গুজব নাকি শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপ! অপ্রত্যাশিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কিভাবে ঠেকাবেন

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ঘিরে সমগ্র জাতি একটা মহৎ নতুন স্বপ্ন দেখেছিল, যে কারণে ছাত্র জনতা আবাল বৃদ্ধ বনিতা গভীর দেশপ্রেমে রাজপথে আত্মত্যাগ বিলিয়ে দিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদসহ নাম না জানা হাজারো শহীদি কাফেলা রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে চেয়েছে বাংলাদেশটাকে। ঘুষ দূর্নীতিমুক্ত বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশ বুকে ধারন করেছিল সেদিন ১৮কোটি মানুষ। বিপ্লবীদের হুঙ্কারে স্বৈরশাসকের মসনদ খানখান হয়ে যায়। এখন গণভবন হতে চলছে ২য় মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর! কিন্তু ঠিকবে কি?

পারজয়ের গ্লানি অপমান শেখ হাসিনা কি খুব সহজে মেনে নিতে পারছেন! তিনি বা তার দোসররা কি নিশ্চুপ?
রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু বহাল রেখে মহান বিপ্লবকে রক্ষা করা খুব কঠিন হবে। এরা স্বপদে আছে বলেই প্রতিদিন চমকপ্রদ অনেক গুজব শেখ হাসিনা যে কোন সময় বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারে। শেখ হাসিনার দোসর অগণিত সুবিধাভোগী এখনও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছে। যে কারণে এমন গুজবে দেশের মানুষ খুব উদ্বিগ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। শেখ হাসিনা যে কোন সময়ে বাংলাদেশে ঢুকে যাবে এমন গুজবে আওয়ামী লীগের নেতদের মধ্যে একধরনের উত্তেজনা এবং দেশের মানুষের মধ্যে চরম উৎকন্ঠা বিরাজমান। শেখ হাসিনা ও তার ল্যান্সপেন্সাররা কিন্তু দেশে বিদেশে থেমে নেই। দেশকে অস্থিতিশীল করতে বা প্রতিবিপ্লবের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তারা অতি তৎপর।
যদিও দেশের জন্য দীর্ঘ ১৭বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সীমাহীন ত্যাগ ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের পুরো ভূমিকায় বিএনপি থাকলেও বিপ্লবের সাফল্য ছিনিয়ে নেয় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কথিত ছাত্র নেতারা। তাদের দাপট আজ পুরো রাষ্ট্রে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উচিত ছিল বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করা। তাই যদি হতো তাহলে নতুন সংবিধানের মাধ্যমে এই সরকার হতো অনেক শক্তিশালী। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের উচিত ছিল এই সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপান্তরের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলা। ইন্ডিয়ার প্রভাবমুক্ত নতুন বাংলাদেশ ১৮কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী। কারণ ১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার অযুহাতে বাংলাদেশের উপর তারা এতোটা প্রভাববিস্তার করেছে যেকারণে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অর্থনৈতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা আজ চরম হুমকির সম্মুখীন। ইন্ডিয়ার অতি প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের ভোটার ব্যবস্থা গণতন্ত্র পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা আজ ক্ষতবিক্ষত।
আমরা ক্ষমতার লোভে আর অন্ধ আবেগে যুগে যুগে ধোঁকা খেয়েছি। পিলখানা হত্যাকান্ড, জুলাইয়ে গণহত্যা, বঙ্গবন্ধু বা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের মুলের কারিগর কারা?
বহিঃবিশ্বে সমাদৃত হওয়া, টকশোতে ভালো কথা বলা, আর রাজপথের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া যতটা সহজ। নিশ্চয়ই রাষ্ট্র পরিচালনায় হাজার গুণ বেশি রিক্স এবং চ্যালেঞ্জ আছে দায়িত্ব পালন নিশ্চয়ই অতটা সহজ নয়।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং আইন উপদেষ্টার দুই মাসে রাষ্ট্র পরিচালনায় সাফল্য কতটুকু? রাঘব বোয়াল দূর্নীতিবাজদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা আর কিছু কিছু নেতাদের গ্রেফতার করে অতি দ্রুত জামিন দেওয়া, গণঅভ্যুত্থানের অর্জন আকাঙ্খা কি ম্লান হচ্ছে না?
সারা দেশব্যাপী চরম বিশৃঙ্খলা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, মানবাধিকার উদ্বেগজনক। দেশের মানুষ ভয় আতঙ্কের মধ্যে আছে কখন কি ঘটে বলা মুসকিল, চারদিকে গুজবের ডালপালা বিস্তৃত। পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসররা কিন্তু উপদেষ্টা বৃন্দের খুব কাছাকাছি থাকে।
উপদেষ্টা নাহিদুল ইসলাম, আসিফ মাহমুদের শুরুর দিন আর আজকের দিনটি একটু বিশ্লেষন করুন!
প্রধান উপদেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের মাষ্টার মাইন্ড নিয়ে বিতর্কের জন্মদিয়ে পুরো জাতির ত্যাগ আকাঙ্খাকে খাটো করেছেন। সাংবিধানিক জটিলতা তো আছেই, গত দুই দিন আগে যমুনাতে কি হয়েছে? সত্য মিথ্যা যাই থাকুক সরকারকে ব্যর্থ করতে গুজব আর সমালোচনার ঝড় বইছে। এতো দূর্বল সরকার নিয়ে রিসেট বাটনের চিন্তা উত্তর গগনে ঘুর্ণি ঝড়ের পূর্বাভাস, লন্ডভন্ড হতে পারে মহান বিপ্লব। নিরাপদ থাকবে কি বাংলাদেশ?

মোঃ নিজাম উদ্দিন সাবেক চেয়ারম্যান

উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ ছাতক সুনামগঞ্জ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।

শেয়ার করুন