সাদাপাথরে থামছেই না পাথর লুট, পুলিশের অভিযানে ১০টি ট্রলি আটক

সিলেট অন্যতম পর্যটন এলাকা সাদাপাথর থেকে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না পাথর লুট। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ পুলিশের অভিযানে ১০টি ট্রলি আটক করা হয়েছে।

পাথর ক্রয়বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানিয়েছেন, দিনে বাঙ্কার থেকে পাথর তুলে মজুদ করা হয় আর রাত হলেই সেই পাথরের সাথে পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর থেকে পাথর নিয়ে আসা হয়। নৌকা দিয়ে সেই পাথর গুলো ভোলাগঞ্জ দশ নম্বর, নয়া বাজার, দয়ার বাজার ও কলাবাড়ী এলাকায় নদীর তীরে রাখা হয়। পরে সেই পাথর গুলো ছোট ছোট ট্রলি দিয়ে স্থানীয় ক্রাশার মিলে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও এই পাথর হাইড্রলিক্স ট্রাক দিয়ে ধোপাগুলের মিলে বিক্রি করা হয়। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এতদিন তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করলেও এখন পুলিশের কড়াকড়িতে পাথর পরিবহনে অনেকটা অনিরাপদ হয়ে গেছে। কিন্তু সাদাপাথর ও বাঙ্কার থেকে নৌকা দিয়ে পাথর আসছে অহরহ।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকা হাবিবুর রহমান মামুন জানান, পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর ও বাঙ্কার থেকে থেকে পাথর লুটপাটের বিরুদ্ধে আমরা সর্বদা সোচ্চার ছিলাম। সেনাবাহিনীকে নিয়ে রাস্তায় অভিযান দিয়ে বেশ কিছু পাথরও আটক করেছিলাম। আমাদের তৎপরতায় পাথর লুটপাটকারীদের সমস্যা হওয়ায় আমাদেরকে চাঁদাবাজ বানিয়ে তারা জেলে পাঠিয়েছিল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে পাথর লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে দয়ার বাজার এলাকায় আমরা গিয়েছিলাম। সেখানে স্থানীয় কয়েকজন আমাদেরকে চাঁদাবাজ সাজিয়ে জেল হাজতে পাঠায়। সাদাপাথর লুটপাট বন্ধে পুলিশ আরো কঠোর হবে এটাই প্রত্যাশা।

জানা গেছে, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলার দয়ারবাজার এলাকা থেকে সাদাপাথর বুঝাই এই ট্রলি গুলো আটক করা হয়। এদিন সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনানের নেতৃত্বে দিনভর পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে সাদাপাথর থেকে লুট করে নিয়ে আসা পাথর বুঝাই করার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় ১০টি ট্রলি। পরে সেগুলো থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর রাতদিন চলছে সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র ও বাঙ্কার থেকে পাথর লুটপাট। পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকায় প্রায় শতকোটি টাকার পাথর লুটপাট হয়েছে। এই লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। পাথর লুটপাট ও চাঁদাবাজি থামাতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন ৯জন। তাদের অভিযোগ সাদাপাথর ও বাঙ্কার পাথর লুটপাট ও চাঁদাবাজি থামাতে যাওয়ায় তাদেরকে চাঁদাবাজ বানানো হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, পর্যটন কেন্দ্র ও বাঙ্কার থেকে পাথর চুরির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার রয়েছি। পুলিশ নিয়মিত অভিযান দিচ্ছে। পর্যটন দিবসেও সাদাপাথরের পাথর চুরি হচ্ছে এমন সংবাদে শুক্রবার সকালে আমরা অভিযান চালাই। অভিযানে ১০টি পাথর বুঝাই ট্রলি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা ট্রলির মালিকদের খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শেয়ার করুন