উৎমাছড়া: পাথর আর ঝিরি ঝর্ণার এক মায়াবী আলো

     আনোয়ার হোসেন মিছবাহ্  :

 অকাতরে দানের রাজাধিরাজ হিসেবে কোম্পানীগঞ্জের সুনাম সর্বজন বিদিত।সে ই ব্রিটিশ যুগ থেকে এর পরতে পরতে লেগে আছে মহা সুন্দরের ছোঁয়া।এই অঞ্জল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির করায়ত্বে চুনাপাথরের গঞ্জ ছিলো বলে তখন থেকেই কোম্পানির গঞ্জ নাম ধারন করে আছে।সে ই গঞ্জ ই আজোবদি দানে,গরিমায়,সুন্দরে সমুজ্জল।ব্রিটিশরা সিলেট দখলের পর ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চুনাপাথরের সহজ সংগ্রহে তৎকালীন রেভিন্যূ কালেক্টর রবাট লিন্ডসের হাত ধরে অত্রাঞ্চলের গোড়াপত্তন সূচিত হয় বলে সাবেক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গঞ্জ যা বর্তমানে আমাদের কোম্পানীগঞ্জের সারির বাড়ি উৎমাছড়াও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দেই আমাদের নিজস্ব ভূমি বলে খ্যাত হয়।কোম্পানীগঞ্জ আবার প্রতিবেশি ভারতের মেঘালয় রাজ্য ঘিরে আজোবধি স্থিত।তার আশপাশের চার সীমা ভাগ করলে দেখা যায় উত্তর দিকের উত্তুঙ্গ ভূমি ভারতের। যেখানে আকাশের সানসেটে অবিরাম খেলা করে রোদের প্রখরে জমিন থেকে তুলে নেওয়া পুচ্ছ পুচ্ছ মেঘের সাম্পান।আর প্রখর রোদ্রের বিরুপ হাসি।উত্তুঙ্গে মাটির লাগামে খাসি পাহাড়ে আবাসি ভিটা বাসিন্দাদের স্বপ্নাতুর সকাল, অনন্য বিকেল।উত্তুঙ্গ পাহাড়ের চালা থেকে শিকড়ে নেমে আসা বনছায়া,বীথিকা বিলাস। আর মেঘ পাহাড়ের অবিরাম কান্নার জল।যাকে আমরা আদর করে মোলায়েম সুরে ডাকি-পাহাড়ি ঝিরি বা ঝর্ণা।এই ঝর্ণা যখন ছুটে ছুটে দ্রুত ধায়ে জল বহন করে নিয়ে যায় তখন তাকে ছড়া বলে চিনি।ছড়া আবার জলের বিশালত্ব ধারন করে উচ্চাবিলাসি জলের আফালও বুকে নিয়ে দূুর দিকে সাগর মহাসাগর বা অন্যকোন নদীর বুকে মিশে তখন সে ও লোকের কাছে নদীর উপাধি পায় বলে ধলাই ও নদীর তকমায় সমচ্চারিত।তবে অন্য নদী থেকে ধলাইয়ের বৈশিষ্ট্য আলাদা।অন্যান্য নদী ঝিরি বা ঝর্ণার শুধু জল বহনে পারঙ্গম হলেও ধলাই কঠিন পাথর কেও বুকে নিয়ে ছুটে যায় বলে তার নাম পাথর নদী হতে পারতো। কারন এ নদী বয়ে আনে অন্য বৈশিষ্ট্যর সাদা সাদা বা ধবল পাথর যাকে সিলেটীরা ধলা বলে পরিচয় করিয়ে দিতে দিতে নদীর নামকেই ধলাই নামে ডাকতে শুরু করে।যার যৌবন ঘিরেই আমাদের আজকের আলোচিত উৎমাছড়া।এর দক্ষিণে সিলেটের সদর উপজেলা যেখান থেকে উৎমাছড়ার গাড়ি ছুটে।পূর্বে গোয়ানঘাটের নানা বিস্ময়ে আপ্লুত শ্রীপুর,জাফলং, মায়াবীঝর্ণা সহ আঙ্গুলের রেখা ধরে গুনতে থাকা পর্যটন ভূমি।পশ্চিম দিকে ছাতক,যেখানে আছে গ্যাস,

