লাইলাতুল ক্বদর–রহমত বৃষ্টির বর্ষণমুখর রাত্রী

মুহিউল ইসলাম মাহিম চৌধুরী

মহাগ্রন্থ আল কোরআন মাজিদ এবং হাদীসে রাসূলে যে রাতটির কথা সর্বোচ্ছ গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়েছে সে রাতের নাম হলো লাইলাতুল ক্বদর । এই গৌরবদীপ্ত  রজনিইই সর্বপ্রথম প্রত্যক্ষ করেছিলো মানবতার মুক্তির আখেরী সিলেবাস ”আল কিতাব”তথা কুরআনুল কারীম।।

নবী  করিম (স.)বলেছেন,যখন শবে ক্বদর উপস্থিত হয় তখন আল্লাহর আদেশে ছয়শত ডানাধারী রুহুল ক্বুদস ফেরেশ্তা (জিব্রাঈল আ.) এর সাথে সবুজ নিশানধারী একদল ফেরেশ্তা পৃথিবীতে আবির্ভূত হন এবং সবুজ নিশান কা’বা ঘরের উপরে প্রোথিত করেন। হযরত জিব্রাঈল (আ.) তাঁর ডানা পৃথবীর মাশরিক থেকে মাগরীব পর্যন্ত (পূর্ব-পশ্চিম) প্রসারিত করেন। অতঃপর তাঁরই উৎসাহে ঐ রাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থায় সালাতরত আবিদগণের সাথে মুসাফাহা করেন এবং মোনাজাতরতদের দোয়ার সাথে আ-মীন আ-মীন বলতে থাকেন। 

মাক্কাতুল মুকাররামায় নাজিলকৃত পাঁচ আয়াত বিশিষ্ট সূরা আল-ক্বদরকে আল্লাহ পাক পবিত্র এই রাত্রির আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্টত্বের ব্যাখ্যা দিতেই অবতীর্ণ করেছেন। 

‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণাগুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য,রাজকীয়,বিধান ইত্যাদি।

কোরআনুল কারীমের ভাষা অনুযায়ী রাতটির নাম হলো ”লাইলাতুল ক্বদর”। লাইলাতুল কদর হলো সম্মানিত রাত,বিধান দেওয়ার রাত অথবা রাজকীয় রাত। এই রাতটি মুসলমানদের জন্য ভাগ্য রজনী হিসেবে সম্মানিত। 

লাইলাতুল ক্বদরের গুরুত্ব–আর এ রাতের গুনাগুন যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে সারা বছরের মধ্যে শ্রেষ্ট রাত।

পবিত্র কুরআনুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই রাতকে হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ উত্তম ও মহা সম্মানিত রাত হিসেবে আমাদের জন্য দান করেছেন। প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ দশকের রাতগুলোর মধ্যে কোনো এক বিজোড় রাত হলো ভাগ্য নির্ধারণ বা লাইলাতুল কদরের রাত। 

যে রাতে পবিত্র  কুরআন নাজিল হয়েছে, সে রাতই লাইলাতুল কদর। আল্লাহতায়ালা বলেন: ‘নিশ্চয়ই আমি  কুরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামকে সমভিব্যহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে উষা বা ফজর পর্যন্ত। (আল কুরআন, সুরা-৯৭ আল কদর)   

রমজান মাস পবিত্র কুরআন নাযিলের মাস। শবে কদর কুরআন নাযিলের রাত। এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে রাহমতুল্লিল আলামিন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল  কুরআন নাযিল করেন। 

এ কারণে আল্লাহ তায়ালা এ রাতের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ রাতে মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদিকে হাজার মাসের ইবাদত-বন্দেগি ও আমলের সমান সাওয়াব দান করেন। কুরআনুল কারিমের অন্য স্থানে এ রাতটিকে বরকতময় রাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

আল্লাহ পবিত্র  কুরআনে বলেন,

আদ-দুখান, আয়াত: ৩

اِنَّاۤ اَنْزَلْنٰهُ فِیْ لَیْلَةٍ مُّبٰرَكَةٍ اِنَّا كُنَّا مُنْذِرِیْنَ

আমি এটি এক বরকত ও কল্যাণময় রাতে নাযিল করেছি। কারণ, আমি মানুষকে সতর্ক করতে চেয়েছিলাম।

 আদ-দুখান, আয়াত: ৪

فِیْهَا یُفْرَقُ كُلُّ اَمْرٍ حَكِیْمٍۙ 

এটা ছিল সেই রাত যে রাতে প্রতিটি বিষয়ের বিজ্ঞোচিত ফায়সালা দেয়া হয়ে থাকে।

নবি (স.) বলেন,যদি কেউ সালাত পড়ে ক্বদরের রাতে ঈমানের সাথে আল্লাহর পুরস্কার লাভের আশায় তাহলে আল্লাহ তার অতীতের সমস্থ গুনাহ মাফ করে দেবেন।।

