৮ দফা দাবিতে সিকৃবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আতাউর রহমান কর্তৃক দুই দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত ঘটনার বিষয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছেন সিকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিকৃবির উপাচার্য বরাবর আট দফা দাবি জানিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন রেখেছেন।

রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে তারা এই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে

১। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার এবং জনসংযোগ ও প্রকাশনা কর্মকর্তা খসরু মোহাম্মদ সালাউদ্দিনসহ সকলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।

২। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আরও জোরালো করতে হবে।

৩। ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও উপাচার্যকে রাজনৈতিক ব্যানারে সম্ভাষণকারীদের শাস্তি নিশ্চিতসহ সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে ও স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

৪। ২৪ অক্টোবর ২০২৪ রাতের সংঘর্ষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত ছাত্রদলের সম্পূর্ণ বিষয় যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে হবে।

৫। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুয়া বিবৃতি প্রত্যাহার করে সত্য ও সঠিক বিবৃতি প্রদান করতে হবে।

৬। শিক্ষার্থীদের অ্যানোনিমাস মার্কিং ও পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে ফেলকৃত বিষয়ের ইমপ্রুভ পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শুধু রিক্যারির (একটি বিষয়ে দুবার ফেল) মাধ্যমে ইয়ার ড্রপ ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।

৭। অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরে পাগমার্ক নিশ্চিত করতে হবে।

৮। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র সার্বক্ষণিক (২৪/৭) খোলা রাখতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আট দফা দাবিতে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছি। গত দুইদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা এটি করেছি। আমরা গত রাতে পিসি স্যারের সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করতে চাইলেও তিনি আমাদেরকে সময় দেননি। এমন কি আজ দুপুরে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অনুষদের শিক্ষক সুলতান আহমদ টিপু বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ভিসি স্যারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করাতে পারেননি। আমাদের দেওয়া আট দফা দাবি মানা না হলে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিকৃবি কর্তৃপক্ষ দ্বারা গত বৃহস্পতিবার দিবাগত তারিখের সংঘর্ষকে রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড ও তদন্তবিহীনভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে ‘ছাত্রলীগ সমর্থিত’ শিক্ষার্থী হিসেবে আখ্যা দেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আতাউর রহমান। কোনোরকম ভিত্তিপ্রমান ও তদন্ত ছাড়া এরকম মন্তব্যের জন্য প্রক্টরিয়াল বডি ও সিকৃবি প্রশাসনকে জবাবদিহি করে তদন্তের অগ্রগতি ও উক্ত সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত সকলের শাস্তি নিশ্চিত, প্রক্টরিয়াল বডির প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ তাদের পদত্যাগ চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি আমাদের উপাচার্য স্যার পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন।

Visited 1 times, 1 visit(s) today
শেয়ার করুন