সিলেটে ডা এম এ করিমের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত

সাম্রাজ্যবাদ -সামন্তবাদ আমলা দালালপুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবী লড়াই-সংগ্রামের অগ্রণী সৈনিক, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাপ্তাহিক সেবা পত্রিকার সম্পাদক ডা. এম এ করিমের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত।
৪ নভেম্বর’২৪ সন্ধ্যা ৬ টায় এনডিএফ সিলেট জেলা কার্যালয়ে জেলা সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায় এর সভাপতিত্বে এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্ররণ সভায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলার সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, সাংঠনিক সম্পাদক শেখর সেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সভাপতি ওয়াসিম মোহাম্মদ শামস্, জেলা শাখার আহবায়ক শুভ আজাদ (শান্ত), এনডিএফ শাহপরান থানা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ শাহপরান থানা কমিটির সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন (ঝাড়ু), সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ক্রিড়া সম্পাদক সুনু মিয়া সাগর।

বক্তারা বলেন এদেশের মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও মুৎসুদ্দি পুঁজির শৃঙ্খল থেকে মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করা। ডা. এম এ করিম আজীবন এই সংগ্রামের পথিকৃৎ ছিলেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। নেতৃবৃন্দ এক সরকারের পরিবর্তে আরেক সরকার ক্ষমতায় আসলে শ্রমিক-কৃষক-মেহণতি মানুষের মুক্তি আসবেনা বলে মন্তব্য করেন। আজকের বাস্তবতায় প্রয়োজন ডা. এম এ করিমের দেখানো পথ জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলার মধ্য দিয়ে তাঁর অসমাপ্ত কাজ জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করা।
উল্লেখ্য যে, ১৯২৩ সালের ১৫ জুলাই মাতুলালয়ে ডা. এম এ করিমের জন্ম। হাজিগঞ্জ, চাঁদপুর সাদরা গ্রামের শিক্ষক হাকিম উদ্দিন ছিলেন তাঁর পিতা। মাতা মেহের নিগার ছিলেন একজন গৃহিনী। পিতা-মাতার সাথে সাথে তার নিঃসন্তান জ্যেঠা-জ্যেঠির আপত্য স্নেহে বড় হয়েছেন তিনি। তাঁর পিতা চেয়েছিলেন তার সন্তানকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে। ডাঃ করিম তাঁর পিতার আকাঙ্খাকে আত্মস্থ করে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেকে একজন শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছিলেন।
১৯৪৩ সালে তিনি ঢাকার মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকেই শুরু হয় ডাঃ করিমের জীবনের এক নতুন অধ্যায়। মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রাক্কালেই শুরু হয়ে যায় ৪৩’এর দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষে তিনি প্রত্যক্ষ করলেন ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের যা তাঁকে নাড়া দিয়েছিল ভীষণভাবে। দুর্ভিক্ষ কবলিত মানুষদের রক্ষায় অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও যুক্ত হয়ে যান। যুক্ত হয়ে যান রাজনীতিতে। সা¤্রাজ্যবাদের নির্মমতা কতটা নিষ্ঠুর এবং ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ তাঁকে বুঝতে সহায়তা করেছিল। তিনি দেখলেন বাজারে মহাজন, ধনী ব্যবসায়ীদের হাতের পর্যাপ্ত মজুদ খাদ্য সামগ্রী বাজার থেকে উধাও করে কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে সৃষ্টি করা হয় দুর্ভিক্ষ। এই দুর্ভিক্ষে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোক মারা যায়। এভাবেই প্রত্যক্ষ করলেন ডাঃ করিম সাম্রাজ্যবাদের হিংস্র রূপটি। একেই বলা হয় পঞ্চাশের মন্বন্তর। এই মন্বন্তর সা¤্রাজ্যবাদের প্রতি তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি করে। তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন সামন্ত-জোতদার মহাজন শ্রেণির শোষণ-লুণ্ঠনের নির্মমতা। ভূমিহীন, দরিদ্র কৃষক, দিনমজুর, গরীবেরা কিভাবে তীব্র অভাব-অনটন, অত্যাচার ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়।

শেয়ার করুন