সিলেটে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতার কবল থেকে নিজের টাকায় কেনা ভূমির দখল ফিরে পেতে ধারে ধারে ঘুরছেন হাবিবুর রহমান চৌধুরী নামের এক শিক্ষানবীশ আইনজীবি। হাবিবুর রহমান চৌধুরী জকিগঞ্জ উপজেলার আব্দুশ শুকুর চৌধুরীর ছেলে। তার আপন ভাই ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সিলেট ল কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফয়সল আহমদ চৌধুরীর সাথে যৌথ ভাবে জমি ক্রয় করে বাসা তৈরি করেন তিনি। তবে সেই বাসায় বর্তমানে ঠাই হচ্ছে না তার। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে সেই বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী।
নিজের জমিতে অধিকার ফিরে পেতে নানা ভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ জানুয়রি মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ২য় আদালতে মামলার আবেদন করেছেন হাবিবুর রহমান চৌধুরী। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য মামলা সিআইডিতে প্রেরণ করেছেন। এরই সাথে আগামী ৪ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আবেদনে হাবিবুর রহমান চৌধুরী তার আপন ভাই ফয়সল আহমদ চৌধুরী ছাড়াও আসামী হিসেবে আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হলেন, ফয়সাল আহমদ চৌধুরীর স্ত্রী মুমিনা আক্তার চৌধুরী, মনসুর আহমদ চৌধুরীর স্ত্রী শাহানারা আক্তার চৌধুরী, আব্দুর রহিম চৌধুরীর স্ত্রী রেশমা বেগম চৌধুরী।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবি এডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুল্লা জানান, আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের জন্য দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আদালত ও মামলা সুত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর শাহপরান (রহ) থানাধীন বহর মৌজায় (জেএল নং- ৭০, এস.এ খতিয়ান নং- ৭০, দাগ নং এসএ ২৩৫৫/৩২২২) ৬ শতক জমি ২০১০ খ্রিস্টাব্দে মোঃ মস্তাক আহমদ চৌধুরী ও মোঃ হেলাল আহমদ চৌধুরীর নিকট থেকে ক্রয় করেন জকিগঞ্জ উপজেলার আব্দুশ শুকুর চৌধুরীর ছেলে হাবিবুর রহমান চৌধুরী ও ফয়সল আহমদ চৌধুরী। জমি কেনার পর থেকে এখানে বাসা তৈরি করে দুই ভাই পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসলেও সম্প্রতি সময়ে হাবিবুর রহমান চৌধুরীর জমিসহ বাসা আত্মসাত করার লক্ষ্যে তাকে চক্রান্ত করে বাসা থেকে বের করে দেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী মুমিনা আক্তার চৌধুরী।
হাবিবুর রহমান চৌধুরী মামলায় অভিযোগ করেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী সিলেট ল কলেজ ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি ও বেশি টাকা-পয়সার মালিক হওয়ার কারণে তার পক্ষ নেন তার আপন বোন শাহানারা আক্তার চৌধুরী ও রেশমা বেগম চৌধুরী।
মামলার আবেদনে হাবিবুর রহমান চৌধুরী আরও অভিযোগ করেন, স্বত্ব ফিরে পেতে হাবিবুর রহমান চৌধুরী ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর শাহপরান (রহ.) থানায় জিডি (নম্বর-১১৪) করলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ফয়সল আহমদ চৌধুরী পার পেয়ে যান। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন যা ২০২৩ সালে ০৬ সেপ্টেম্বর তারিখে শুনানী হয়। সেখানে বিবাদীদের মুচলেকা নিয়ে উভয় পক্ষকে নিজ নিজ অংশে শান্তিপূর্ণ দখলে থাকার নির্দেশ প্রদান করেন। পরে তাও বিবাদীরা মানেন নি।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফয়সল আহমদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে বারবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net