সিমেন্ট ও চুনাপাথরের খনি।ফলে ব্রিটিশদের অবকাঠামো গড়ার নানা ফন্দি জুড়ে থাকতো একাল আর ভাবিকাল।তাই কোম্পানীগঞ্জ কে ঘিরে মানুষের মায়ার সম্মান ঘাটের শেকল ছেড়ে ছোটে ভ্রামণিক মেজাজে।কেনো না শরীর এবং কলমের চোখেই ভ্রমণ করতে হয়।কথাটার বৈচিত্র্যবিন্যাসে বলা যায়,যারা শরীর নিয়ে বেড়াতে আসেন তারা কষ্টের সাথে মন মিতালিতে মাতেন।তারা শরীরের উপর ভর করে বেরিয়ে পায়ের ভরে ফিরেন। আর যারা শরীর বহনে অক্ষম,তারা কলমের চোখে পড়ে পড়ে ভ্রমণের আখ্যানে মন পর্দায় দেখেন কলমের পর্যটন। তবে ভ্রমণ যে প্রকারেরই হোক,মানুষকে বৈচিত্র্যে বিলাসি করে।ভাবনাকে নিজের করে ভাবতে দেয় বলে ভ্রামণিক ভ্রমণের পায়ে হাঁটেন।এতে ভাবনার বিষয় নানা বৈচিত্র্যে উতাল পাতাল করে ঘরছাড়া করে নিয়ে যায় পর্যটনে। আমারও তেমনি ঘর ছাড়ার আনন্দ উৎমাছড়ায় নিবন্ধিত ছিলো আজ হতে প্রায় ৮ বছর বিগতে। সেই ২০১৭ খ্রিস্টাব্দেই আবার উৎমাছড়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যায় রাস্তাহীন উৎমাছড়ার কূটকৌশলের বিবরনে।

কেনো না ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে উৎমাছড়ায় অবাঞ্ছিত পাথর লোপাট এবং চোরাচালানের নিরব ভূমির নিরাই রুট দর্শক বা পর্যটক উৎমাছড়ার জন্য উপযুক্ত ছিলো না।কিন্তু বিয়ানো গরুর মায়াবি উৎপাতের মতো পর্যটকেরও উৎপাত বেড়ে যায় উৎমাছড়া জুড়ে।ফলে দম বন্ধ করা ব্যবসা আস্তে আস্তে কোমার দিকে চলে যায় বলে পূর্বের মতো পর্যটক তাড়ানোর মতলব মাথায় ওঠে কালো ব্যবসায়ির।শুরু হয় পর্যটক তাড়ানোর বৈপ্লবিক মব সংগ্রাম।ভাড়া করা হয় ভাড়ায় খাটা রেডিমেইড মানুষ!এরা বেহায়াপনার বাহানায় নিষেধের খড়গে তেড়ে আসেন।আর ঠিক তখন থেকেই অতি কচলানো লেবুর মতো তিতা হয়ে ওঠে নিরাই রুটের পরিবেশ।আবডালে রাখা উৎমাছড়ার বয়ান ছড়িয়ে পড়ে মাঠে ময়দানে,অঙ্গন,

