এসপির নির্দেশ সত্ত্বেও গোলাপগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্র অপহরণ করে নির্যাতনের ঘটনার মামলার আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আসামিদের ইলেট্রিক শকে গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি মাদ্রাসা ছাত্র আবু তাহেরের অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। থানা পুলিশের অভিযানের আগাম খবর পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে আসামিরা। আসামি পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা চলছে। গতকাল শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব অভিযোগ করেন নির্যাতিত মাদ্রাসা ছাত্রের চাচা গোলাপগঞ্জের বাঘা ইউনিয়নের নলুয়া কান্দি গ্রামের মো. নূরুল ইসলাম ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে গত ২৮ মার্চ রাত ১২টার দিকে মাদ্রাসায় দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া তার ভাতিজা আবু তাহেরকে ডেকে নেয় এবং অস্ত্রের মুখে সিএনজি অটোরিক্সায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ছিল নলুয়া কান্দিগ্রামের মৃত আব্দুর রহিম চেরাগের ছেলে রাহেল আহমদ, একই গ্রামের লায়েক আহমেদের ছেলে ছানি আহমদ, ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামের মাহতাব আহমদের ছেলে, তুরুকভাগ পশ্চিমপাড়া গ্রামের ফরহাদ আহমদ, দাসপাড়া এলাকার আব্দুল আজিদ (হাফিজ)’র ছেলে মাহবুবসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬জন। তারা পরিকল্পিতভাবে কান্দিগ্রাম ঈদগাহ সংলগ্ন মাঠে নিয়ে তার ভাতিজার হাত পা বেঁধে নির্যাতন করে ও ইলেকট্রিক শক দেয়। এতে আবু তাহের নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃত ভেবে কান্দিগ্রাম ঈদগাহর পাশে খালি জায়গায় ফেলে রাখে। বর্তমানে মাদ্রাসা ছাত্র আবু তাহের ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। তার শারিরীক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে।
নূরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত ৩ এপ্রিল গোলাপগঞ্জ থানায় চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ২১ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানের আগাম খবর কে বা কারা আসামিদের অবগত করলে তারা দ্রুত নিরাপদে পালিয়ে যায়। আসামিদের স্বজনরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সন্ত্রাসী ও অপহরণকারীদের পক্ষ নিয়ে সংঘবদ্ধ একটি শক্তিশালী অপরাধ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে। মামলার এজাহার নামীয় আসামিদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থায় তিনি নিরুপায় হয়ে গত ১৩ এপ্রিল আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সুপারের কাছে দরখাস্ত দেন। পুলিশ সুপার দরখাস্ত পেয়ে গোলাপগঞ্জ থানার ওসিকে মুঠোফোনে আসামিদের গ্রেপ্তারে তিন দিনের সময় বেধে দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিরা প্রকাশ্যে তাদের বাড়ি ঘরে বসবাস করলেও রহস্যজনক কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মাদ্রাসা ছাত্র আবু তাহেরকে অপহরণ ও নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net