দরিদ্র মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে
দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে শমশেরনগর হাসপাতাল। ধাপে ধাপে এই হাসপাতালকে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা হবে। এছাড়া একটি মেডিকেল কলেজ ও একটি নার্সিং কলেজ গড়ে তোলা-ই হচ্ছে এই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য। এই অলাভজনক হাসপাতালের সেবা ধনীদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে, মধ্য আয়ের লোকদের জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জন্য টোকেন মূল্যে প্রদান করা হবে।
মৌলভীবাজার জেলার ঐতিহ্যবাহী শমশেরনগরে প্রতিষ্ঠিত ‘শমশেরনগর হাসপাতাল’-এর উদ্যোগে পরিচিতিমূলক সুধী সমাবেশ ও ফান্ডরেইজিং ডিনার অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। গত শনিবার (১৫ ফেব্রæয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর এক রেস্তোরাঁয় এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সেলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক রাজু চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার জামিল আহমেদ চৌধুরী, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম ফরিদ উদ্দিন, এজিএম মাকসুদা বেগম, সাবেক পুলিশ সুপার কাওসার আহমেদ হায়দরী, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নবাব উদ্দিন, চ্যানেল এস এর সিলেট বুরো প্রধান মঈন উদ্দিন মঞ্জু, অধ্যাপক জেবা আমাতুল হান্না, রাফসান রহমান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জনসেবী ফকু চৌধুরী, অধ্যাপক রাবেয়া মুন্নী ও হাসপাতালের প্রবাসী সংগঠক সাইফুর রহমান কামরান। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মাকসুদা বেগম, সমীরণ নাথ, রাজু আহমেদ ও শহীদুল হক। উল্লেখ্য, হাসপাতালটি গড়ে তোলার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেলিম চৌধুরী। ময়নুল ইসলাম খানের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে প্রবাসী দম্পতি সরওয়ার জামান ও আলেয়া জামানের দানকৃত ১৫১ শতক ভূমিতে ইতোমধ্যে তাদের প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরের কাজ শেষ হয়েছে। দেশ ও প্রবাসে ছড়িয়ে থাকা একদল সংগঠকের তৎপরতায় এরই মাঝে আউটডোর সেবা চালু হয়েছে, রয়েছে পূর্ণাঙ্গ ল্যাবরেটরি সুবিধা। রোগী পরিবহনের জন্য প্রবাসী শিবলী আহমেদ চৌধুরী একটি সুসজ্জিত অ্যাম্বুলেন্স দান করেছেন। আরেক বিলেত প্রবাসী নিজ খরচে ভবনের দোতলা আলহাজ্ব ফয়জুল হক ফ্লোর নির্মাণ করে দিচ্ছেন।
সভাপতির বক্তব্যে সেলিম চৌধুরী জানান, এই হাসপাতালে দরিদ্র মানুষ মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে সকল সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এই ৫০ টাকা গ্রহণের উদ্দেশ্য তারা যাতে মনে না করেন তাদের করুণা করা হচ্ছে, তাদের মন যাতে ছোট না হয়। হাসপাতালের মূল সুবিধাভোগী দরিদ্র মানুষের সেবার খরচ বহনে হাসপাতালের দুটি তহবিল রয়েছেÑএকটি সাদাকা তহবিল ও অন্যটি জাকাত তহবিল। জাকাত তহবিল প্রশাসক হিসেবে আছেন একজন স্থানীয় ইমাম এবং ইমামদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের জাকাত বোর্ড। তিনি সিলেটের সুধী ও ধনাঢ্য সমাজের কাছে হাসপাতালটি গড়ে তোলার জন্য অনুদান প্রদান এবং পরিচালনার জন্য জাকাত ও সাদাকা তহবিলে দান করার অনুরোধ জানান। তিনি জানান, মাত্র ১ লক্ষ টাকা দিয়ে যে কেউ হাসপাতালের আজীবন সদস্য হতে পারেন। আজীবন সদস্যদের নাম হাসপাতাল প্রাঙ্গণের ফলকে অঙ্কিত থাকবে। আমরা এমন একটি হাসপাতাল বানাতে চাই যেখানে কারো টাকা থাকুক বা না থাকুক বিনা প্রশ্নে চিকিৎসা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা এই মহতী উদ্যোগকে সফল করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net