পঁচিশের ঢাকার ডায়েরি-৪


জাবেদ আহমদ :
এপ্রিল মাস বাংলা বর্ষ শুরুর‌ মাস। ১৪ এপ্রিল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ১লা বৈশাখ পালিত হয়। গ্রীষ্মকালের শুরু বৈশাখে শেষ জৈষ্ঠ্য মাসে, আম কাঁঠালের মওসুম।
আজ ১লা এপ্রিল ২০২৫ পবিত্র ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন বিকালে সপরিবারে আমাদের পৈত্রিক বাড়িতে চলে গেলাম। ঈদের দ্বিতীয় দিন নিজ বাড়িতে (সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রাম) গিয়ে সুরম্য শেরপুর জামে মসজিদে আসর মাগরিব এশার নামাজ আদায় করি। একাধিকবার স্বজনদের কবর জিয়ারত করি।‌ সম্মানিত ইমাম সাহেব, মসজিদ কমিটি, নিকটাত্মীয় ও গ্রামবাসীদের সাথে দেখা ও কথা হলো। দেশ বিদেশের পরিচিত অপরিচিত শত সহস্র মানুষের সহায়তায় এবং মসজিদ কমিটির সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় নান্দনিকভাবে নির্মিত হয়েছে শেরপুর জামে মসজিদ। সুন্দর সাজানো গোছানো মসজিদে নামাজ পড়ে মনে আলাদা প্রশান্তি আসে, প্রাণভরে সকলের জন্য দোয়া করি।‌ মসজিদের ছবি তুলি। ঈদের বেড়াতে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ও এসেছে বাড়িতে। ভাই ব্রাদারদের হাতে হাতে বই, খুবই ভালো লাগলো। এবারের ঈদে আমাদের গোত্রের প্রধান মুরব্বি মাওলানা জহুরুল হক চৌধুরী মানিক চাচা আমেরিকায় থাকায় মসজিদ ও বাড়িতে অনেক শূণ্যতা লাগে। আমাদের দুই বাড়ির বেশিরভাগ চলে গেছেন প্রবাসে, নয়তো শহরে। আজ দেখা হলো সুহেদ আহমদ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান চৌধুরী ফারুক, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, শরীফ আহমদ চৌধুরী, কাসিম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ স্বজনদের সাথে। খুবই আনন্দঘন কয়েক ঘণ্টা কাটলো, বাচ্চারা খুবই উপভোগ করল। গ্রামে না আসলে কেহই রক্তের মায়ার বন্ধন বুঝতে পারবে না। দুপুরের লাঞ্চ, বিকাল ও সন্ধ্যায় চা নাস্তা করে রাত ১০টায় বাসায় পৌঁছি‌।
আজ (২ এপ্রিল ২০২৫) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সিলেট মহানগর এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র -১ রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী) এর সাথে তাঁর হাউজিং এস্টেটের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে দেখা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। সম্পর্কে আমরা ফুফাতো – মামাতো ভাই, ছোটবেলার খেলার সাথী, প্রায় সমবয়সী। প্রায় আধা ঘন্টা অবস্থানকালে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আমরা নানান বিষয়ে আলোচনা করি। বিদায়ের প্রাক্কালে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদীর হাতে তুলে দেই। সিসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র কয়েস লোদী একনজরে বইটি দেখেন, তিনি বইয়ের প্রচ্ছদের প্রশংসা করে বলেন আশা করছি বইটি পড়ে অনেক কিছু জানা যাবে। এর আগে সন্ধ্যায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকালীন উপ রেজিস্ট্রার ও অবসরপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছালিকুর রহমান চৌধুরীর সাথে তাঁর সুবিদবাজার নূরানী আবাসিক এলাকায় গিয়ে দেখা করি। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ছালিকুর রহমান চৌধুরী আমার চাচা, তিনি আমাদের শেরপুর গ্রামের প্রথম স্নাতকোত্তর পাস করা ব্যক্তিত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৭৩ সালে এ ডিগ্রী অর্জন করেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে তাঁকে আমার বই উপহার দেই। তিনি বইয়ের প্রশংসা করেন। অবসরে তিনিও লেখালেখি করছেন, বই প্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। রাতে বাসায় ফিরে দেখা হয় ঈদের বেড়াতে আসা ভাগ্নি সুমাইয়া জামান চৌধুরী ( ভায়রা ভাই মরহুম মোঃ নুরুজ্জামান চৌধুরীর মেয়ে), জামাতা জনতা ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র অফিসার আরাফাতুর রহমান রুহেল ও নাতনি ওয়াজিহা’র সাথে।
আজ (৩ এপ্রিল ২০২৫) দুপুরে এসএসসি চুরাশিয়ান (১৯৮৪) বন্ধু নওশের সিরাজ (ইউকে) ও আনোয়ার রশিদ (আনু) এর হাতে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’। আরেক সহপাঠী ফয়সল মাহমুদের জন্য একটি কপি আনুর নিউ নেশন লাইব্রেরিতে রেখে যাই। আমরা সকলেই সিলেটের দি এইডেড হাই স্কুলের সহপাঠী বন্ধু। যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বসবাস করা বন্ধু নওশের সিরাজকে আড্ডা আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। সস্ত্রীক দেশে এসে সে কক্সবাজার বান্দরবান ঘুরে আসে। বাড়ি নির্মাণ কাজের ব্যস্ততায় তার সময় চলে যায়, ৬ এপ্রিল ২০২৫ বার্মিংহামে ফিরে যাবে। ফোনে কথা বলে আজ দুপুরে সিলেট নগরীর পাঠানপাড়ায় তার বাসায় গিয়ে দেখা করি। বন্ধু নওশের ও তার সহধর্মিণী (ভাবী) আমাকে স্বাগত জানালেন। অনেকক্ষণ বসে গল্প, তার বাসার দোতলার কাজ দেখি, বই উপহার দেই। ভাবী আমাকে ইউকে থেকে নিয়ে আসা একটি শার্ট উপহার দেন। পাঠানপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নওশেরের সাথে জোহরের নামাজ পড়ি। মসজিদে দেখা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম পরিচালক বন্ধু মোঃ আব্দুল কাইয়ুম ও ইকতার খাঁনের সাথে। নওশের সিরাজ এর বাবা সিরাজুল ইসলাম এলাকায় সুপরিচিত, একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। জহির – তাহির মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। এলাকায় একটি মসজিদেরও ভূমিদাতা।
আজ ৪ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার শাওয়াল মাসের প্রথম জুমা দরগাহে হযরত শাহজালাল (র.) মসজিদে জুমার নামাজ আদায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছু মিয়া ও
