প্রতিবেশীর প্রতি আম্মার ভালোবাসা

তাসলিমা খানম বীথি :

ঘুম থেকে ওঠে দেখি আম্মা ঘরে নেই। আমিনাকে জিজ্ঞাসা করতেই বলল-আলম ভাইয়ের বাসা গেছে। তার স্ত্রীর ডেলিভারি পেইন ওঠছে। ভাই আসতে আম্মা ছুটলেন। এমনটা নতুন কিছু না। প্রতিবেশিদের যে কোন প্রয়োজনে আম্মা তাদের পাশে আর তারাও আম্মাকে মায়ের মতই মনে করে। প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না আসলে পর আর আপন কে।

যাই হোক, দুপুরে আম্মা বাসা আসলে জানতে পারি এখনো বাচ্চা হয়নি। তবে পেইন আছে, হয়ে যাবে। গোসল নামাজ খাওয়া শেষে আম্মা কল দিয়ে খোঁজ নেন। আম্মার অস্থিরতা বাড়তে আবার ছুটলেন হসপিটালে দিকে। আমাদের প্রতিবেশী আলম ভাই পরিবার সবাই গ্রামের বাড়িতে থাকে। সিলেটে শুধু স্বামী স্ত্রী। ডেলিভারি সময় সাধারনত মেয়ের মায়েরা পাশে থাকলে সাহস পায়। কিন্তু আলম ভাই স্ত্রী কথা তার মা চাইতে আম্মা পাশে থাকলে বেশি সাহস পায়। তার স্ত্রী কথা আম্মা পাশে থাকলে হবে। এটা আসলে অনেক বড় আস্থা জায়গা। মানুষের কল্যাণে যে কোন কাজে সহযোগিতা করতে পারলে আম্মা আব্বা যেমনটা খুশি হয় তেমনি আমরা তিন বোনেরা এমন শিক্ষাই পেয়েছি। আমরা চেষ্টা করি মানুষ হিসেবে সে যেই হোক পরিবার আত্মীয় কিংবা পরিচিত অপরিচিত মানুষের কল্যাণে ভালো কাজে এগিয়ে আসতে আমাদের কাছে সবচে আনন্দের।

2. রাত তখন 10.26 মি সারাদিন অপেক্ষার শেষে আলম ভাইয়ের পুত্র সন্তানের বাবা হন। ভাই নিজেই কল দিয়ে আমাদেরকে জানায় তখন আনন্দ স্বস্তি নিঃশ্বাস পাই। কিছুদিন পর আলম ভাই কল করে তার ছেলে আকিকা। আমাদের ঘরের সবাই দাওয়াত আর আম্মা যেনো আগেই চলে যায়।

3.সেদিন আমাদের পাড়ার বড় বাড়ী চাচা অসুস্থ, আরেক প্রতিবেশী চাচীও অসুস্থ। শুনে আম্মা আর আমিনা ছুটে যায় তাদেরকে দেখতে। আমরা যখন বাসা খুঁজে পাচ্ছি না তখনও পুরাতন পাড়ায় থাকার জন্য প্রতিবেশীরা সবাই মিলে বাসা খুঁজতে থাকে। প্রতিবেশীদের ভালোবাসা দেখে প্রায় মনে হয় তারাও যেনো আত্মার আত্মীয়। প্রতিবেশীর প্রতি এমন ভালোবাসা আজীবন চলতে থাকুক।

শেয়ার করুন