ছয় দফা দাবিতে রোববার (২০ এপ্রিল) সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে একযোগে মহাসমাবেশ করছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি শেষে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীদের এই জোট।
আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের মূল লক্ষ্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং যৌক্তিক দাবিগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, আমাদের দাবি দ্রুত মেনে নিন, তাহলেই আমরা রাজপথ ছাড়ব। কুমিল্লায় আমাদের সহপাঠীদের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করুন। আলোচনায় বসতে আমরা আগ্রহী।
এর আগে, শনিবার অনুষ্ঠিত পূর্বঘোষিত ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১টার দিকে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে মানববন্ধন ও প্রতীকী প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে মূল ফটকে লাল কাপড় টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নতুন কর্মসূচি হিসেবে আজকের মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কুমিল্লায় তাদের ভাইদের ওপর হামলার বিচার চান তারা। তারা জানান, তাদের দাবি যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও এখনও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি হলো-
১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
২. ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
৩. উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৫. স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
৬. পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net