কুরআন নাযিলের কারণে মর্যাদার এ রাতের কথা উল্লেখ করার পর যে মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে সে মাসের কথাও আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে উল্লেখ করেছেন এভাবে-

২  আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ১৮৫

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَ الْفُرْقَانِ ۚ 

আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘রমজান মাস! এমন একটি মাস যে মাসে  কোরআন নাযিল হয়েছে মানবের মুক্তির দিশারি ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনরূপে। ’ (সুরা-২ আল বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।

সুতরাং লাইলাতুল ক্বদরের রাতে আল্লাহর ওইসব বান্দারা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন, যাদের সঙ্গে  কুরআনের সম্পর্ক বেশি। যিনি কুরআন-সুন্নাহর আলোকেই নিজের জীবন পরিচালিত করবেন। বাস্তবজীবনে কোরআন-সুন্নাহর আমলে সাজাবেন জীবন। আর তারাই হবেন সফল।

রমজানের শেষ দশদিনের যেকোনো বেজোড় রাতে লাইলাতুলকদর তালাশ করা যায়, অর্থাৎ ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ রমজান দিবাগত রাতগুলো। তবে অনেক আলেমদের গবেষণা ও ব্যাখ্যায় এবং বুজুর্গানেদ্বীনের মতে ২৬ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ সাতাশ তারিখে পবিত্র শবে কদরের অন্যতম সম্ভাব্য রাত। 

লাইলাতুল কদরের মর্যাদা

লাইলাতুল কদরের মর্যাদা এত বেশি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতটি পাওয়ার জন্য শেষ দশকে আজীবন ইতেকাফ করেছেন। 

উম্মতে মুহাম্মদীর  উদ্দেশ্যে  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কদরের রাতের সন্ধানে (রমজানের) প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। তারপর আমার প্রতি ওহি নাযিল করে জানানো হলো যে, তা শেষ ১০ দিনে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে। তারপর মানুষ (সাহাবায়ে কেরাম) তার সঙ্গে ইতেকাফে শরিক হয়।’ (মুসলিম শরীফ)

কদর রাতের ফজিলত

মহাগ্রন্থ আল  কুরআন নাযিল হওয়ার কারণে অন্যসব মাসের চেয়ে রমজান মাস বেশি ফজিলত ও বরকতময় হয়েছে। আর রমজানের রাতগুলোর মধ্যে  কোরআন নাযিলের রাত লাইলাতুল ক্বদর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত একটি রাত। 

এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি একে নাযিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জান ক্বদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সূরা: কদর, আয়াত: ১-৩)।  

এ আয়াতের ব্যাখায় মুফাসসিরকুল শিরোমণি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘এ রাতের ইবাদত অন্য হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম’। (তানবিরুল মিকবাস মিন তাফসিরে ইবনে আব্বাসঃ ৬৫৪ পৃষ্ঠা)। 

তাবেয়ি মুজাহিদ (র.) বলেন, এর ভাবার্থ হলো, ‘এ রাতের ইবাদত, তেলাওয়াত, দরুদ কিয়াম ও অন্যান্য আমল হাজার মাস ইবাদতের চেয়েও উত্তম। ’ 

লাইলাতুল কদরে নবী (স.) এর আমল–

ক্বদরের রাতে তিনি সারারাত ইবাদাতে কাটিয়ে দিতেন এবং পরিবারের সদস্যদেরকে ঘুম থেকে জাগাতেন। 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শবে কদর পেতে কোমড়ে কাপড় বেঁধে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত হতেন। শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন। বিশেষ করে ৫টি আমল করতেন। কী সেই পাঁচ আমল?

বছরের অন্য কোনো সময়ে সারা রাত জেগে ইবাদত করার নজির রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে ছিল না। কিন্তু নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কদরের রাতে সারা রাত জেগে ইবাদত বন্দেগি করতেন। নিজে ঘুমোতেন না এবং পরিবারের লোকজনদের জাগিয়ে দিতেন। তাদেরকেও ঘুমোতে দিতেন না। হাদিসে পাকে এসেছে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-

إذَا دَخَلَ الْعشْرُأحيا اللَّيْل،َ وأيقظ أهْله،

‘রমজানের শেষ দশক যখন আসতো তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন। নিজ পরিবারকে জাগাতেন। (ইবাদতে) খুবই চেষ্টা করতেন এবং (এর জন্য) তিনি কোমর বেঁধে নিতেন।’ (বুখারি ২০২৪, মুসলিম ১১৭৪, তিরমিজি ৭৯৬, নাসাঈ ১৬৩৯, আবু দাউদ ১৩৭৬, ইবনু মাজাহ ১৭৬৮, আহমাদ ২৩৬১১, ১২৩৮৫৬, ২৩৮৬৯)

