গতকাল সোমবার ভোররাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকা থেকে টাস্কফোর্স আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করার ঘণ্টা দুয়েক পরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগে ওসি মঈন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন বলে আশংকা তৈরি হয়েছে।
সিলেটের সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এসএমপি’র কোতোয়ালি থানার বহুল আলোচিত সাবেক ওসি মঈন উদ্দিনকে বিজিবি আটক করলেও পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে।
জানা গেছে, ওসি মঈন উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুরের গোপীনাথপুরে অস্ত্র রয়েছে এমন খবরে গতকাল সোমবার ভোররাতে বিজিবির সদস্যরা অভিযান চালায়। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমকেএম ফয়সাল অভিযানে নেতৃত্ব দেন। পরে অস্ত্র পাওয়া না গেলেও ওসি মঈন উদ্দিনকে (৪৩) আটক করে মাধবপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
৫৫ বিজিবির হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মো. ইয়ার হোসেন লিখিতভাবে মাধবপুর থানার ওসিকে জানিয়ে মঈনকে সোপর্দ করেন। বিজিবির দেয়া ওই পত্রে বলা হয়, ‘১৪ জন বিজিবির সদস্যসহ মাধবপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ও মনতলা পুলিশ ফাঁড়ির প্রয়োজনীয় অফিসার-ফোর্সের সহায়তা নিয়ে অদ্য ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে মাধবপুর থানাধীন গোপীনাথপুর মাস্টার বাড়ী মনতলা সাকিনস্থ মঈন উদ্দিন এর বাড়ীতে টাস্কফোর্স পরিচালনা করি। টাস্কফোর্স পরিচালনাকালে মঈন উদ্দিনের বাড়ীতে কোন প্রকার অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে জানা যায় যে, আটককৃত মঈন উদ্দিন এসএমপি কোতয়ালী মডেল থানার (মামলা নং-১৪/৩৬৯, তারিখ-২০/০৮/২০২৪খ্রিঃ, ধারা- ১৪৩/১৪৭/১৪৮/৩০২/১৪৯/৩৪ পেনাল কোড- ১৮৬০) এর এজাহারভুক্ত আসামী। এমতাবস্থায়, তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি।’
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক খান ওসি মঈনকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ওসি মঈন উদ্দিনের নামে একটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে বিজিবির একটি দল তার বাড়িতে গিয়েছিল এবং বিজিবি মঈনকে থানায় নিয়ে আসে। লাইসেন্স নিলেও মঈন কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেফতারী পরোয়ানাও নেই। আবার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। ওসি মঈনের বিষয়ে এরকম কিছু না থাকায় তিনি স্বাভাবিকভাবেই থানা থেকে চলে যান। আর বিজিবি সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের বাইরে তো অভিযান পরিচালনা করতে পারে না। এমনকি বিজিবির আসামি গ্রেফতারেও অনুমতি নেই বলে জানান হবিগঞ্জের এসপি।