এক মায়াময় যাদুঘরের কিছু অনুভুতি

তাসলিমা খানম বীথি :

যাদুঘরে দেখা হতেই বললেন বীথি তোমার সাতাশ কিলোমিটারের দাম্পত্য বইটি পুরোটা পড়া শেষ। সবচে বেশি ভালো লাগে শেষের দিকে। সেদিন ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের পরিচালক ডা. মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরী বাহার ভাই সাথে দেখা হতেই বই প্রেমিক পাঠকের মতই আমাকে অনুপ্রেরণা দিলেন। জানালেন, আমার লেখা তার খুব ভালো লাগে, লেখার প্রাণবন্ততা সহজ ভাষা তাকে মুগ্ধ করে। ডা. বাহার ভাইয়ের মত একজন বিনয়ী গুণী মানুষ আমার মত একজন সামান্য লেখককে এতটা উৎসাহিত করবেন প্রত্যাশা করিনি।

যাই হোক, তিনি হেসে বললেন, বীথি কেমুসাসে এতটা কাছে থেকেও তোমাকে জাদুঘরে ভিজিট করাতে পারলাম না। এটি ব্যর্থতা তার। আমার ভীষণ মন খারাপ হচ্ছিলো। তিনি যখন যাদুঘর থেকে বের হন, তখন আমি কেমুসাসে প্রবেশ করি। প্রায় দেখা হয় গাড়ি থামিয়ে সাদা গ্লাস খুলে একচিলতে হাসি দিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করবেন। কেমুসাসে নিয়মিত আসা যাওয়া হলেও যাদুঘরে 4র্থ তলা যাওয়া হয় না। যেহেতু আমাদের সাহিত্য অনুষ্ঠানগুলো মাগরিব পরই শুরু হয়। বিকেল হতেই যাদুঘর বন্ধ হয়ে যায়। ডা. বাহার ভাইকে শান্তনা দিয়ে বলি আসলে ব্যস্ততার জন্য আসবো বলে যাদুঘর আসা হয় না।

তবে যে কেউ দেখলে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকবে। যাদু মতই যাদুঘরটি চমৎকার লাগছিলো। এত মায়া আর ভালোবাসা যত্ন করে গড়ে তুলেছেন ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দিন যাদুঘর। বিদায়বেলা তিনি বললেন, বাহার ভাই যখন থাকবে না তখন এই যাদুঘরটি কে দেখবে? আমি বলি আমি ও আমরা দেখবো, কেমুসাস দেখবে। তিনি আবার বললেন তারপর কে দেখবে? বুঝতে পারি তার হৃদয়ের সমস্ত আবেগ ভালোবাসা জড়িয়ে রয়েছে এই মায়াময় যাদুঘরটির প্রতি।

2. ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রাচীনতম জিনিসপত্র বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বিভিন্ন নির্দশনামুলক দৃশ্য রয়েছে জাদুঘরটিতে। আমাদের শহরে দরগা গেইট এতটা কাছে রয়েছে যারা এখনো যাননি একবার পরিবার ছোট সদস্যদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। বেলা 11টা থেকে 4টা এটি খোলা থাকে। প্রাচীনতম সমৃদ্ধশালী লোকচক্ষুর আড়ালে ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরটিকে যে মানুষটি হৃদয় সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন শ্রদ্ধেয় জাদুঘরের পরিচালক ডা. মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরী বাহার ভাই প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

শেয়ার করুন