♦ইতেকাফ করা

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশদিন ইতেকাফ করতেন। হাদিসে পাকে এসেছে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-

كَانَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ، حَتَّى تَوَفَّاهُ اللهُ تَعَالَى، ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ

রমজানের শেষ দশকে মহান আল্লাহ তাঁকে মৃত্যুদান করা পর্যন্ত ইতেকাফ করেছেন। তাঁর (তিরোধানের) পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতেকাফ করেছেন।’ (বুখারি ২০২৬, মুসলিম ১০৭২, তিরমিজি ৭৯০, আবু দাউদ ২৪৬২, মুসনাদে আহমাদ ২৩৬১১, ২৩৭১৩, ২৪০২৩, ২৪০৯২)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন-

يَعْتَكِفُ فِي كُلِّ رَمَضَانَ عَشْرَةَ أَيَّامٍ، فَلَمَّا كَانَ العَامُ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ يَوْماً

‘নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক রমজান মাসের (শেষ) দশদিন ইতেকাফ করতেন। তারপর যে বছরে তিনি মারা যান, সে বছরে বিশ দিন ইতেকাফ করেছিলেন।’ (বুখারি ২০৪৪, ৪৯৯৮, তিরমিজি ৭৯০, আবু দাউদ ২৪৬৬, ইবনু মাজাহ ১৭৬৯, মুসনাদে আহমাদ ৭৭২৬, ৮২৩০, ৮৪৪৮, ৮৯৫৯, দারেমি ১৭৭৯)

শেষ দশকের বাকি তিনদিন ইতেকাফ করার চেষ্টা করা যেতে পারে। ইতেকাফ না করলেও সারারাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ও তওবা-ইসতেগফার করার মাধ্যমে লাইলাতুল কদর পাওয়ার চেষ্টা করা।

♦কোরআন তেলাওয়াত করা

রমজানের বিশেষ একটি আমল এটি। এ শেষ দশকেই আল্লাহ তাআলা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি কোরআন নাজিল করেছিলেন। তাই রমজান মাস এলেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং জিবরিল আলাইহিস সালাম যৌথভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। একে অপরকে শোনাতেন। হাদিসে পাকে এসেছে, হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন-

…  وَكَانَ جِبْرِيلُ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ القُرْآنَ …

জিবরিল আলাইহিস সালাম রমজান মাসের প্রত্যেক রজনীতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁর কাছে কোরআন পুনরাবৃত্তি করতেন।…।’ (বুখারি ৬, ১৯০২, ৩২২০, ৩৪৫৪, ৪৯৯৭, মুসলিম ২৩০৮, নাসাঈ ২০৯৫, মুসনাদে আহমাদ ২৬১১, ৩৪১৫, ৩৪৫৯, ৩৫২৯)

সুতরাং শেষ দশকের রাতগুলো তথা কদরের রাতে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। কোরআন অধ্যয়ন করা। কিংবা কোরআনের হালাকায় যুক্ত হওয়া। এক কথায় কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করা।

♦ক্বিয়ামুল লাইল করা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেয়ামুল লাইল করতেন। তিনি কেয়ামুল লাইলকে কদরের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنْ قَامَ لَيْلَةَ القَدْرِ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

‘যে ব্যক্তি শবে কদরে (ভাগ্য-রজনী অথবা মহীয়সী রজনীতে) ঈমানসহ সওয়াবের আশায় কেয়াম করে (নামাজ পড়ে), তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিজি ৬৮৩, নাসাঈ ২১৯৮, ২২০৭, ৫০২৭, আবু দাউদ ৩১৭১, ১৩৭২, মুসনাদে আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমি ১৭৭৬)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেয়ামুল লাইলকে কদরের রাতের সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কযুক্ত করে দিয়েছেন। তাই রমজানের শেষ দশকে তথা কদরের রাতে কেয়ামুল লাইল তথা নামাজ পড়া। নামাজে দীর্ঘ সসয় দাঁড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করা। লম্বা রুকু ও সেজদা দেওয়া।

♦বেশি বেশি দোয়া করা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কদরের রাতে বেশি বেশি দোয়া করতেন। তাই আন্তরিকভাবে একনিষ্ঠতার সঙ্গে দোয়া করা। দোয়া হবে আবেগ-ভালোবাসা ও মনের মাধুরী মিশিয়ে। যেখানে কোনো লৌকিকতা থাকবে না। চোখের পানি ঝরিয়ে দোয়া করা। সুতরাং দোয়ায় শতভাগ ভাব-আবেগ উজাড় করে দেওয়া।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’

অর্থাৎ, হে আল্লাহ নিশ্চয় তুমি ক্ষমা করাকে পছন্দ করো তাই তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

লেখক-কলামিষ্ট,ধর্মীয় বিশ্লেষক ও ইসলামি চিন্তাবিদ

শেয়ার করুন