সিলেটের একজন রত্নগর্ভা মাতা দি এইডেড হাই স্কুলের গণিতের প্রাক্তন শিক্ষক সাদিদ উদ্দিন খাঁন (পিংকু স্যার) ও প্রকৌশলী রাজি উদ্দিন খাঁনের মাতা কুলসুমা বিবি(৯২)’র জানাজা ও দাফন শেষে কবর জিয়ারত করতে এসে আম্বরখানা কলোনির প্রিয় স্বজনদের সাথে দেখা হয়ে গেল। কবরস্থান ঘুরে মরহুম মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ চাচার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা দোয়া দুরুদ পড়ি। খুবই সুন্দরভাবে মোনাজাত পরিচালনা করে একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার আব্দুল মুহিত দিদার। সেলিম আউয়াল ভাই জানালেন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল আলিম পাশ করে দিদার কিশোর বয়সে সৌদিআরবে চলে গিয়েছিল। দেখা হয়ে যায় তাঁদের কনিষ্ঠ ভ্রাতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী শেখ মুক্তাদির ইকবালের সাথে। ইকবাল ২০২২ সালে মেসেঞ্জারে কথা বলে লন্ডনের ইউস্টন রেলওয়ে স্টেশনে এসে আমার সাথে দেখা করেছিল। বাল্যবন্ধু রুহুল আমিন স্বপনের সাথেও দেখা হলো। আম্বরখানা কলোনির সাবেক কয়েকজন একসাথে হলেই ছবি তুলতে হয়, সেলিম আউয়াল ভাইয়ের পরামর্শে ছবি তোলা হয়ে গেল। আজ বাদ জুমা ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (র.) মাজার শরীফের সম্মানিত সরেকওম মোতওয়াল্লি জনাব ফতেহউল্লাহ আমান এর হাতে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ তুলে দেই। এসময় দরগাহের খাদেম সাইক্লোন কেন্দ্রীয় সংসদ সিলেট এর সম্মানিত উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি শামুন মাহমুদ খাঁন ও দরগাহের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দেওয়ান জহীর উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন, তাঁদেরকেও বই উপহার দেই।
৫ এপ্রিল ২০২৫ দুপুরে সিলেটের লোকনাথ ট্যুরিজমের অফিসে যাই। বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তরুণ অফিসার মোঃ বখতিয়ার উদ্দিন তার বোনকে নিয়ে আমাদের বাসায় ঈদের বেড়াতে আসে। অতিথিদের সাথে ঘন্টাখানেক নানান আলাপ আলোচনা পিঠা পুলির সাথে চা দিয়ে আপ্যায়ন করান সহধর্মিণী নুরজাহান পারভীন চৌধুরী।
ঈদের আগে ব্যক্তিগত ও পরে সরকারি ছুটি কাটিয়ে
১৬ দিন পর আজ ঢাকায় ফিরলাম। উপবন ট্রেন শনিবার রাতে সিলেট থেকে ৮ মিনিট বিলম্বে ছাড়লেও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে আজ সকাল সাড়ে ৬ টায়। ঈদের ছুটির পর আজ ব্যাংক অফিস আদালত প্রথম খুলছে, এজন্য ট্রেনে ছিল প্রচুর ভীড়।‌ আসনে বসার সাথে সমানতালে ছিল দাঁড়ানো, করিডোরে বসা যাত্রির ভীড়। সবকিছুর পর সময়মতো নিরাপদে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে আসতে পেরেই স্বস্তি লাগছে। রোকেয়া খালা অসুস্থ থাকায় ডরমেটরিতে সকালের নাস্তা রেডি হয়নি। সহকর্মী মোঃ ইকবাল হাসান অফিসে যাবার সময় মতিঝিলের ‘রিজিক’ রেস্টুরেন্টে নান পরোটা গরুর পায়া দিয়ে নাস্তা করালেন।
আজ সকাল ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংক হলুদ দলের সভাপতি মোঃ রজব আলী, এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মকবুল হোসেন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফয়েজ আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্লাব ঢাকার সভাপতি মোঃ জহুরুল হক, ঢাকা কোঅপারেটিভ এর সম্পাদক মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন, ভাইস-চেয়ারম্যান আবুল বাশার আব্দুল ওয়াহিদ ও জয়নাল আবেদীন, সহ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান তানিন এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাননীয় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ জাকির হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ মেজবাহ উদ্দিন, ড. সায়েরা ইউনুস, রূপ রতন পাইন, একেএম এহসান, আরিফ হোসেন খান, শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ নিয়ামুল কবির, মোঃ রোকনুজ্জামান প্রমুখের সাথে দেখা করে ঈদের সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করি। গভর্নর স্যারের চেম্বারে ঈদের জন্য টাঙ্গাইলের মিষ্টি দিয়ে আগত সকলকে আপ্যায়ন করানো হয়। গভর্নর স্যারের চেম্বারে ও থার্ড ফ্লোরে নীল দলের নেতাদের সাথে দেখা হয় এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আব্দুল মতিন মোল্লার হাটখোলার বাসায় লাঞ্চ করি। মিসেস মোল্লার ( নাজমা শিমুল পাশা) রান্না খুবই সুস্বাদু ছিল। কাকতালীয় হলেও গত বছর ঈদ উল ফিতরের পর (১৫ এপ্রিল ২০২৪) প্রথম অফিস খোলার দিনেও লাঞ্চ বন্ধু সহকর্মী মোঃ আব্দুল মতিন মোল্লার বাড়িতে (নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ভোলতা বালিয়াপাড়া গ্রামে) করেছিলাম।
বাংলাদেশ ব্যাংক সেন্ট্রাল মসজিদের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সম্মানিত ইমাম জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন এর সাথে আজ বাদ আসর তাঁর খাস কামরায় দেখা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২৫ মার্চ ২০২৫ তাঁকে ইমাম পদে (১০ম গ্রেড) নিয়োগ দেয়, আজ এক আদেশে মতিঝিল অফিসে বহাল করে। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মসজিদের ইমাম পদে স্থায়ী নিয়োগ দান করে। উল্লেখ্য একসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের সবকটি অফিসে ইমাম পদে স্থায়ী লোক নিয়োগ ছিল। আজ সন্ধ্যায় আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক ডরমিটরিতে পরিচাল‌ক মো: সাব্বিরুল আলম চৌধুরী,অসীম কুমার চৌধুরী, মোঃ ফজলার রহমান, মোঃ মুজিবুর রহমান ও মোঃ নুরুল আলম, অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ নুরুল আমিন, এম,ডি আবুল কালাম আজাদ, মোঃ ইকবাল হাসান, ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, মোঃ আব্দুল আহাদ, জিয়াউল হায়দার, মোঃ আব্দুল হাফিজ, মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, মাসুম পারভেজ প্রমুখের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। মোঃ আব্দুল আহাদ পবিত্র রমজান মাসে সস্ত্রীক ওমরাহ পালন করে এসেছেন, তাঁকে খুবই সুন্দর লাগছে। সিলেট থেকে জরুরি কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক কালিপদ রায় রেলপথে ঢাকায় আসছেন, আজ রাতে অতিথিশালায় থাকবেন।
আজ (৭ এপ্রিল ২০২৫) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের একাউন্টস এন্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্ট-২ এর পরিচালক জনাব মোঃ নুরুল আলম এর হাতে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ আজ তুলে দেন এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-২ এর পরিচালক জনাব মোঃ ছাইফুল ইসলাম। বীর চট্টলার কৃতি সন্তান মোঃ নুরুল আলম ইতোপূর্বে অতিরিক্ত পরিচালক পদে প্রধান কার্যালয়ে কাজ করার সময় ডিবিআই -১ এ‌ মোঃ ছাইফুল ইসলাম এর সাথে কাজ করেন। আজ সন্ধ্যায় সদ্য ওমরাহ পালন করে আসা মোঃ আব্দুল আহাদের ডরমিটরির ২১১ কক্ষে সৌদি খেজুরের সাথে ফলফলাদি খাওয়া হলো। নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যারের ৩০৭ নম্বর কক্ষে পাকা বেল খাওয়া হলো। রোকেয়া খালার দেয়া রাতের খাবার দিয়েই সেহরি খেলাম।
