তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন কওমি আলেমরা।
মাওলানা সাদ বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেন। যদি স্বঘোষিত আমির সাদকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারকেই দেশ ছেড়ে পালাতে হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী মহাসম্মেলন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে স্বঘোষিত আমির সাদ ও তার অনুসারীরা বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা কোনোভাবেই সেটি হতে দেব না। তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্র যেকোনো মূল্যে আমরা ব্যর্থ করে দেব।’
আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরও বলেন, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আজকের সম্মেলন থেকে ওলামায় কেরামের পক্ষ থেকে যে ঘোষণা দেওয়া হবে, সরকারকে সেই নির্দেশনা মানতে হবে। এর বাইরে কারও সিদ্ধান্ত তৌহিদী জনতা মানবে না।’
মহাসম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর মধুপুর) বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। আমি বলব- কিসের পরামর্শ, এই সম্মেলন থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সরকারকে এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। ভিন্ন কোনো চিন্তা করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।’
ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবির পাশাপাশি সম্মেলনে আরও নয় দফা দাবি দেন আলেমরা।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, দেশের সকল আলেমদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শাপলা চত্ত্বরে গণহত্যায় দোষী ও জড়িতদের বিচার, সারাদেশের কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, টঙ্গী ময়দানে নিরীহ ছাত্রদের ওপর সাদপন্থীদের হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত, স্বঘোষিত আমির সাদকে বাংলাদেশে কোনো অবস্থাতেই আসতে না দেওয়া।
এছাড়াও এ মহাসম্মেলনে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থীদের কোনো কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে বলেও জানান বক্তারা।
এদিন মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে মহাসম্মেলন শেষ করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
এর আগে সকাল নয়টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন ঘিরে ভোর থেকেই লাখো আলেম-ওলামার জমায়েত হতে থাকেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়। এই সম্মেলন চলে দুপুর ১টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত।
সম্মেলনে খলিল আহমাদ কাসেমী হাটহাজারী, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা আব্দুল রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম, আদিব সাহেব হুজুর, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শাইখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, ফরিদাবাদ, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।