প্রাঙ্গন,দেশ,বিদেশের মিডিয়াপাড়ায়।টনকে টান পড়ে প্রশাসনের। তাঁরা ময়দার ময়ানের মতো মুষ্টি চিপায় বাতিল করে দেয় জঙ্গলের উম্মাদনা!এর ফল মাফি মাঙ্গায় সমাপ্তি নিয়ে উৎমাছড়া আরও উৎলে ওঠে বেরিয়ে পড়ে জঙ্গলের রাজ্য থেকে।এতে আমিও আমাকে প্রস্তুত করে সকালের আকাশ ডেকে ডেকে চলি সিলেট শহরের আম্বরখানায়।উদ্দেশ্য সিএনজি অটোরিকশা। কিন্তু চালকের সার্ভিসের দাম ১২০ টাকার অক্ষমতায় ব্যাক পায়ে ফিরি মজুমদারীতে হঠাৎ জুড়ে বসা ভিআইপি রোডের নানা নামের কোম্পানীগঞ্জ মুখি বাসগাড়ি বরাবর।এখানে হাঁক ডাকের বিআরটিসির ডবল ডেকার বাস বেছে নিই।এর কারণ একটাই,কোম্পানীগঞ্জ রোড ধরে উৎমাছড়ায় যেতে যেতে বিআরটিসি বাস চারপাশে এমন ভিউ চোখের লাগামে আনে যে,মোবাইল ক্যামেরার চার্জ নিয়ে ভাবনার ইতিউতিতে বেলা যায় বলে অন্য অনেকের মতো পাওয়ার ব্যাংক সকাশে রাখি।এছাড়া সিএনজি অটোরিকশার হাঁকানো ভাড়া ১২০ টাকা থেকে বাসের কাতারে ৮০ টাকায় নামিয়ে এনে পকেটকেও শান্তি দিতে পারি।এ থেকে লাভ হলো ফিরতি পথে উৎমায় বাজার করে ফেরা।গাড়িতে ওঠে যেখানে পৌঁছার কথা সেখানে জ্যাম থাকলে দেড় ঘন্টা আর না থাকলে এক ঘন্টায় পৌঁছে যেতে পারি বিআরটিসি বাসের স্টপেজ বরাবর। এখান থেকে হাতের ডান দিকে ধলাই নদীপাড়ের ধলাই ব্রীজের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইক বা সিএনজি অটোরিকশা করে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূর-দয়ারবাজার ২৫  টাকায় নেমে আরেকটি যাত্রাযান ইজিবাইক বা পটানো নাম টমটমে চেপে ৩০ টাকায় মায়ারবাজার পৌঁছে মোটরবাইক সার্ভিসের ১৫০ টাকা বাঁচিয়ে হাতের ডানদিকের মাঝেরগাঁও ও বামদিকে মনিপুরী বস্তি ফেলেই সিএনজি করেই ৪০ টাকায় পৌঁছাই চড়ারবাজার।চরারবাজার থেকে এবার বাম দিকে ৫ নম্বর উত্তর রণিখাই কোম্পানিগঞ্জ এলাকায় নেমেই বাজার ধরে প্রায় ১০ থেকে ২০ মিনিট হাঁটলেই উৎমাছড়া।পথের মাপে যা দাঁড়ায় আম্বরখানা থেকে ধলাই ব্রীজ পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার এবং সেখান থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার এগুলে যে হিসাব দেওয়া যায় তার মাপ প্রায় ৩৩ কিলোমিটারে মজুমদারী থেকে একেবারে কোম্পানিগঞ্জের উৎমাছড়া।গন্তব্য বহুদূর বলে উৎমাছড়ার ভ্রামণিক কে সময় বেছে নিতে হয় সকালের অরুণ আলোকেই।কারণ সিলেট শহরের সাথে উৎমাছড়ার নির্ধারিত কোন জরুরি রাস্তা নেই বলে উৎমাছড়া স্বাধীন বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পত্তির সরকার স্বীকৃত জমিন হলেও ইস্ট ইন্ডিয়ার গঞ্জের চেয়ে অবহেলিত এবং কালো ব্যবসার ভূমি!তবে বর্তমানের উৎমাছড়াকে বাগে আনতে বিলম্ব হেতু এখনও অ বেশি দিনের স্থানীয় মানুষের বাড়ির উঠােন ধরে যাতায়াত করতে হয় বলে অতি উৎপাতের ভ্রামণিক কে ম্যানেজের মানুষ হয়ে ছড়ায় নামতে হয়। 

বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের মধ্যে নো ম্যান্স ল্যান্ড বলতে জিরোপয়েন্ট থেকে ৪৫০ ফুট পর্যন্ত চারণ জমি বুঝালেও উৎমাছড়ায় এর উৎপাত নেই,যদি না কেউ ছড়ারপারে মুখের লাগাম চিহ্নিত আম গাছের সীমা অতিক্রম বা ইন্ডিয়ান ব্রীজের কাছাকাছি না যায়।