৮ এপ্রিল ২০২৫ সকালে বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসের প্রাক্তন সহকর্মী অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কেয়ারটেকার মোঃ কুতুব উদ্দিন ইন্তেকাল করেন। তাঁর ছেলে মোঃ আলিম উদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসে ডাটা এন্ট্রি/কন্ট্রোল অপারেটর পদে কর্মরত রয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সেন্ট্রাল মসজিদের নবনিযুক্ত ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করা হয়। বাদ জোহর মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ জুলহাস মিয়া, সহ-সভাপতি মোঃ ফয়েজ আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মতিন মোল্ল্যাসহ কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ইমাম সাহেবকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আলী আহমদ ও মোঃ রোকনুজ্জামান। উপস্থিত সকলে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী একজন আলেমে দ্বীনকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইমাম পদে স্থায়ী নিয়োগ দেয়ায় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক ডরমিটরিতে আজ সন্ধ্যায় রমজানের পরিবেশ ছিল। চারতলায় মোঃ ফজলার রহমান, মোঃ নুরুল আলম, মুহাম্মদ নুরুল আমিন ও আমি, দ্বিতীয় তলায় মোঃ আব্দুল আহাদ আজ শাওয়াল মাসের নফল রোজা রাখায় রোকেয়া খালা আমাদের জন্য খিচুড়ি রান্না করেন। আমরাও সবাই নানান ইফতার (খেজুর, ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, জিলাপি, তরমুজ) নিয়ে আসি।‌ ইফতার শেষে আজও মোঃ আব্দুল আহাদ এর কক্ষে ফলের মেলা (পাকা পেঁপে, মাল্টা, নাশপাতি, তরমুজ) বসে। এশার নামাজ শেষে নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যারের কক্ষে পেঁপে খাওয়া হলো। অতিরিক্ত খাবারের দখল থেকে বাঁচতে রোকেয়া খালাকে রাতের খাবার না দিতে বলি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক-২০০৯ ব্যাচের অতিরিক্ত পরিচালক পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা আজ (৯ এপ্রিল ২০২৫) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়, মতিঝিল অফিস, সদরঘাট অফিস ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশিক্ষণ একাডেমী, মিরপুরে একযোগে সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগণকে মিষ্টিমুখ করান। এটি ছিল একটি অনন্য আয়োজন, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিবারের সবাই আজ আনন্দে শরীক হন, মিষ্টি খান। অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে আজ সকাল ১১টার মধ্যেই তাঁদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মানসম্পন্ন দুটি মিষ্টি প্রত্যেকের ডেক্সে পৌঁছে দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে একইদিনে এতো বড় পরিসরে পদোন্নতির মিষ্টি বিতরণ এটাই প্রথম। মিনি ট্রাকে করে সকালবেলা মিষ্টি মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে এসে পৌঁছে। আয়োজকদের অন্যতম মোঃ জয়নাল আবেদীন এর সাথে কথা বলে জানা যায় বিগত ৩ মার্চ ২০২৫ (২ রমজান ১৪৪৬ হিজরি) পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক এডি ২০০৯ ব্যাচের ৩৬ জন সদস্য এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ছিলেন। এজন্য সর্বমোট ৬৫৭ কেজি মিষ্টি ক্রয় করা হয়। আজও এশার নামাজের পর সহকর্মী মোঃ আব্দুল আহাদ এর ডরমিটরির কক্ষে ফলের পসরা বসে। আমাদের (মোঃ ফজলার রহমান, মোঃ ইকবাল হাসান, মোঃ আব্দুল আহাদ, প্রকৌশলী সাব্বির ও আমি) সকলের ফল‌ খেয়েই পেট ভর্তি হয়ে যায়, রাতের খাবার যৎসামান্য খেয়ে অবশিষ্ট বাসার সাথে লাগোয়া গাছে থাকা কাকের জন্য রেখে দেই। সকালবেলা ছাদের কোনে ফেলে দিলে অতি উৎসাহে কাকেরা খেয়ে নিবে।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাসান এর সাথে আজ ১০ এপ্রিল ২০২৫ দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামীমুর রহমান (অব.) এর অফিস কক্ষে দেখা হয়। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশায়। কুশল বিনিময়ের পর তাঁকে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ উপহার দেই। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ শামীমুর রহমান (অব:), মোঃ আনিচুর রহমান কে আজ বই উপহার দেই।
১১ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার সিলেটের বাসায় জুমার নামাজের প্রস্তুতি চলছে। ছোট মেয়ে সায়িমা হুমায়রা এসে বলল মেডিকেল কলেজ বন্ধ, কোথাও বেড়াতে যাওয়া যায় কি-না? আমি বললাম পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব দেখতে এবং খাগড়াছড়ি ও সাজেক ঘুরে বেড়াতে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার প্রাচ্যবাংলার কবিরা রওয়ানা দিয়েছেন। বৈসাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান তিনটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসবের সমন্বিত নাম। ত্রিপুরাদের বৈসুব/বৈসুবা বা বাইসু, মারমাদের সাংগ্রাই এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গাদের বিজু। ছেলে-মেয়েদের খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক যাবার ভিডিও দেখালাম। দুই মেয়ে ও বড় ছেলে ( নায়িমা বুশরা, সায়িমা হুমায়রা ও সামিন ইয়াসার) সাজেক খাগড়াছড়ি ভ্রমণে গ্রীণ সিগন্যাল দিল। জুমার নামাজের পর পাহাড় ভ্রমণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। বৈশাখের ছুটির আগের দিন ১৩ এপ্রিল আমি ছুটি নিয়েছি, ঢাকায় আমাকে ১৫ এপ্রিল অফিসে যোগদান করতে হবে। সে হিসেবে ভ্রমণসূচি তৈরি করি। ১১ এপ্রিল ২০২৪ রাত ১০টার সৌদিয়া এসি বাসে চট্টগ্রামের পথে রওয়ানা দেই। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টায় চট্টগ্রামের দামপাড়ায় পৌঁছে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে অক্সিজেন মোড়ে শান্তি পরিবহনের কাউন্টারে যাই। শান্তি পরিবহন চট্টগ্রাম টু খাগড়াছড়ি/দীঘিনালা যাবার সেরা বাস। আমরা সকাল ৯টার বাসে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা হয়ে দীঘিনালার পথে রওয়ানা দেই। এর আগে বাস কাউন্টারে মালামাল রেখে অক্সিজেন মোড়ের জামান হোটেলে সকালবেলার নাস্তা করি। চট্টগ্রাম নগরীতে জামান হোটেল অতি পুরনো পরিচ্ছন্ন ও ভাল মানের রেস্টুরেন্ট। চট্টগ্রাম নগরী অক্সিজেন থেকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা যেতে চার ঘন্টা সময় লাগে।‌ পথিমধ্যে মানিকছড়িতে যাত্রাবিরতি দেয়। বেলা ১টায়। দীঘিনালায় বাস থেকে নেমে সাজেক যাবার জন্য গাড়ি ভাড়া করি। আমরা চারজন থাকায় জীপ/চান্দের গাড়ি না নিয়ে ৪৭৫ সিসির মাহেন্দ্র অটোরিকশা ভাড়া নেই। সাজেকে এক রাত থাকা, সাইটগুলো দেখানো, পরেরদিন খাগড়াছড়ি এসে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সাইট দেখানো ছিল চুক্তিতে, ভাড়া ৬ হাজার টাকা। সাজেক কে পাহাড়ের রাণী এবং রাঙামাটির ছাদ বলা হয়ে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাজেকের উচ্চতা ১৮০০ ফুট (৫৫০ মিটার) , এটি সবুজ ও ঘন বনের জন্য পরিচিত।
