জান্নাতুল বাকিতে আধঘন্টা

তাইসির মাহমুদ :

আসরের নামাজের পরপর জান্নাতুল বাকি’র গেইট খুলে দেয়া হলো। সাথে সাথে ঢল নামলো ভিজিটরদের। হাজারো মানুষের ভীড়ে আমিও হাঁটছি। গোরস্থানের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়েচলা পথ। ঠাসাঠাসি পথচলা। চারদিকে শুধু কবর। কোনো ওয়াল নেই । নাম নেই। সাইনবোর্ড নেই। শুধুমাত্র এক টুকরো পাথর দিয়ে কবরগুলো চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে।

জান্নাতুল বাকিতে দাঁড়িয়ে কবর জিয়ারতের কোনো সুযোগ নেই। হেঁটে চলার মধ্যদিয়েই কবরবাসীকে সালাম জানাতে হয়। রাস্তার দুই পাশে সরকারি নিরাপত্তাকর্মী। মানুষ যাতে শিরকী কাজে জড়িয়ে পড়তে না পারে, তাই কঠোরতা।

আরব শৃঙ্খলাকর্মীরা একটি বাংলা শব্দ ভালো ভাবেই রপ্ত করেছে। “ইয়াল্লা ভাইছাব, ইয়াল্লা ভাইছাব”। এর মানে যা বুঝলাম, ভাইছাব সরে যান বা এগিয়ে যান। আমাদেরকেও ইয়াল্লা ভাইছাব বলতে বলতে এক রাস্তায় ঢুকিয়ে অন্য রাস্তায় বের করে দিলো।

জনশ্রুতি আছে, জান্নাতুল বাকিতে শায়িত আছেন কমপক্ষে ১০ হাজার সাহাবী। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমান (রাঃ) সহ অনেক বড় বড় সাহাবীর কবর রয়েছে এই গোরস্থানে। কিন্ত কোথায় কার কবর কেউ জানেনা।

আমরা এক রাস্তায় জান্নাতুল বাকিতে প্রবেশ করলাম। কবরবাসীর প্রতি সালাম জানালাম।

আধঘন্টা সময়ে হেঁটে হেঁটে বেরিয়ে এলাম।

কবর মৃত্যর পর প্রথম স্টেশন। একটি অজানা ঘর। কেমন হবে সেই ঘরের প্রথম রাত্রি। কোথায় মরবো। কোথায় কবর হবে?

জান্নাতুল বাকির মতোই আমাদেরও কবরের কোনো নাম থাকবে না। এই পৃথিবীতে যে একজন মানুষ ছিলাম সেটা কেউ জানবেনা। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ভুলে যাবে স্বজন বন্ধু বান্ধবরা। কেউ মনে রাখবেনা। একসময় মনে রাখার মতো কেউ বেঁচে থাকবেনা।

শেয়ার করুন