গোয়াইনঘাটে অবিলম্বে পাথর লুটপাটকারীদের গ্রেফতারের দাবি

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

গোয়াইনঘাটে পাথর চুরির সাথে জড়িতদের হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতার, পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়েরকৃত মামলা থেকে নির্দোষ শ্রমিকদের অব্যাহতি ও পাথর কোয়ারিতে চাঁদাবাজী বন্ধের দাবি জানিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মাহবুবুল হকের ছেলে ইসমাইল হোসেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সম্প্রতি জাফলং জিরো পয়েন্টের বল্লাঘাট থেকে পাথর চুরির সময় তিনি কয়েকজন চোরকে দেখে ফেলেন এবং স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিবাদ করেন। এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে তার উপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ ঘটনায় তার চাচা বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন গত ১০ অক্টোবর (নং- ২০/২৫১, তারিখ- ১০/১০/২০২৪)। মামলায় আসামি করা হয় এলাকার কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও নানা অপকর্মের হোতা ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের লাখেরপাড় আসামপাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ৫ ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৮), আজির উদ্দিন (২৮), নজির উদ্দিন (২২), আলাউদ্দিন (৩০), জসিম উদ্দিন (৪৫) ও কামাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (২৪) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে। এদের মধ্যে আজির উদ্দিন ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। তিনি সিলেট জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনের ভাগিনা ও তাদের অবৈধ আয়ের মূল উৎস। রাজনৈতিক ও স্থানীয়ভাবে তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ টু শব্দ করারও সাহস পায়না। হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রায় একমাস হয়ে গেলেও এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অবিলম্বে তিনি আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি সিলেটের পুলিশ সুপারসহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সিলেটের গণমাধ্যমে লেখালেখির সুবাদে পাথর লুটপাটকারীদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। তাই সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তর পৃথক দুটি মামলাও দায়ের করেছে। একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে গোয়াইনঘাট থানায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা বাদী হয়ে দায়েরকৃত এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৯২ জনকে। অপর মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সিলেটের পরিবেশ আদালতে। মামলার বাদী পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মামুনুর রশিদ। এ মামলার আসামি ২২ জন। এরমধ্যে আছেন সিলেট জেলা বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরান, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন, জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স। কিন্তু পাথর লুটপাটের মূল হোতা সেলিম জমিদার ও আজির উদ্দিনকে মামলার আসামি করা হয়নি। এ কারণে, শাহপরান, স্বপন, আমজাদ বক্স, সেলিম জমিদার ও আজির উদ্দিন মিলে লুটপাট অব্যাহত রেখেছে। তিনি তাদের দ্রæত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। তারা সরকারি জমি দখল করে পাথরের সাইট ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধ ব্যবসার দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের দুই মামলায় ১১৪ জন আসামির অধিকাংশই নিরিহ শ্রমিক। তারা অবর্ননীয় দুঃখ দুর্দশায় আছেন। তাই তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান।
তিনি দাবি করেন গত ২৩ অক্টোবর মানববন্ধনসহ আরও বিভিন্ন সময়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন বিশেষ মহল। আমরা পাথর কোয়ারি সচলের পক্ষে হলেও প্রকৃত পাথর লুটপাটকারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।
তিনি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী মুক্ত সচল পাথর কোয়ারির নিশ্চয়তা চেয়েছেন।

শেয়ার করুন