উৎমাছড়ার আমেজ আবার বিছানাকান্দির কাছাকাছি।যে বিছানাকান্দি,বিন্নাকান্দি বা বড় বড় ঘাসের সাথে আদিবাসীর ভাষা কান্দি বা এলাকা যুক্ত শব্দকে ধারণ করে হয়েছিলো।তবে যা ই বলি না কেনো,বিছানাকান্দি যেমন ঝিরিজল,জঙ্গল,পাথরে বনোবীথিতে, ব্রীজে,হীমজলে পরিবেষ্টিত ঠিক উৎমাছড়াও অনুরূপে সাজানো বলে অনেকেই উৎমা ছড়াকে বিছানাকান্দির বিমাতা ব্রাদার বলে ডাকতে মজা পান।বিছানাকান্দির উৎপত্তি  ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পর্বত থেকে। আর উৎমাছড়া বা আদরের ধলাই নদী ভারতেরই মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব দিকে পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার পৃথিবীর গড় বৃষ্টিপাতের চেরাপুঞ্জিস্থ মৌসিনরামের সংরক্ষিত বনভূমি থেকে উৎপত্তি নিয়ে বাংলাদেশের ১২৫৮ নম্বর সীমানা পিলার বরাবর ধরে পা গুনে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রবাহিত হয়ে ৩০ কিলোমিটারের উৎমা দক্ষিণ পিয়াইন নদীতে পড়েছে।এক কথায় বলা যায়,

ভারতের মেঘালয রাজ্য থেকে ধেয়ে আসা জঙ্গল বাহিত জল পানিই মূলত উৎমাছড়ার সমূহ সম্পদ।উমস্থা বা অবস্থা থেকে উত্তমা,আবার উত্তমা বা শ্রেষ্ঠ এর অপভ্রংশ যদি উৎমা নাম ধারণ করে,তবে বলা কে গবেষণার ল্যাব বা টেবিলে রেখে ধলাই নদীর পানি প্রবাহের উৎস কে পতনের দিকে নিলে বলতে হয়;ধলাই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপত্তি নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা পরিদর্শন করে রাজনগর উপজেলার মনু নদীতে পতিত হলেও তার বুক ঘেঁষা উৎমাছড়া জেগে ওঠে বর্ষার জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে।মেঘালয় মেঘের চরম উচ্ছ্বাস থেকে জল নেমে ঝর ঝর ঝর্ণা ছুটে চলে ভ্রামণিকের আদর নিতে পারে বলে ধলাই পাড়ের মানুষ বেজায় খুশি।কারণ,বর্ষায় স্ফটিকের মতো ধলাই নদীর বহমান জল উৎমাছড়ায় এনে দেয়,বৈচিত্রিক আনন্দ।উম্মাদ করা মোহমায়া।মেঘলা দিনে একলা হওয়ার পাহাড়িয়া পরিবেশ।আয়না জলের মেলবন্ধন কখনও খয়েরি,কিছু পাথরে শ্যাওলার অবহেলা আবার কোন কোন পাথরে কালোর বিলাপ।আর সাদা বা ধবল বা ধলা পাথরের মুছে যাওয়া দুঃখের বিলাপ কে ধারণ করে পাথরের ফাঁক গলা ঝিরি ঝিরি স্পটিক জলের আদরে শরীরের অবগাহন উৎমাছড়াকে এনে দেয় অন্য অনেক হীম স্পর্শের সহযোগ।এজন্যই উৎমাছড়ার নামার সময় কাল গ্র্যাগরিয়ান ক্যালেন্ডারের জুন থেকে ডিসেম্বর মাস।তবে বর্ষার গম গমে জলের মাপ দেহের উচ্চতা অতিক্রম করে নতুন ভ্রামণিকের জন্য আগ্রাসী রূপায়ন থেকে বাঁচতে সেপ্টেম্বর থেকে সময় নিলে ভালো বলে স্থানীয় রা মনে করেন।উৎমাছড়ার সীমানার উত্তুঙ্গে পেঁজা তুলোর বা মেঘ মলিন আসমান দেখে দেখে ইন্ডিয়ান ব্রীজের কাছাকাছি না গিয়ে যদি মনে হয়, দিনের আয়ূর জাত মেরে শরীর জলের সাথে ঝিরি ঝর্ণা জলের স্থির বিদ্যুতের সংযোগি আলোড়ন মনোরাজ্যে তুলে নেবেন, তবে কারও আপত্তির কিছু নেই।কিন্তু মনে রাখতে হবে,জলে নামার আগে জলের মাপ রাখা জরুরী।এবং সীমানার ওপারের উত্তুঙ্গের আসমান কালো মনে হলে অভিজ্ঞতায় অবগত স্থানীয় মানুষ জলে নামলেও অভিজ্ঞতাহীন মানুষের জলে নামার সাধ দমন করা ভালো বলে মনে করা যায়।কেনো না,একবার পা হড়কে স্রোতে পড়ে পাথরে মাথায় টক্কর লেগে ভ্রামণিক মৃত্যুকে 