একই প্যাকেজে জীপ/চান্দের গাড়িতে যেতে (৭জন) ১১ হাজার টাকা লাগবে। সাজেক যাওয়া আসা দিনে দুইবার সেনাবাহিনীর স্কটে করা যায়। সকাল ১১টায় ও বিকাল আড়াইটায় স্কট থাকে। আমরা বেলা ২টায় দীঘিনালা থেকে বাঘাইঘাটে পৌঁছে পাশ্ববর্তী ৬ নং আদর্শপাড়া জামে মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করি। সড়কের পাশে ফল মার্কেট থেকে পেঁপে, কলা, পাহাড়ি রক্ত জাম খাই। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক আড়াইটায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা গড়ি সমুহ সেনাবাহিনীর স্কটে বাঘাইঘাট থেকে সাজেকের পথে রওয়ানা দেয়। প্রসঙ্গত সাজেক হলো রাঙামাটি পার্বত্য জেলার অধীনে হলেও একমাত্র সড়ক যোগাযোগ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাথে। সাজেক থানার সম্মুখে বিরতি দেয়া হয়, এসময় দুদিকের গাড়িগুলো ক্রসিং করে।‌ পাহাড়ি উঁচু নিচু, আঁকা বাঁকা সড়কে যান চলাচল এমনিতেই ঝুঁকি, ক্রসিং এর সময় অতীব ঝুঁকি থাকে। বিকাল সাড়ে ৪ টায় আমরা সাজেক ভ্যালির‌ পাদদেশে পৌঁছে রুইলুই পাড়ায় আগের রাতে বাসে বসে অনলাইনে বুক দেয়া নিরিবিলি ইকো রিসোর্ট ওঠি। সাজেক পরিবহনের মাহেন্দ্র অটোরিকশার ড্রাইভার মোঃ রাকিব (মোবাইল নম্বর 01558914605) আমাদের সাথে সার্বক্ষণিক ছিলেন, খুবই পেশাদার। সাজেকে সার্বক্ষণিক গাড়ি রাখতে হয়, সাইট দেখা, এমনকি খাওয়া দাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্টে যেতেও দরকার হয়। দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টা জার্নির পরও রিসোর্টে আধা ঘন্টার মধ্যে তৈরি হয়ে আবার গাড়িতে করে আমরা বের হয়ে পড়ি। যেন পর্যটকদের ক্লান্ত হতে নেই। রুইলুই পাড়ায় সড়কে দাঁড়িয়ে ও সাজেক জিরো পয়েন্টের‌ কাছে টিলার ওপর হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে সাথে থাকা দূরবীন দিয়ে সূর্যাস্ত দেখি। মাগরিবের নামাজের আজান হলে পাশের টিলায় সেনাবাহিনীর তৈরি অতীব সুন্দর বায়তুস সালাম জামে মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করি। বিকালে আমরা লুসাই হেরিটেজ গ্রামে যাই, তখন তাদের বন্ধ হওয়ার সময় কাছাকাছি চলে এসেছে।‌ সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা এবং বিকাল ৩টা হতে সাড়ে ৫টা। প্রবেশ ফি ৩০টাকা, লুসাইদের কাপড় পরিধান ফি আধা ঘন্টার জন্য ১০০টাকা। আমরা পরের দিন সকালে আসব বলে চলে আসি। সাজেক জিরো পয়েন্টে সন্ধ্যা বেলা সড়কের পাশে খাবারের পসরা সাজিয়ে অনেক দোকান বসে।‌ আমরা আজ দুপুর থেকে নাস্তা ফলফলাদি খেয়ে আছি, সন্ধ্যা বেলাও স্ট্রিট রেস্টুরেন্টে পাহাড়ি নানা পিঠা খাই ও বাঁশে পরিবেশন করা চা পান করি। রাত সাড়ে ৭ টায় আমরা একটি রেস্টুরেন্টে হাঁসের মাংস দিয়ে রাতের ডিনার‌ করি। খাবারের প্যাকেজ মূল্য ছিল প্রতিজন ৩০০ টাকা। পাহাড়িদের কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়ে বাঙালিরা কটেজ ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করে পরিচালনা করেন। সাজেক ভ্রমনের সবচেয়ে ভালো সময় জুলাই হতে নভেম্বর মাস। এসময় পাহাড়ে মেঘের দোলা দেখা যায়, গাছপালা সবুজ থাকে।সড়কপথে দীর্ঘ ৪২৫ কিলোমিটার জার্নির দখলে আমরা সবাই ক্লান্ত ছিলাম। নিরিবিলির ‘চিম্বুলাই’ রিসোর্টে ফিরে পরেরদিন ভোরের সাজেক দেখতে আমরা সবাই রাত দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ি। ডুপ্লেক্স রিসোর্টে নীচে খাটে আমরা বাপ বেটা এবং কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে কাঠের ফ্লোরে রাখা বেডে দুই মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। কাঠের খুঁটির ওপর কাঠ, বাঁশ ও ছন নিয়ে নান্দনিকভাবে নির্মিত ১২ টি কটেজ রয়েছে নিরিবিলি ইকো রিসোর্টে। প্রতিটি কটেজের বারান্দায় ইজি চেয়ার, দোলনা রয়েছে। উপর থেকে নিচে যাওয়ার জন্য কাঠের সিঁড়ি রয়েছে। কটেজের বাহিরেও দোলনা বসার বেঞ্চ রয়েছে, সেখানে বসে সাজেকের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। চারজনের জন্য রিসোর্টের‌ এক রাতের ভাড়া ছিল ৬ হাজার টাকা। ১২ এপ্রিল ভোরে ওঠে ফজরের নামাজ পড়ে‌ বের হয়ে সিঁড়ি বেয়ে রিসোর্টের নিচ পর্যন্ত যাই। আশপাশের এলাকা দেখি। নিরিবিলি রিসোর্টের কলেজগুলোর নাম পাহাড়ি জনপদের নামে রাখা হয়েছে। এগুলো হলো চিম্বুলাই, মাচাল়ং, লুংঠিয়ান, উদয়পুর, তুইছুই, জৌপুই, বেটলিং ও লংকর। বাচ্চাদের রিসোর্ট পছন্দ হয়েছে, সূর্যোদয় থেকে টানা তিন ঘণ্টা রিসোর্ট এলাকায় তারা ছবি তুলেছে। অগ্রবর্তী টিমের কবি রবিউল আলম রবি সরকার হোটেলটি পছন্দ করে দেন, তাঁরা এখানে কবিতার শুটিং করেছিলেন। সকাল আটটায় রিসোর্টের মেন্ডেটরি ব্রেকফাস্ট করে আমরা লুসাই হেরিটেজ গ্রামে গিয়ে লুসাই সাজে সজ্জিত হয়ে গ্রাম ঘুরে দেখি। প্রায় ঘন্টা খানেক অবস্থান করে আমরা ছুটে চলি কংলাক পাহাড়ের পানে। সাজেক ছাড়ার সকালবেলার স্কটের সময় কাছে চলে আসায় অনেক কষ্টে আমরা দ্রুততার সাথে পায়ে হেঁটে কংলাক পাহাড়ের ওপর গিয়ে সেখানে লেবুর শরবত পান করি। শরবতের মূল্য প্রতি গ্লাস ৫০ টাকা। সাড়ে ১০টায় আমরা নিচে চলে আসলে গাড়ি চড়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কট এলাকায় চলে আসি। সাজেক থেকে খাগড়াছড়ির পথে সকাল ১১টায় সেনাবাহিনীর স্কটে ফিরতি যাত্রা শুরু করি। বেলা আড়াইটায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার কলেজ রোডের নারিকেল গার্ডেন এলাকায় মাউন্ট ইন হোটেলে ওঠি। চারজনের এসি রুমের ভাড়া ৩৫০০ টাকা। জোহরের নামাজ ও ফ্রেশ হয়ে আমরা হোটেলের পাশে থাকা মোহছেন আউলিয়া ভাত ঘরে দুপুরের খাবার খেয়ে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ঝুলন্ত ব্রিজ এবং আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখে আসি। বিস্তির্ণ এলাকা নিয়ে দুটি স্পটই খুবই দেখার মতো জায়গা। সময়াভাবে পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায় নি।
