বিচ্ছিন্ন অনেক লোমহর্ষক ঘটনা সরকারকে ব্যর্থ করার প্রয়াস। এসব ঘটনা কি প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা নয়?
স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বিরামহীন ভাবে লড়াই সংগ্রাম করেছেন। অবশেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশব্যাপী গণবিস্ফোরণে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাফিয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হয় ৫ই আগস্ট ২০২৪ইং। ৮ই আগস্ট নোবেলজয়ী ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ধারন করে নিশ্চয়ই এই সরকারের নাম হওয়া উচিত ছিল বিপ্লবী সরকার। কিন্তু তা হয়নি!
বাংলাদেশের মতো অন্যান্য অনেক দেশে একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত এবং সফল হয়। যেমন সুদান, মিশর, তিউনিসিয়া, শ্রীলঙ্কা। অনেক দেশ বিপ্লবের সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি প্রতিবিপ্লবের কারণে অনেক দেশ গভীর সংকটে নিপতিত কিংবা গৃহযুদ্ধ লেগে আছে। এই মুহূর্তে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকার অনেক বেশি উদার নীতি গ্রহণ করে যথেষ্ট দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত বিপ্লবী সরকারের যেখানে কটুরনীতি গ্রহণ করে গণহত্যাকারী দূর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদের মুল উৎপাটন করা উচিত। সেখানে লক্ষ্যনীয় উদারনীতির কারণে প্রতিবিপ্লবের আশংকা তৈরি হয়েছে। গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, আনসার বিদ্রোহ, ঢাকা জাতীয় মসজিদে পালিয়ে যাওয়া খতিবের নেতৃত্বে মুসল্লীদের উপর হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে তোফাজ্জল হোসেন নামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে বেদম প্রহার করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, আহ্ কি লোমহর্ষক। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শামীম মোল্লা নামক যুবকে পিটিয়ে হত্যা, চার দিন আগে মোহাম্মদপুর এলাকায় কয়েকজন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতা প্রকাশ্যে পিটিয়ে দুইজন যুবককে হত্যা করে। এই হত্যাকারীদের দ্রুত ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে, তা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হবে।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো ভিসিকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছে ছাত্র সমন্বয়ক, কত বড় দৃষ্টতা।
রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য এলাকা চরম উত্তপ্ত। এই ঘটনাগুলো এই সরকারকে ব্যর্থ করার সুগভীর ষড়যন্ত্র চক্রান্ত। সরকার এই ঘটনাগুলোর ন্যাপথ্যে কারা জড়িত খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হলে
যে কোন সময় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে উগ্রবাদ, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদের উত্থ্যান ঘটতে পারে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এই আলামতগুলো কি যথেষ্ট নয়?
ছাত্র সমন্বয়কারী সার্জিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ সহ অনেক সমন্বয়কের ভূমিকা অতিরঞ্জিত দেশবাসীর কাছে চরম বিরক্তিকর। মনে রাখতে হবে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক কিন্তু খুব দুরে নয়, তার চক্রান্ত কিন্তু থেমে নেই, তার অগণিত দোসর বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে বসে আছে, বহিঃশত্রুরা কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে কঠিন খেলায় মগ্ন। সুতরাং সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হউক, ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত জাতীয় ঐক্য অতিব জরুরি ।
এই অন্তবর্তীকালীন সরকার যদি শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে না পারে, কিংবা এই সরকার যদি ব্যর্থ হয় তাহলে দেশে গৃহ যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান খুবই দৃঢ়তার সহিত বলেছেন এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
সরকার অধিকতর সতর্ক না হলে পথ হারাবে বাংলাদেশ।
লেখকঃ- মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান
উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ, ছাতক সুনামগঞ্জ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।