
শাহাদত বখ্ত শাহেদ :
সিলেট বাংলাদেশের এক ঐতিহ্যবাহী ও পর্যটননগরী। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই শহরে আসা–যাওয়া ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিলেট শহরের ফুটপাতগুলো হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় সাধারণ পথচারীদের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ফুটপাতের ওপর কাপড়, খাবার, ফলমূল, বাসনপত্রসহ নানা রকম পসরা সাজিয়ে হকাররা পথ আটকে রাখছে। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ দোকানদারদের ব্যবসা।
সিলেটের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, চৌহাট্টা ও রিকাবীবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক এলাকায় ফুটপাত প্রায় সম্পূর্ণভাবে হকারদের দখলে।
পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই বললেই চলে। সিসিক ও জেলা প্রশাসন বারবার ব্যবস্থা নিলেও অল্প কিছুদিন পর আবার তারা ফিরে আসে আগের জায়গায় ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন হকারদের জন্য লালদীঘিরপাড়ে নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ করলেও অধিকাংশ হকার সেখানে বসতে রাজি নয়। কারণ, তারা মনে করেন প্রধান সড়কের ফুটপাতে বসলে ক্রেতা বেশি পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, কিছু প্রভাবশালী ও স্বার্থান্বেষী মহল হকারদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ ব্যাহত করছে।
হকারদের ফুটপাত দখলের কারনে পথচারীদের নিরাপত্তা ও চলাচলের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
দিনে দিনে সড়কে যানজট বেড়ে যাচ্ছে, জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
শহরের বৈধ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দোকানভাড়া ও কর দিয়ে তারা ব্যাবসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তাছাড়া শহরের পরিচ্ছন্নতা, নান্দনিকতা ও পর্যটনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ।
সিটি কর্পোরেশনকে নির্ধারিত হকার মার্কেট কার্যকরভাবে চালু করতে হবে।
নিয়মিত তদারকি ও মনিটরিং টিম গঠন করা দরকার।
ফুটপাত পুনর্দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।
যারা হকারদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সুবিধা নেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে হকারদের জীবিকা যেন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
নির্ধারিত এলাকায় হকার সংকুলান না হলে “বিকল্প হকার জোন” তৈরি করা যেতে পারে।
কিছু এলাকায় সময়ভিত্তিক ব্যবসার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে, যেমন সন্ধ্যার পর কিছু এলাকায় অস্থায়ী বাজার।
সর্বোপরি সবাইকে নিয়ে সমন্বয়ের ভিত্তিতে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা জরুরি।