খাগড়াছড়িতে ‘আলুটিলা সুরঙ্গ/গুহা পাহাড়িরা বলে মাতাই হাকর’ শুধু সাহসীরাই পাড়ি দিতে পারে, এটা গুহায় প্রবেশ পথে লেখা রয়েছে। নিজেদের সাহসী প্রমাণ করতে আজ আমরা চারজন গুহায় ঢুকে পড়ি। প্রবেশের পর পিচ্ছিল কাঁদা পানি মাড়ি, অন্ধকারে ১/২ বার পিচ্ছিল খেয়ে জামাকাপড় নষ্ট করেও শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষে প্রাকৃতিক গুহা থেকে বের হয়ে বিজয়ের মুহূর্তে ছবি তুলি। বড় ছেলে সামিন আমাদের পিছনে ফেলে গুহা পাড়ি দিয়ে উপরে চলে যায়। আমাদের আনন্দে সামিল হয় পাহাড়ি এক কিশোর। দূর্গন্ধযুক্ত কাঁদা মাখানোহোট কাপড় নিয়ে হোটেলে ফিরে গোসল করে বিশ্রাম নেই।‌ সন্ধ্যায় হোটেল লবিতে প্রাচ্যবাংলার সভাপতি রবিউল আলম রবি সরকার, উপদেষ্টা কবি ও পূথি সম্রাজ্ঞী হাসিনা মমতাজ, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী সচিব ডা: এম,এ, হান্নান, কবি কবীর হুমায়ূন, রীনা পন্ডিত প্রমুখের সাথে দেখা হয়।
১৪ এপ্রিল ২০২৫ বাংলা নববর্ষ বৈশাখের প্রথম দিন খাগড়াছড়ি শহরে কাটে। ফজরের নামাজ মাউন্ট ইন হোটেলের কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির মসজিদে একা আদায় করি, এ মসজিদে ফজর ছাড়া অন্য ওয়াক্তের নামাজ জামাতের সাথে আদায় হয়। সকালবেলা হাঁটতে হাঁটতে খাগড়াছড়ি জেলা শহর দেখি। শাপলা চত্বর, খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শহীদ মিনার ঘুরে কলেজ রোড নারিকেল গার্ডেন এলাকায় হোটেলে ফিরে আসি। গোসল করে সকাল ৯ টায় খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ায় মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসবে যোগদান করলে আয়োজকেরা স্বাগত জানান। ঢাকার প্রাচ্যবাংলার সভাপতি রবিউল আলম রবি সরকার, হাসিনা মমতাজ, নুরুল শেপার খান প্রমুখ এ উৎসবে ছিলেন।‌ আমার দুই মেয়ে গিয়েছিল উৎসব দেখতে, তারা খুব মজা করেছে। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ১০টায় শহরে বর্ষবরণের রেলি বের করে। ফিরে এসে পানি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সকাল ১১টায় ব্যাটারি চালিত টমটম চড়ে খাগড়াছড়ি শহরের নানা সড়ক ঘুরে হোটেলে ফিরে আসি। পথে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির নববর্ষের শোভাযাত্রা দেখি। পাহাড়িরা আজ শহরজুড়ে ট্রাকে চড়ে আনন্দ শোভাযাত্রা করছে। দুপুরে হোটেল রুম ছেড়ে আমরা সবাই লবিতে চলে আসি। আড্ডা আলোচনায় বিকালের সময় কাটে। খাগড়াছড়িতে সিলেটের লোক পিকআপ ড্রাইভার আব্দুল মজিদ ও হোটেল বয় শামীমের সাথে পরিচয় হয়। নববর্ষের ১লা বৈশাখের রাতে খাগড়াছড়ি শহরের কলেজ রোড নারিকেল গার্ডেন এলাকায় মাউন্ট ইন হোটেলের করিডোরে প্রাচ্যবাংলার নববর্ষ কবিতা উৎসব ১৪৩২ এ আমি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলাম। প্রাচ্যবাংলার সভাপতি রবিউল আলম রবি সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কবি প্রাচ্যবাংলার উপদেষ্টা হাসিনা মমতাজ। উৎসবে খাগড়াছড়ির দু’জন কবিকে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ উপহার দেই। রাত দশটার সেন্টমার্টিন পরিবহনে ঢাকায় ফিরার পথে খাগড়াছড়ি – চট্টগ্রামের পাহাড়ি উঁচু নিচু আঁকা বাঁকা সড়কে ছোট মেয়ে সায়িমা ভয়াবহ বমি করে। তার দেখাদেখি বড় ছেলে সামিনও বমি করে। তাদের সামলাতে দ্রুতগতির চলন্ত বাসে বেশ দখল পোহাতে হয়।
আজ ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ভোরে খাগড়াছড়ি থেকে দীর্ঘ জার্নি করে ঢাকায় পৌঁছে আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক নিবাস মসজিদে জামাতের সাথে (৫.১০) ফজরের নামাজ পড়ি।‌ ঢাকায় বেড়াতে এসে ছোট মেয়ে মেডিকেল ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট সায়িমা প্রথম মেট্রোরেল চড়ে। মতিঝিল থেকে কারওয়ানবাজার যাওয়া করি। সাথে ছিল বড়মেয়ে বুশরা। এর আগে সে ডিসেম্বর ২০২৪ মেট্রোরেল চড়েছিল। অফিসার্স ডরমিটরির গেস্ট হাউসের ৩০৮ নম্বর কক্ষে তারা দুদিন থাকবে।
আজ (১৬ এপ্রিল ২০২৫) সকালে ছোট মেয়ে চৌধুরী সায়িমা হুমায়রা আহমদ কে নিয়ে ঢাকায় আমার সকালবেলার হাঁটা ব্যয়ামের প্রিয় এলাকা রমনা পার্কে যাই। বাংলাদেশ ব্যাংক ডরমিটরির বাসিন্দা নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যারের সাথে তাঁর প্রাইভেট কারে চড়ে রমনায় যাওয়া আসা করি। বুশরা ও সামিন রুমে ঘুমে ছিল। সকালবেলা হাঁটায় বের হওয়া বিরাট চ্যালেঞ্জের। রমনায় সায়িমার প্রথম যাওয়ায় হাঁটার চেয়ে ছবি তোলাই বেশি হয়েছে। রমনার সকালের পরিবেশ দেখে সে বেজায় খুশি। তার বোনঝি দেওয়ান আইজা রমনায় হাঁটা শিখেছিল। শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যার ফেরার পথে আমাদের রেস্টুরেন্টে গরুর পায়া ও নান/পরোটা দিয়ে হেভি নাস্তা করালেন।‌ সর্বোচ্চ পদের সেন্ট্রাল ব্যাংকার শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যার খুবই অমায়িক ও নিরহংকার ব্যক্তি। আজ রাতে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে নয়নাভিরাম ভাংগা চত্বর ঘুরে শিমুলিয়ায় ৩ নম্বর ফেরিঘাট পদ্মার পাড়ে ‘শখের ইলিশ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট’ এ পছন্দের ইলিশ মাছ নিজেরা ফ্রাই করে ডিনার করি। সিজন না থাকায় ৮০০/৯০০ গ্রামের ইলিশ মাছ ১৬০০ টাকায় কিনে হাফ লিটার সরিষার তেল দিয়ে ভাজা হয়। শেফ ইলিশের লেজ দিয়ে মজাদার ভর্তা করে দেন। ৭ জনের ইলিশ ও বেগুন ভাজা, মাছ ভর্তা, ভাত, ডাল, সালাদ , মিনারেল পানিসহ বিল আসে ২৫৫০টাকা। রেস্টুরেন্টের একজন কর্মীর বাড়ি হবিগঞ্জে, আমাদের বাড়ি সিলেট জেনে আলাদা সমাদর করেন। ভাংগা উপজেলা মডেল মসজিদে নামাজ আদায় করা হলো। বহরে আমার সাথে সহকর্মী মোঃ ইকবাল হাসান, বড় মেয়ে চৌধুরী নায়িমা বুশরা ও চৌধুরী সায়িমা হুমায়রা ও ছেলে চৌধুরী সামিন ছিল। সহকর্মী ও ডরমিটরির বাসিন্দা মোঃ আব্দুল আহাদ ফোন করে ঢাকায় আসা আমার পরিবার সদস্যদের রাতের ডিনারে দাওয়াত দেন, পদ্মায় বেড়াতে চলে যাওয়ায় দাওয়াত রক্ষা করা যায়নি।
আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন জনাব কালিপদ রায়। তাঁকে সিলেট অফিসে বহাল করা হয়েছে।‌ আজ কর্মদিবস শেষে অবসর উত্তর ছুটিতে গমন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক সাইফুল ইসলাম স্যার।
