নৈতিকতা ও সমাজবিজ্ঞান : কিছু অনুভুতি

তাসলিমা খানম বীথি :
জীবন হলো একটি সফর। যে সফর যাত্রা দেখা হয় কথা হয় চেনা অচেনা অজানা কতশত মানুষের সাথে। কখনো অনলাইনে, কখনো অফলাইনে। সব মানুষ হয়তো মনে দাগ কাটে না কিছু মানুষ ব্যতিক্রম থাকে। যাদের চোখের সামনে না দেখলো দূর থেকে অনুভব করা যায়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আসে, জাগে সম্মান। আমার ছোট লেখক জীবনেও এরকম অনেক মানুষ রয়েছেন যাদের আমি কখনো দেখেনি কিংবা কথাও হয়নি। এমন কিছু পাঠক রয়েছে যারা আমার লেখালেখি ভিষণভাবে পছন্দ করে। ভালোবেসে অনুপ্রেরণা দেন। প্রথম গ্রন্থ সাতাশ কিলোমিটারের দাম্পত্য বের না করলে পাঠকের ভালোবাসা কখনোই অনুভব করতে পারতাম না। কাছে দূরে দেশে বিদেশে অনেকই আমার বইটি নিয়েছেন। তেমনি একজন লেখকের সাথে অনলাইনে পরিচয়। তিনি আমার লেখাকে পছন্দ করেন। যখন যা লিখি তিনি পড়বেন মতামতও জানাতেন। তিনি একটা সময় দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তখনো জানতাম না, তিনি লন্ডনের একটি হসপিটালে বেডে শুয়েও আমার লেখা পড়তেন। যখন আমার লেখা চোখে পড়তো না ইনবক্স ম্যাসেস দিতেন। জানতে চাইতেন আমার লেখা অনলাইনে নেই কেন? কুশলাদি জানতে চাইতেন। লেখালেখি যেনো চালিয়ে যাই সাহস আর প্রেরণা দিতেন। আমি তার কথা শুনে অবাক হতাম। সেই মানুষটি হলন, যুক্তরাজ্য প্রাক্তন ম্যাজিস্ট্রেট, কলেজ গভর্ণর ও লেকচারার, সমাজসেবক লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার। বয়সে অনেক প্রবীণ হলেও মনের দিক দিয়ে তিনি তরুণ। দেশ সমাজের মানুষের কল্যানে কাজের জন্য সবসময় তিনি তরুণদের উৎসাহিত করেন। নিয়মিত লিখছেন।

  1. লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার সিলেটের কৃতি সন্তান। তিনি প্রায় দেশে আসতেন। এখন অসুস্থতার জন্য তেমন আসতে না পারলেও প্রবাসে থেকে শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কাজ করছেন। তার সাথে কখনো দেখা হয়নি। আপজনদের মতই সুখেদুখে খোঁজ নেন। সেদিন হঠাৎ করে আমাকে বললেন, তার লেখাগুলো দিয়ে বই বের করবেন। পরামর্শ চাইলেন। ভালো প্রকাশনী হতে হবে তার বইটি জন্য। বলতেই দোঁআশ প্রকাশনীর কথা জানালাম। যেহেতু আমার নিজের বই বের হয়েছে। শুধু আমার বই না, যে কোন লেখকের বই জন্য আমি বিশ্বাস করি দোঁআশ সবচে বেস্ট। কারন প্রকাশনী কাজে তাদের আন্তরিকতা আর ভালোবাসা ছোঁয়া লেখকদের বইগুলো পাঠককে আকর্ষণ করে তোলে। আমার কথা শুনে লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার যুক্তরাজ্য থেকেই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করলেন এবং ফাইনেলী বইও বের করলেন। সেদিন যখন দোঁআশে গিয়েছিলাম গ্রন্থ-‘নৈতিকতা ও সমাজবিজ্ঞান” লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার বইটি বের হয়েছে। আমিও টেনশন মুক্ত হই। অবশেষে বইটি যুক্তরাজ্য যাবে। দোঁআশ থেকে বের হওয়ার সময় প্রিয় লুৎফুর ভাই বইটি তুলে দিলেন।
    3.অবসরে সময়টা কখনোই অপচয় করি না তাই সুযোগ পেলেই বই পড়া আর লেখালেখি সময় দেওয়া আমার সবচে পছন্দের কাজ। তাই হাতে সময় বের করেই নৈতিকতা ও সমাজবিজ্ঞান বইটি পড়তে বসি। এই বইটি যখন বাসা নিয়ে আসি। তখন আমার বোনজী ফারজানা আবেদীন দেখে উচ্ছাসিত হয়ে বলল-খালামনি তুমি এই বই কোথায় পেলে এটি তো আমার কলেজের সাবজেক্ট। হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করে।
  2. দেশ, সমাজ, মানুষ, মানবতা ও প্রকৃতি যে বিষয় আমাকে তাড়িত করে তাই লেখায় ফুটাতে চেষ্টা করি। লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার ঠিক এ বিষয় তিনি লিখেছেন যা বর্তমান তরুণদের জন্য বইটি আলো ছড়াবে। সামাজিক সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন উন্নত মানসিকতা। শিক্ষা, সম্পদ, ধর্ম, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি সমৃদ্ধ ছাড়া হৃদয় অর্থহীন হয়ে পড়ে। উন্নত মানসিকতা মানবিকতা দ্রুত সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে। একজন ব্যক্তি ওসি, ডিসি, প্রফেসর, শিক্ষক ও মাওলানা হওয়ার আগে তাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। প্রশস্ত দৃষ্টিভঙ্গি সভ্য সমাজের অপরিহার্য উপাদান, অহংকারী সমাজ, অসুখী সমাজের কথা লেখক চমৎকারভাবে লিখেছেন। ইসলামী দর্শনে কথাও বলেন, একজন মুসলমানের কর্তব্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য লড়াই করা এবং তাদের জন্য সহায়তা সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিতে তার লেখা ফুটে ওঠে।
  3. লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদার গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তার বাবা মরহুম মাস্টার মন্তশ্বর আলী ও মা সাজেদা খানমকে। বইয়ের সুন্দর প্রচ্ছদ করেছেন লুৎফুর রহমান তোফায়েল এবং প্রকাশ করেছেন দোঁআশ পাবলিকেশন। বইটি মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০টাকা।
    সবশেষে, যুক্তরাজ্য প্রাক্তন ম্যাজিস্ট্রেট, কলেজ গভর্ণর ও লেকচারার লেখক সুয়েব আহমেদ তালুকদারের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও শুভকামনা।
শেয়ার করুন