ে সকল পরিচালকগণ দেশে এসে সিদ্ধান্ত নেন প্রতিষ্ঠানটি মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেবেন। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক যুক্তরাজ্য প্রবাসী জসিম উদ্দিনকে তারা ভাড়া দিয়ে দেন। পরে জসিম উদ্দিনকে সাথে নিয়ে পরিচালকগণ গত ২৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠান দখলকারীদের কাগজ দেখাতে বললে তারা কোন কাগজ দেখাতে পারেননি। পরে দখলকারীদের বের করে পরিচালকগণ জসিম উদ্দিনকে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন আমি একজন নিরপরাধ মানুষ। পেটের দায়ে এক্সেলসিয়র সিলেটে চাকুরি করি। যে কারনে শাহজামাল নুরল হুদা এবং মাশুকুর রহমানের রোষানলে পড়ে তিন তিনটি মামলায় আসামি হতে হয়েছে। এছাড়া এই মামলাগুলোতে এক্সেলসিয়র সিলেটের বর্তমান চেয়ারম্যান জিলু মিয়া, পরিচালক আব্দুল বাসেত খান ও পরিচালক মাসুম আহমদকে পরিকল্পিতভাবে আসামি করা হয়েছে। তিনি এসব মিথ্যা মামলা থেকে রেহ্ইা পেতে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।