১৭ এপ্রিল ২০২৫ রাতে সিলেটের বাসায় পৌঁছলে আমাদের এক সপ্তাহের (রাঙামাটির সাজেক, খাগড়াছড়ির ঝুলন্ত ব্রিজ, আলুটিলার গুহা, মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব, ঢাকার মেট্রোরেল আর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর) ভ্রমণ শেষ হলো।
১৮ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসের সহকারী পরিচালক (ক্যাশ) জয়দ্বীপ চক্রবর্তীর শুভ পরিণয় অনুষ্ঠানে সিলেট মহানগরীর পল্লবী কমিউনিটি সেন্টারে যাই। বিকালে সহকর্মী রান্টু চন্দ্র দাস আমাকে ফোন করে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বিশেষ অনুরোধ করেন। আমি শাওয়াল মাসের নফল রোজা রাখায় ইফতার করে বিয়েতে যাওয়ার জন্য বাসায় ভারি কিছু খাইনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা হয় অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ইমাম উদ্দিন, মোঃ আব্দুল হাদী, এটিএম হাবিবুল্লাহ, মলয় কান্তি পাল, বন্ধু সহকর্মী বিনয় ভূষণ রায়, সুব্রত দত্ত, ঢাকা থেকে আসা সহকর্মী জুয়েল কুমার সাহাসহ অনেকের সাথে। খাওয়া দাওয়ার পর বরের সাথে সবাই মিলে ছবি তুলি।‌ বিয়ের সেন্টারে বসেই শনিবার রাতে ঢাকায় ফেরার জন্য উপবন ট্রেনের টিকেটের জন্য ফোন দেই সহকর্মী মোঃ ইকবাল হাসানকে, তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় আমার জন্য একটি টিকেট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান।
১৯ এপ্রিল ২০২৫ দুপুরে লোকনাথ ট্যুরিজমে গেলে সত্বাধিকারী কবি নিরঞ্জন চন্দ্র চন্দের সাথে দেখা হয়। কালিঘাটে দেখা হয় সংস্কৃতি কর্মী নিরঞ্জন দাস টুকুর সাথে।‌ সাংবাদিক ও গল্পকার তাসলিমা খানম বীথি তাঁর দ্বিতীয় বই ‘মায়াবিনী খোঁপার ফুল’ এর একটি কপি ফোনে যোগাযোগ করে জিন্দাবাজারে‌ আমাদের উনদাল রেস্টুরেন্টে রেখে গেছেন, রাতে আমি সংগ্রহ করি। বিকালে স্বজন কবি সালেহ আহমদ খসরু ভাইকে ফোন করে সন্ধ্যায় সহধর্মিণী নুরজাহান পারভীন চৌধুরী, ছোট ছেলে হাসিন ইয়াসারকে নিয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ রফিক উদ্দিন খান এর সাথে তাঁর ইবনে সিনা হাসপাতাল রিকাবিবাজারের চেম্বারে যাই। তিনি আমার তালতো ভাই, আমার সহধর্মিণীর বান্ধবীর স্বামী, অন্যদিকে তাঁর বড়ভাই সিরাজ উদ্দিন আহমদ খান বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম পরিচালক, ত্রিপল সম্পর্ক। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের চেম্বারে ডাকলেন, আন্তরিকতার সাথে তিনজনের চোখ পরীক্ষা করে পরামর্শ দিলেন। চিকিৎসা সেবার ফাঁকে কুশলাদি জিজ্ঞেস করলেন। সেবাদান শেষে ফি না নিয়ে বিদায় জানালেও আমি জোর করে কিছু টাকা দিয়ে আসি।‌ তালতো ভাইকে বলি সেবামূল্য আজ কিছুটা পরিশোধ না করলে অন্যদিন মিলবে না। রাতের ট্রেনে ঢাকার পথে রওয়ানা দেই। সিলেটে শুক্র শনিবার দুদিন বৃষ্টিপাত ছিল না, আবহাওয়া ছিল খুবই তপ্ত।
আজ বিকালে অচেনা নম্বর থেকে আমার বিকাশে ২০০ টাকা ইন‌ করে। রাতে তানজিল (+8801304648640) নামের এক ব্যক্তি ঠাকুরগাঁও থেকে ফোন করে জানালে তাঁর নম্বরে দ্রুত ফেরত পাঠাই, তিনি আবার ফোন করে আমি সিলেটের জেনে কৃতজ্ঞতা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পদে আজ ২০ এপ্রিল ২০২৫ পদোন্নতি পেয়েছেন সহকারী পরিচালক ২০০৩ ব্যাচের প্রথম কর্মকর্তা রণজিৎ কুমার রায়। তাঁর বাড়ি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়।
আজ ২১ এপ্রিল ২০২৫ সকালে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকার গুলশান -২ এর ডেল্টা লাইফ টাওয়ারের একটি অফিসে যাই, কাজ শেষে সকাল ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিলে ফিরে আসি। বাংলাদেশ ব্যাংক জালালাবাদ কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে আজ সকালে পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক রণজিৎ কুমার রায় কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।‌ অফিসে না থাকায় আমি অনুষ্ঠানে থাকতে পারিনি। বিকালে সহকর্মী মোঃ সাইফুল আলম ও বীরেন্দ্র চন্দ্র দাসকে নিয়ে লেভেল ১২ বিআরপিডিতে যাই।‌ পদোন্নতির মিষ্টি খেলেও এডি-২০০৩ ব্যাচের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকায় দেখা করা হয় নি। আজ সন্ধ্যায় ডরমিটরির আমার ৪০৩ নম্বর কক্ষে ডরমিটরির বাসিন্দা পরিচালক মামুনুর রহমান (৪০২ নম্বর কক্ষ), মোঃ ফজলার রহমান (৪১০) ও অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আব্দুল আহাদ (২১০) আসলে তাঁদের রুমে থাকা পাকা পেঁপে, খেজুর, শসা দিয়ে আপ্যায়ন করি। তাৎক্ষণিকভাবে আজ রাতে মতিঝিলে রেস্টুরেন্টে খাবার সিদ্ধান্তের কথা জানান মোঃ ফজলার রহমান, রোকেয়া খালাকে ডরমিটরির মিল বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়। বান্দরবান ও কক্সবাজার থেকে পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে এসে কিছুটা অসুস্থ নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন স্যারকে দেখতে আজ সন্ধ্যায় তাঁর ডরমিটরির ৩০৬ নম্বর কক্ষে যাই। রোকেয়া খালাকে দিয়ে কাটিয়ে স্যারের জন্য পাকা পেঁপে নিয়ে যাই, তিনি পেঁপে পছন্দ করেন। অনেকক্ষণ বসে আলোচনা করি, স্যার বললেন ভ্রমণ আনন্দের হলেও রয়েছে সমুহ ঝুঁকি, তিনি নিজেও অল্পের জন্য বড় দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। চারদিনের ভ্রমনে তিনি অনেকটা পরিশ্রান্ত। এশার নামাজ আদায় করে আমরা (মামুনুর রহমান, মোঃ ফজলার রহমান, মোঃ ইকবাল হাসান, মোঃ আব্দুল আহাদ ও আমি) মতিঝিলের হীরাঝিল রেস্টুরেন্টে যাই। বাংলাদেশ ব্যাংক সদরঘাট অফিসের পরিচালক (অফিস প্রধান) মোঃ ফজলার রহমান আজকের নৈশভোজ ডরমিটরির ফ্লোরমেট বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ইন্টারনাল অডিট ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মামুনুর রহমান এর সম্মানে আয়োজন করেন।