বরণ করে নিতে পারেন!তাই বলে নামা যাবে না?ছোঁয়া যাবে না?তা হবে না।যাবেন।তবে প্রস্তুতি নিয়ে।যেমন আমি যা করি-জলে নেমে পিচ্ছিল পা হড়কে না যাওয়ার জন্য ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দামের রাবারের স্যান্ডেল নিই।দূর থেকে দেখা যায় এমন রঙ্গিন জামা পরি।সীমানা পাড়ে বা সমুদ্র পারে রোদের প্রখরতা বেশি থাকে বিধায় রোদ চশমা নিই।মাথা ঢাকতে ছাতা বা কাউবয় ক্যাপ পরি।গোসলের অভিলাসে এবং ব্যাগের ওজন মুক্তির জন্য হালকা কাপড়,গামছা,শর্টস,স্যান্ডো বা গেঞ্জি নিই।সেলফি স্টিকসহ মোবাইলের জলরোধী কাভার নিই।হঠাৎ চার্জ খতম থেকে বাঁচতে পাওয়ার ব্যাংক নিই।আর মহিলাদের জন্য মানানসই রঙ্গীন জামা নিতে বলি।উৎমাছড়ায় আবার খাবার না নেওয়া ভালো মনে করি।তবে বিশুদ্ধ জল নেওয়া জরুরি।কারণ সেখানে জিনিসপত্র রাখার লকার ভাড়া পেলেও জল পাওয়া কিছুটা কঠিন মনে হয়েছে।উৎমাছড়ায় মাত্র ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বাসার পাকে হাঁস-মোরগ,গরু-খাসি বা মাছের সাথে আনলিমিটেড শুটকি ভর্ত্তা ও ডাল ফ্রীর আয়োজন দেখা যায় হঠাৎ পোতা নানান পদের রেস্তোরাঁয়।কেনাকাটায় বাংলাদেশি পণ্যের পাশাপাশি ভারতের পণ্য রুপীর সাথে সখ্যতা সৃষ্টি করে বিক্রির দামে কেনা ছাড়াও জলের গলুইয়ে সাঁতার দিতে দিতে তাৎক্ষণিকের ভাজা সিঙ্গাড়া,সমুচা,পিয়াজু এমন কী চায়ের যোগান ও স্থানীয় দোকানদার একটু বেশি দামে ছোট ছোট বাচ্চাদের মাধ্যমে সার্ভ করেন বলে খারাপ লাগলেও জলের গলুইয়ে শুয়ে শুয়ে খাওয়ায় ব্যতিক্রমী অসুন্দরে সুন্দর মনে হয়।সফট কপি ৫ টাকার জুম ক্যামেরায় ছবি তোলা ৪ টাকায় হতে পারে যদি বেশি তোলা হয়।

ঘোরপ্যাচে উৎমাছড়ার রাস্তা কষ্টের বলে সরকার অচিরেই সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর পর্যটনের স্থানে যাতায়াতের সুবিধার্থে কোম্পানীগঞ্জ-বাংলাদেশের জিরো পয়েন্ট ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর থেকে জাফলং সীমান্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন,যা তে প্রায় ২৩ টি পর্যটন কেন্দ্র এক সুঁতোয় গাঁথা যায়।এবং খুউব সহজেই ভ্রামণিকের নাগালে আসে। সেখানে উৎমাছড়াকেও বঞ্চিত রাখার অবকাশ পাবেন বলে ধারনায় ও রাখি না।

২৪.১০.২০২৫

শেয়ার করুন