এমএজি ওসমানীসহ স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ৮ বিশিষ্ট ব্যক্তি

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানীসহ ৮ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্রের বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক এ তথ্য জানিয়েছে। শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হবে বলে ওই সূত্র জানায়।

মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী ছাড়াও ২০২৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত বিশিষ্টজনদের মধ্যে আছেন- বিজ্ঞানী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর, কবি আল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নকশাকার নভেরা আহমেদ, পপসম্রাট আজম খান ও আবরার ফাহাদ।

মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর জন্ম ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর। তাঁর বাবা খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের কর্মস্থল সুনামগঞ্জে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বারার বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে দয়ামীরে ( বর্তমানে ওসমানীনগর)।

যৌবনে তিনি ব্রিটিশ আর্মিতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে ব্রিটিশ আর্মির সর্বকনিষ্ঠ মেজর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থাকাকালে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হন এমএজি ওসমানী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান হিসেবে অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তাকে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের জেনারেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭২ সালে দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। ১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হন তিনি। ১৯৭৪ সালে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। পরে বাকশাল গঠনের প্রতিবাদে ১৯৭৫ সালে সংসদ সদস্য পদ ও আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান। তবে ৩ নভেম্বর জেলহত্যার ঘটনার পর ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ সালে জাতীয় জনতা পার্টি নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

এমএজি ওসমানী ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এম এ জি ওসমানী মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সিলেটে হযরত শাহজালাল(র.) দরগাহ গোরস্থানে দাফন করা হয়।

তার সম্মানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ, ওসমানী বিমানবন্দর ও নগরীর ধোপাদিঘীর পাড় এলাকায় ওসমানী শিশু পার্ক ও ওসমানী জাদুঘর রয়েছে।

শেয়ার করুন