২২ এপ্রিল ২০২৫ অফিস শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে ৩০ তলা ভবনের নিচে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্লাব ঢাকার সভাপতি মোঃ জহুরুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক সুলেখক গোলাম বহলুল, মোঃ আব্দুল ওয়াহাব এর সাথে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আড্ডা আলোচনা হয়। ফেরার পথে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক রনজিৎ কুমার রায় এর সাথে দেখা হলে অভিনন্দন জানাই। আজ দিনে দুবার কথা হয় সিলেট অফিসের পরিচালক কালিপদ রায়ের সাথে, তাঁকে আজ পরিদর্শন বিভাগের দায়িত্ব দিয়ে পোর্টফোলিওর অর্ডার আপলোড হয়েছে। ২৪ এপ্রিল ২০২৫ কর্মদিবস শেষে তিনি অবসরে চলে যাবেন। ১৯৯৬ সালে একইদিনে আমরা অফিসার পদে পদোন্নতি পেয়েছিলাম। সিলেটে আজ কয়েক দফা বৃষ্টি হয়ে বাংলাদেশ – জিম্বাবুয়ে টেষ্ট খেলা বিঘ্নিত হয়েছে, ঢাকায় প্রচন্ড রোদ ছিল। আজ রাতে আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক ডরমিটরিতে ঢাকা কোঅপারেটিভ এর সম্পাদক মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন ও সহ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান তানিন আসেন। তাঁরা পরিচালক সাব্বিরুল আলম চৌধুরী, মোঃ ফজলার রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ইকবাল হাসান ও আমার রুমে বসেন, কথা বলেন।
২৩ এপ্রিল ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-২ এর পদোন্নতি পাওয়া তিনজন কর্মকর্তা (পরিচালক মোঃ ছাইফুল ইসলাম ও মোঃ আব্দুল জলিল -৯ এবং অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম কিবরিয়া মোল্লা) বিভাগের সকলকে (৭০ জন) মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়ন করান। মতিঝিলের রূপচাঁদা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনা হয়। বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, ইএমডি -২ এর পূর্বতন চারজন পরিচালক মোঃ রজব আলী নির্বাহী পরিচালক (পিআরএল), মোঃ রফিকুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক, কে,এম ইব্রাহিম ও‌ মোঃ দেওয়ান সিরাজ আজকের মধ্যাহ্ন ভোজের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মধ্যাহ্ন ভোজের পর অতিথিদের পরিচালক মোঃ ছাইফুল ইসলাম এর কক্ষে চা পান করেন। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম কে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ উপহার তুলে দেন এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-২ এর পরিচালক মোঃ ছাইফুল ইসলাম।
আজ রাতে ঢাকার পুরানা পল্টনের পুস্পদাম কনভেনশন সেন্টারে মতিঝিল চুরাশিয়ান বন্ধুদের আয়োজনে সম্বর্ধনা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নেই। এসএসসি চুরাশিয়ান বন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মকবুল হোসেন, পরিচালক মোঃ নুরুল আলম, মোস্তফা আজাদ কামাল, আনোয়ার হোসেন মুন্না, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রূবানা পারভীনসহ ব্যাংক বীমায় কর্মরত বেশ কয়েকজন বন্ধুর পদোন্নতিতে সম্বর্ধনা দেয়া হয়। সারোয়ার হোসেন ও রেবেকা ইয়াসমিন এর সঞ্চালনায় নতুন বন্ধুদের পরিচয় পর্ব, পদোন্নতি প্রাপ্তদের অনুভূতি, তিন চুরাশিয়ান বন্ধুর (উত্তম, সৈয়দ মেহেদী ও ) সঙ্গীতের মূর্ছনায় রাত সাড়ে ১০টায় ভাঙ্গে মিলনমেলা। শুরুতে চা- নাস্তা ও শেষ হয় ডিনার দিয়ে।‌ সারাদিন কর্মব্যস্ত থেকেও ৬০ জনের অধিক চুরাশিয়ান বন্ধু অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ৮০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ৭৭জন বন্ধু। মতিঝিল চুরাশিয়ান প্ল্যাটফর্মের এটা ছিল প্রথম বড় আয়োজন। করোনাকালে (২০২০) ভার্চুয়ালি জাতীয়ভাবে এসএসসি চুরাশিয়ান ( SSC 1984 Bangladesh) প্ল্যাটফর্ম গঠনের আলোচনা শুরু হয় এবং ৩ এপ্রিল ২০২০ এটি সর্বপ্রথম শুরু হয়, বর্তমানে সদস্যসংখ্যা ১২ হাজার।
২৩ এপ্রিল ২০২৫ মতিঝিল চুরাশিয়ানের সংবর্ধনা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বন্ধু আলী আহসান দিপু, মাহমুদুল হাছান চৌধুরী, হিরন্ময় দে শিবু, রাসেদ ভূঁইয়া, সারোয়ার হোসেন, মোঃ আবু হানিফ, মোঃ রেদোয়ানুল হক, মোঃ রুহুল আমিন আকন্দ, আব্দুল হাকিম, আবু তাহের, রাধা রমন সাহা, এএমএম নুর উদ্দিন, মোঃ ইকবাল হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ আলী রানা, মোঃ আবু নাছের, মোঃ অহিদুর রহমান, মোঃ শফিকুর রহমান, মোঃ আবদুল বারেক, দীলিপ কুমার দাস, কাজী সালাহউদ্দিন আহম্মদ, মোঃ ফরহাদুল ইসলাম ভূঞা (ইকবাল), শেখ নাসরিন সুলতানা লেখা, মোঃ আমিনুল হক ভূইয়া, মোহাম্মদ হাছান, একরাম পলাশ, মোঃ আক্তারুজ্জামান (জামান), মোঃ মহিদুর রহমান, মোঃ মসিউর রহমান, মোঃ হাসিবুল হাসান, ফিরোজ আলম চৌধুরী, সৈয়দ মেহেদী, এম,এ মান্নান, মোঃ আমির হোসেন, মোঃ সামসুল আলম (স্বপন), মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ শরীফ মিজানুর রহমান, মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম, রূবানা পারভীন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মোঃ ফজলুল কাদের (অব:), মোঃ মকবুল হোসেন, মোঃ নুরুল আলম, মোস্তফা আজাদ কামাল, মোঃ জাবেদ আহমদ, কাজী নুরুল আলম, মোঃ ইকবাল হাসান, আনোয়ার হোসেন মুন্না, আবুল বাসার পাটওয়ারী, মহসীন কামাল, প্রফেসর ডাঃ মোঃ আব্দুল মান্নান, মোঃ খালেকুজ্জামান, বিষ্ণুপদ মল্লিক, মোহাম্মদ হোসেন, মোঃ আক্তারুজ্জামান, মোঃ নাজমুল হুদা, মোঃ আব্দুস সাত্তার, মোঃ আবুল হোসাইন সাজু, মোঃ জাহিদ হাসান, প্রকৌশলী শিবুলাল খাসকেল, সুব্রত সমাদ্দার, গৌরাঙ্গ মিত্র, রেবেকা ইয়াসমিন, প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আজ (২৫ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার) বিকালবেলা (বাদ আসর) বাংলাদেশ ব্যাংক সদরঘাট অফিসের পরিচালক (অফিস প্রধান) মোঃ ফজলার রহমান স্যারের সাথে আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক নিবাস থেকে হাঁটতে হাঁটতে রেললাইন পাড়ি দিয়ে মুগদা মান্ডা হয়ে গ্রীণ মডেল টাউন চলে যাই। চলতি পথে মুগদা পাড়া সেন্ট্রাল মসজিদ (বড় মসজিদ), মেঘু বেপারী জামে মসজিদ, মান্ডা ছাতা মসজিদ, বিপিডিবি অফিসার্স কোয়ার্টার, হায়দার আলী স্কুল এন্ড কলেজ, উচ্চতর গবেষণাধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা বাহারুল উলুম,ঢাকা, গ্রীণ মডেল আইডিয়াল স্কুলসহ কতকিছু দেখা হলো। মুগদা পাড়ার প্রধান সড়ক প্রশস্তকরনের কাজ ধীরগতিতে চলছে। ফিরতি পথে রিকশায় চড়ে মুগদাপাড়া মদিনা জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করি। নামাজ শেষে আবার শুরু হয় হাঁটা। গলিপথ পেরিয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল দিয়ে বিশ্বরোডে বের হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে ওভারব্রিজ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি হয়ে মতিঝিল হীরাঝিল রেস্টুরেন্টে ফজলার রহমান স্যারের সৌজন্যে সান্ধ্যকালীন চা নাস্তা করি। রাত আটটায় অফিসার্স ডরমিটরিতে পৌঁছে এশার নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিকালের হাঁটার পর চা নাস্তা ছুটির দিনে ঢাকায় থাকার একগুঁয়েমি অনেকটা দূর করে।
