তাসলিমা খানম বীথি
তখন শহীদ মিনারে বইমেলা চলছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই লেখকরা জড়ো হতে থাকেন। আমিও ছুটলাম বইমেলা। কেমুসাস কিংবা সিলেট শহীদ মিনার যেখানেই বইমেলা হোক লেখকরা না গেলে যেনো বইমেলা জমেই না। বইমেলা মধ্যমনি হলো লেখক আড্ডা। যাই হোক, বইমেলা ঢুকেই কবি খালেদ উদ- দীন সাথে দেখা। কথা বলার ফাঁকেই এক জুনিয়র ছোট ভাই এসে বলছে-আপু বুনন স্টলে ডিউটি সুযোগ করে দিলে তার খুব উপকার হতো। তাকে বলি খালেদ ভাইকে বলে তোমাকে জানাবো। তার সাথে যখন কথা বলছি খালেদ ভাই দেখেছেন। তরুণটি চলে যেতে আমাকে বললেন বীথি আসলে বই বিক্রি অবস্থা তেমন ভালো না। তাই এখন কাউকে নিবো না। তাছাড়া আমি কাউকে সরাসরি না করতে পারি না, কষ্ট লাগে। সেই জুনিয়র ছোট ভাই নাকি এর আগে তার সাথে কথা বলেছে। তিনি পরে জানাবেন তাই সে অপেক্ষা ছিলো। আমাকে পেয়ে ভাবছে হয়তো খালেদ ভাইকে বলে দিলে কাজ হবে। তখন বুঝতে পারলাম খালেদ ভাই মানুষকে কষ্ট দিতে পারেন না। কারো মুখের উপরে সরাসরি না বললে যে সেই মানুষটি কষ্ট পাবে এটি তিনি অনুভব করেন। আমাকে বললেন তাকে যেনো বুঝিয়ে বলি।
2.কিছুদিন আগে সাহিত্য ডট কম সাহিত্য কর্মশালা কবি খালেদ উদ- দীন প্রশিক্ষক হিসেবে সাহিত্য বিষয় একটানা লেকচার দিয়ে যাচ্ছেন। আমি শুনতে শুনতে অবাক হই। খালেদ ভাই একজন সহজ সরল ভালো মানুষটি সাহিত্য ভান্ডার। সেখান থেকে তার একটি কবিতা বই “জলপাতালে মিঠে রোদ” বাসা নিয়ে আসি। হাতে কাছে সবসময় বই রাখি যাতে পড়তে পারি। কবিতাগুলো এক নিশ্বাসে ঝটপট পড়ে হৃদয়ে গেঁথে যাবার মতই
”টানাপড়েন”
শহরে মধ্যবিত্তে হৃদয় জমা রাখা নিরাপদ নয়
এখানে নিত্য রঙ বদলায়,বাহারি রঙের ভিড়ে।
উপাসনালয়ে ঝুকছে তরুণ, ভেতরে পুড়ে যাচ্ছে
সুপারম্যানের স্বপ্নে বিভোর নিরাপদ আগামী।
জ্ঞাত সত্যে পানকৌড়ি উড়ে যায় দিগন্তে তার…।
”অজানা আতষ্ক”
প্রায়ই হঠাৎ চমকে উঠি, অজানা আতষ্কে
ভেতরে ভেতরে ফুলে ফেপে ওঠা বুদবুদে
ফেলে আসা সময়ের প্রতিধ্বনি-
অবিকল মুষলধারে বৃষ্টির মতো ঝড়ে…
তুমি আড়ালে থেকেও কেমন যেন মুখোমুখি হও।
জলপাতালে মিঠে রোদ কবিতার গ্রন্থে এই দুটি কবিতা আমাকে সবচে বেশি আপ্লুত করেছে। বইয়ের প্রথম কবিতাটি আমাদের মত মধ্যবিত্তদের টানাপোড়নের জীবনে স্বপ্নের কথা। জীবনের রঙ বদলে যাবে টানাপোড়নে তবুও স্বপ্ন দেখা শেষ হবে না। কবি যেনো আমাদের কথা বলে গেলেন তার কবিতা ভাষা।
কবি খারেদ উদ-দীন -জলপাতালে মিঠে রোদ গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাপসী চক্রবর্তী যিনি স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছেন এবং শিউল মনজুর যিনি কবি, কবি এবং কবি। তৌহিদ হাসানের চমৎকার প্রচ্ছদে বইটি বের হয়েছে চৈতন্য প্রকাশনী থেকে একুশে বইমেলায়।
সবশেষে প্রিয় কবি খালেদ উদ-দীন এর প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। কবিতাময় সুন্দর হোক আগামী পথচলা। শুভ কামনা।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল
সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
মোবাইলঃ ০১৭৩০১২২০৫১
sylhetexpress.net