সাংবাদিকদের ভোটকক্ষে প্রবেশে অনুমতির প্রয়োজন নেই

অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের ভোটকক্ষে প্রবেশে অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন প্রণীত সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা–২০২৫ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নীতিমালায় ছোট ছোট সংস্কার আনা দরকার ৷ এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, সরকারের নয়। ইসি যদি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়, যতটুকু সম্ভব উদার হতে হবে। অ্যাক্রিডিটেশন (সাংবাদিক কার্ড) দেওয়ার পর ভোটকক্ষে প্রবেশে কোনো বাধা দেওয়া উচিত নয়। কতক্ষণ থাকবে সেটাতেও বাধা দেওয়া উচিত নয়। ভোটকক্ষে যেতে পারমিশনের বিধান থাকা উচিত নয়। এটা বাদ দেওয়া উচিত। কিন্তু গোপন কক্ষে যেতে পারবেন না।’

কক্ষে দুই জনের বেশি যেতে পারবেন না এটা আমাদের সময়ও ছিল-এমন মন্তব্য করে সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটা করা হয়েছিল কারণ আমাদের কক্ষ তো এত বড় না। সেখানে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা, বিভিন্ন দলের এজেন্ট থাকে, তারওপর বেশি সংখ্যাক সাংবাদিক প্রবেশ করলে জায়গা হবে না৷ তখন ভোটগ্রহণে অসুবিধা হয়। তবে কক্ষে দুই জনের বেশি প্রবেশে মানা করেছে ইসি, সেটা এখন কনসিডার করা উচিত। প্রকৃত ভোটার ভোট দিচ্ছে কিনা, অনিয়ম হচ্ছে কিনা সেটা দেখতে হবে। আমরা টিভিতে লাইভ দেখে ব্যবস্থা নিতাম। নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোটের সময় আমরা টিভিতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম ‘

তিনি বলেন, ‘ইসির প্রতি অনুরোধ সাংবদিকদের সঙ্গে বসুন। এমন কিছু নেই যে আলোচনা করে সমাধান বের করা যায় না। এখনো সময় আছে বসুন। মেইক ইট ট্রান্সপারেন্ট। লাইভ টেলিকাস্ট করতে দেন। ইসি বলছে শতাব্দির বেস্ট ইলেকশসন করবে। তাহলে ইসির আই (চোখ) শুড বি ক্রিস্টাল-ক্লিয়ার। কেন্দ্রে ঢুকার পরে ভোটকক্ষে প্রবেশে অনুমতি নিতে হবে, নো নিড। আশা করবো অবাধ, সুষ্ঠু নির্ব্চনের জন্য সরকার ইচ্ছার প্রতিফলন করবে ইসি। এজন্য অবশ্যই মিডিয়ার সহায়তা নিতে হবে। কারণ মিডিয়াই হচ্ছে তাদের চোখ। দুধের মধ্যে যদি এক ফোটা চুনা পড়ে, তাহলে সেই চুনা তুলে দুধ বিক্রি করা যায় না। তেমনি একটাও যদি জাল ভোট পড়ে রিইলেকশন করতে হবে।’

বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের সহযোগিতায় দ্য ডেইলি স্টারের সভাকক্ষে সভাটি আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)। বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে ও বিজেসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব ও আরটিভি’র হেড অব নিউজ ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজে-এর মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, আরএফইডি সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীন (জেবেল), সাধারণ সম্পাদক গোলামী রাব্বানীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, ‘গণমাধ্যমের জন্য নীতিমালা, অথচ গণমাধ্যমের সঙ্গে বসা হচ্ছে না। এটা তো হতে পারে না। সাংবাদিকরা হচ্ছে সবচেয়ে বড় পর্যবেক্ষক। তাহলে তাদের সঙ্গে কেন বসা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তোলেন তারা।’

এদিকে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গণমাধ্যম নীতিমালা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।

শেয়ার করুন