আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজদের লুটপাটের ক্ষেত্র ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণ প্রকল্প বন্ধের আহবান

ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণ প্রকল্পকে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের লুটপাটের একটি প্রকল্প হিসেবে অভিহিত করেছেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপের নেতৃবৃন্দ। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের দুর্নীতিবাজদের অর্থ লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরীর জন্য এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
গুরুত্বহীন এই প্রকল্পেরে র্নিমাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধ করে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ব্যবসার স্থান ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপ।
সিলেট নগরের একটি অভিজান রেস্টুরেন্টের হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমরা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানী করছি। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে স্থলবন্দর নির্মাণকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী শ্রমিক এবং এলাকাবাসী নানাভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষনা করে ১৭৫ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্প গ্রহন করা হয়। গত বছরের জানুয়ারি থেকে এই স্থল বন্দর নির্মাণ কাজ চলছে। কিন্তু যেভাবে উভয় দেশে তামাবিল ও ডাউকিতে স্থলবন্দরের অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে সেভাবে ভোলাগঞ্জ হয়নি। এখানে ভারতের ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য শুধু বাংলাদেশর সীমান্তে স্থল বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের অধিভুক্ত এলাকায় আগে কয়েকশ ব্যবসায়ীর কার্যালয় ও পাথর ডাম্পিং এলাকা ছিলো। কিন্তু প্রকল্প কাজ শুরু করার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে ফ্যাসিস্ট সরকার কোম্পানীগঞ্জ প্রশাসন দিয়ে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের অফিস ও ডাম্পিং স্টেশন গুড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পানি দিয়ে পেশার দিয়ে ড্রেজার মেশিন দ্বারা ডাম্পিংয়ে রাখা প্রায় ৫/৬ কোটি টাকার পাথর মাটির নিচে চলে যায়। সেই পাথরগুলো আর বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। পুরো টাকাই ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তিনি বলেন ব্যবসায়ীদের দাবি অগ্রায্য করে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ চলমান রয়েছে। স্থলবন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান এই প্রকল্পে বড় অঙ্কের টাকা দুর্নীতি করেছেন। এই দুর্নীতিকে হালাল করতে এখনো স্থলবন্দরের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে প্রকল্পের মাটি ভরাটে। ভোলাগঞ্জের সবচেয়ে উচু এলাকায় বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সহজভাবে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ভোলাগঞ্জ বাজার, গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী পাডুয়া এলাকায় ডাম্পিং স্টেশন ও অফিস নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন। কিন্তু এতে পরিবহন ব্যায় অনেক বেশি পড়ছে। এছাড়া মানুষ বসবাসকারী গ্রামগুলোতেও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। স্থল বন্দরের প্রকল্প কর্মকর্তা ব্যবসায়ীদের অফিস, ঘর, সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি সহ স্থাপনা বাবদ ক্ষতিপুরন প্রদানের আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে তাদের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের দাবি হচ্ছে- অবিলম্বে এই স্থলবন্দর নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হোক। অন্যথায় সাধারণ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ে বাধ্য হবেন। সংবাদ সম্মেলনে আর উপস্থিত ছিলেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিন, কোষাধক্ষ আব্দুস সালাম বাবুল, সদস্য নোমান আহমদ ও ফখরুল প্রমুখ।

শেয়ার করুন