
উন্নয়ন বঞ্চিত জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে আগামী ৫ মে সকাল ১১টায় সিলেট মহানগরীর ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট বিএনপি আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে এদিন সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পরদিন ৬ মে থেকে মাসব্যাপি দুই উপজেলায় গণ সংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করা হবে। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যেও যদি সরকারের টনক না নড়ে এবং দৃশ্যমান কোনো প্রক্রিয়া না দেখা গেলে আরো কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রয়োজনে জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট থেকে সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে আগামী ১৮ জুন সিলেট এলজিডি ভবন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপরও যদি ফলাফল না আসে তখন, দুই উপজেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ নিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে।
রোববার সিলেট মহানগরীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জকিগঞ্জ-কানাইঘাট বিএনপির পক্ষে এসব কর্মসূচি তুলে ধরেন সিলেট জেলা বিএনপির ১ম সহসভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন)।
লিখিত বক্তব্যে মামুনুর রশীদ জানান, সীমান্তবর্তী দু’উপজেলায় গত ১৭ বছরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত এ অঞ্চলের মানুষ। সম্প্রতি যোগাযোগ ব্যবস্থার এতটাই বেহালদশা যে সড়কগুলোতে গাড়ি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। প্রত্যেকটি রাস্তা ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সাধারণ মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবিতে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতেও যোগাযোগ করেছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে জনদুর্ভোগ নিরসনে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এই দুই উপজেলার সুরমা, কুশিয়ারা ও লোভা নদীর ভাঙ্গনে ফসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, রাস্তাঘাট ও বসত ভিটা হুমকির সম্মুখীন রয়েছে। ইতোপূর্বে নদীভাঙ্গনে আমরা অনেক কিছু নদী গর্ভে হারিয়েছে। এমতাবস্থায় নদীভাঙ্গন রোধে ব্লক বসানো যেমন প্রয়োজন তেমনি নদীর দু’তীরের অরক্ষিত অংশগুলোতে নতুন করে বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি পুরাতন বাঁধগুলো মেরামত এখন সময়ের দাবি। তিনি আরো জানান, প্রায় ৩/৪ মাস আগে জকিগঞ্জের বার ঠাকুর ইউনিয়নের শরীফগঞ্জে রহিমপুর খালের সুইচ গেইট এলাকায় সুরমায় ডাইক নির্মাণের সময় ভারতের বিএসএফ‘র বাধায় কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় আর বাঁধ নির্মাণ হয়নি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফ’র এ ধরনের বাধা ভারতের আগ্রাসনের বহি:প্রকাশ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভারতকে কড়া প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি পুনরায় বাঁধ নির্মাণের কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিজিবিকে আহবান জানান। মতবিনিময় সভায় তিনি অভিযোগ করে বলেন, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটের কয়েকটি এলাকা চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মাদক ও চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে। কিছুতেই এসব বন্ধ হচ্ছে না। যার কারণে এলাকায় দিন দিন অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। চোরাচালানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।