আজ (২৬ এপ্রিল ২০২৫) সকাল সাড়ে ছয়টায় ৮ নম্বর বাসে মতিঝিল থেকে শাহবাগের উদ্দেশ্যে ওঠা, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সীটে বসা, সাথে রয়েছেন সহকর্মী বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মোঃ ফজলার রহমান। প্রায়ই আমরা এ বাস চড়ে রমনা পার্কে যাওয়া আসা করি। আজ আমাদের গন্তব্য ধানমন্ডি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, সেখান থেকে ধানমন্ডি লেক। ডায়াগনস্টিকের ফি দেয়ার জন্য প্যান্টের গোপন পকেটে টাকা থাকায় আজ কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করে মাঝে মধ্যে টাকার উপস্থিতি নিশ্চিত হচ্ছি‌। শাহবাগ নামার প্রস্তুতি নিতে সীট থেকে দাঁড়াবার সময় ব্যাগ হাতে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি আমার সীটে বসেই ব্যাগকে আড়াল করে আমার গোপন পকেট কেটে ফেলে, ঘটনা ঘটে সেকেন্ডের ব্যবধানে, আল
সৌভাগ্যক্রমে মৃদু অনুভূতি টের পেয়ে আমি দ্রুততার সাথে পকেটে হাত দিলে শেষ মুহূর্তে তিনার অপারেশন ব্যর্থ হয়ে যায়। আল্লাহপাক রক্ষা করেছেন, দেখতে পাই টাকা ঠিক আছে, পকেটের দুই লেয়ার এবং নোট দুটি কেটে গেছে, কাঁটার গতি আর অল্প বাড়লে শরীরে লেগে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত। আমি ব্যাগওয়ালা ডেভিলের দিকে তাকালে সে দ্রুত জ্যামে আটকা গাড়ি থেকে নেমে যায়। শাহবাগ নেমে আমরা পদব্রজে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাই। সেখানে পরীক্ষার কাজ শেষ করে আমরা ধানমন্ডি লেকে হাঁটাচলা করি‌। আজ আমরা ধানমন্ডি পুরাতন ৩২ নম্বর সড়ক দিয়ে হাঁটার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি দেখা হয়।‌ আজ সারাদেশের মত ঢাকার আবহাওয়াও (৩৬ ডিগ্রী) উত্তপ্ত ছিল। ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থাকায় ঢাকার সড়কে প্রচন্ড যানজট ছিল।
আজ জোহরের নামাজ পড়ি মতিঝিল সোনালী ব্যাংক পিএলসির স্টাফ কোয়ার্টার জামে মসজিদে। নামাজ শেষে ব্যাংকের কর্মী ও নিবাসের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল মফিজের জানাজা ছিল। মরদেহ দেরিতে আসায় পরে জানাজা হয় কলোনি চত্বরে দুপুর সোয়া ২টায়। মাইকে শুনে আমাদের পাশ্ববর্তী কলোনিতে গিয়ে জানাজায় অংশ নেই। জানাজা শেষে মফিজকে দাফনের জন্য নোয়াখালীর সেনবাগে পৈত্রিক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
আজ (২৬ এপ্রিল ২০২৫) বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ফজলার রহমান স্যারের সৌজন্যে গোপীবাগ খাজা হালিমে নান আর হালিম খেয়ে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটার নতুন কনসেপ্ট আগে খাও পরে হাটো। সিলেটে আশক আলী ফিটনেস ক্লাবের মূলমন্ত্র হাঁটার বিনিময়ে খাদ্য (হাবিখা)।‌ হাঁটা শেষ করে খাওয়া দাওয়া। আজ আরকে মিশন রোড বাংলাদেশ ব্যাংক নিবাস থেকে মানিকনগর হয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে আবার একই রাস্তায় ফিরে আসি।‌ উত্তরবঙ্গের রংপুরের কৃতি সন্তান ফজলার রহমান আজ প্রথম সায়েদাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখলেন। নানান গন্তব্যের বাসে ঠাসা রয়েছে পুরো টার্মিনাল।
আজ ২৮ এপ্রিল ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পদে জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন ও অতিরিক্ত পরিচালক পদে জনাব জি,এম ছফেদ আলী পদোন্নতি পেয়েছেন। ২৯ এপ্রিল ২০২৫ সকালে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ওয়ারীর লারমিনি স্ট্রিট ও বলধা গার্ডেনে সকালবেলা এক ঘন্টার‌ আনন্দের হাঁটাচলা হলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আমির উদ্দিন, পরিচালক মোঃ নুরুল আলম, অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আব্দুল মতিন মোল্লা, মোঃ জিয়াউল হায়দার ও আমি ছিলাম আজকের বহরে, সকালবেলার হাঁটার মজাই আলাদা। আজ দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-২ এর একটি পলিসি সংক্রান্ত বিষয়ে ডেপুটি গভর্নর -১ নুরুন নাহার ম্যাডামের সাথে নির্বাহী পরিচালক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, পরিচালক মোঃ ছাইফুল ইসলাম ও যুগ্ম পরিচালক এনামুল ইসলামসহ দেখা করি। আমাদের সাক্ষাৎ ফলপ্রসূ হয়, ম্যাডাম সুন্দর দিক নির্দেশনা দেন। একদিনের ছুটিতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসে আজ (৩০ এপ্রিল ২০২৫) দুপুরে পরিচালক জনাব মোঃ আবুল হাশেম, পরিচালক জনাব মোঃ শাহজাহান মজুমদার, পরিচালক (পিআরএল) জনাব শামীমা নার্গিস, পরিচালক (পরিসংখ্যান/অব:) জনাব বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস ও অতিরিক্ত পরিচালক (অব:) জনাব মোঃ মতিউর রহমান সরকার এর সাথে দেখা হয়, আলোচনা শেষে তাঁদের হাতে আমার দ্বিতীয় বই ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’ উপহার দেই। জোহরের নামাজ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাঙ্গণ মসজিদে আদায় করি। নামাজ শেষে আমার অনুরোধে ঢাকা কোঅপারেটিভ এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম জনাব গাজী সাইফুর রহমান এর সুস্থতা কামনা করে মোনাজাত করেন ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ আবুল কাশিম। সিলেট অফিসে আজ ১১জন কর্মকর্তা (ইডি টু জেডি) তাঁদের পদোন্নতি উপলক্ষে কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্যাকেট লাঞ্চ করান।
মিশিগান যাচ্ছে আমার দুটো বই ‘ইউরোপের সাত দেশে বাইশ দিন’ ও ‘চব্বিশের ঢাকার ডায়েরি’।
আমার ছোট মামা মরহুম মোঃ আব্দুল মালিক চৌধুরীর ছোট ছেলে মামাতো ভাই জমিরুল মালিক চৌধুরী (টিটু) Malik Chowdhury James আজ বিকালে আমাদের বাসায় এসেছিল। সে কয়েক সপ্তাহের জন্য দেশে বেড়াতে এসে স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। আমি সিলেট এসেছি শুনে সে দ্রুত চলে আসে, কাল দুপুরে আবার আসবে। তাকে ও তার কাছে মিশিগানে থাকা আম্বরখানা সরকারী কলোনী(Amber Khana Govt. Staff Quarter, Sylhet) প্রিয় দুই বন্ধু সাইক্লোন সিলেট এর প্রাক্তন সভাপতি রম্য লেখক Haran Kanti Sen ও মোহামেডান ফ‌্যান ক্লাব এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক Faiz Chowdhury এর জন্য দুটি বই দেই। চা নাস্তার পর সন্ধ্যার আগে সে আমার সহধর্মিণী নুরজাহান পারভীন চৌধুরীর শখের ছাদবাগান ঘুরে দেখে।

শেয়ার করুন