‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত


রাষ্ট্রের সংশোধন এবং মেরামতের জন্য পিছিয়ে পড়া শিশুদেরকে সম্পদে পরিণত করতে হবে
…বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মোঃ রেজা-উন-নবী বলেছেন, রাষ্ট্র আমাদের। এর সংশোধন এবং মেরামত আমাদেরকেই করতে হবে। এই সংশোধনের আওতায় পিছিয়ে পড়া শিশুরাও আছে। তাদেরও শিক্ষা অর্জনের অধিকার রয়েছে। একটি সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপই পারে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করতে। তাদেরকে পরিচর্যার মাধ্যমে দেশের সম্পদে পরিণত করতে হবে। গণসাক্ষরতা অভিযান এবং আকবেট যেভাবে কাজ করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। শ্রমজীবী শিশুদেরকে শিক্ষিত করা কিংবা তাদেরকে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্য শিক্ষক-অভিভাবকসহ অংশীজনদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।
গণসাক্ষরতা অভিযান ও ইউকে-বাংলাদেশ এডুকেশন ট্রাস্ট (আকবেট)-এর যৌথ উদ্যোগে ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করে ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই) এবং এডুকেশন আউটলাউট-এএসএ।
গণসাক্ষরতা অভিযান-এর নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আকবেট-এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সায়েম। ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযান-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ আব্দুর রউফ।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন সিলেট সদর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত এরশেদ, মৌলভীবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন, টাওয়ার হ্যামলেট্স, ইউকে-এর স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালেদ, আকবেট-এর উপদেষ্টা ড. মোশাররফ হোসেন, সামাজিক প্রতিবন্ধী মহিলাদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, সিলেট-এর সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ মাতাবুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিজিৎ চন্দ্র পাল, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কাজী মোঃ জাফর, এলজিডির কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। এছাড়া মতবিনিময় সভায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, গবেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, এ মতবিনিময় সভাটি এসডিজি-৪-এর লক্ষ্য ‘সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ’ তৈরিতে সহায়তা করবে বলে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ মন্তব্য ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, গণসাক্ষরতা অভিযান প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অংশীজনদের সহায়তা করার লক্ষ্যে শিক্ষা ও সাক্ষরতা উন্নয়ন এবং শতভাগ শিশুকে মানসম্মত শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তথ্যভিত্তিক এডভোকেসিসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া শ্রমজীবী শিশুদের শিক্ষা ও পুনর্বাসন নিয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা আকবেট নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে ।
সভাপতির বক্তব্যে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের নিয়ে শুরু থেকেই কাজ করছে গণসাক্ষরতা অভিযান। একইসাথে আকবেটও শ্রমজীবী শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা একটি সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যেই এ সভার আয়োজন করেছি। পিছিয়ে পড়া শিশুদের জীবনমান উন্নয়নের কার্যক্রম স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী দুটি ধারায় অব্যাহত থাকবে।

শেয়ার করুন