এখন টিভি’র যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুল আহাদ


সাংবাদিক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ঢাকা থেকে সম্প্রচারিত ‘এখন টিভি’র যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) থেকে তিনি অফিসিয়ালী এখন টিভি’র প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সিলেটের কুলাউড়া উপজেলার সন্তান ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টাইম টেলিভিশন-এর নিউজ এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিখ্যাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সাংবাদিকতার সাথে জরিত ছিলেন। তিনি নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সদস্য।
এদিকে সাংবাদিক আব্দুল আহাদ ‘এখন টিভি’-তে যোগদানের বিষয়টি তার ফেসবুক পেইজ পোষ্টে জানিয়ে বলেছেন- ‘প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ‘এখন’ টিভির সঙ্গে ছিলাম, তবে তা ছিল অদৃশ্যভাবে। তবে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিম ‘এখন’ এর সঙ্গে যুক্ত হলাম আমেরিকা থেকে।
আব্দুল আহাদ লিখেছেন- ‘টিম এখন’ বলতে ‘টিম তুষার আবদুল্লাহ’। টিম তুষার আবদুল্লাহ এর সঙ্গে থাকতে গিয়ে নিজের চাকরি হুমকীতে পড়েছিল। সেটা সময় টেলিভিশনে। সময় টেলিভিশন আমাদের মত একঝাক স্বপ্নবান তরুণকে নিয়ে যাত্রা করে ২০১১ সালে। প্রতিষ্ঠার পর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ দিয়ে শহর ছাড়িয়ে গ্রামগঞ্জের মানুষের আস্থা অর্জন করে সময় টেলিভিশন। কিন্তু ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচনের পর ধীরে ধীরে সরকারী চ্যানেলে পরিণত হয় সময়। আর ২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে সরকারের মুখপাত্রে পরিণত হয় জনপ্রিয় চ্যানেলটি। আমাদের পরিশ্রমে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা চ্যানেলটির এই অবস্থান মানতে পারেননি সময়ের অন্যতম পরিচালক তুষার ভাই। এক পর্যায়ে সময় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরিকল্পনা করেন আরেকটি টিভি চ্যানেল করার, যেটা সরকারের নয়, জনগণের মুখপাত্র হবে। তার টিমে আমার মতো বহু সংবাদকর্মী যোগ দিলেন। যারা সময়ের লোভনীয় চাকরী ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। তবে সরকারের বাধায় সেই যাত্রায় ব্যর্থ হোন তিনি। তাঁর সেই অপারগতা আমাদেরকে এক কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। এই যেমন আমি, দিনের পর দিন অফিসে বসে থাকি কিন্তু একটাও স্টোরি কিংবা লাইভ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এভাবে কাজ ছাড়া অফিসে বসে থাকা কতটা অসয্য যন্ত্রণার যারা মাঠের রিপোর্টার তারাই শুধু অনুভব করতে পারে। সেই সঙ্গে আমরা সরকার বিরোধী হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করি। দাওয়াত পেতামনা ক্যান্টনমেন্টসহ কোন সরকারি প্রোগ্রামে। ২০১৮ ইলেকশনের কিছুদিন আগে রাস্তায় আমার গাড়ি আটকিয়ে ঠিকঠাক মতো সংবাদ পরিবেশনের জন্য শাসায় পুলিশ। সাহসী পুলিশ অফিসারটি ভেঙে দেয় ক্যামেরা। তারপর দেশ ছেড়ে দেয়ার পরিকল্পনা করি। ২০১৯ সালে চলে আসি আমেরিকা। এখানে এসেও সেই আগের বাধা। চ্যানেল-২৪ থেকে অফার আসে আমেরিকা করেসপনডেন্ট হিসেবে কাজ করার। কাজও শুরু করি। কিছুদিন কাজের পর অফিস থেকে নিউজ পাঠাতে মানা করা হয়। কারণ জানতে চাইলে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমাকে বাদ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই থেকে বাংলাদেশের কোন মিডিয়ার সরাসরি কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমি আমেরিকা আসার কবছর পর তুষার ভাইর নেতৃত্বে এখন টিভি সম্প্রচার শুরু করে। কিন্তু সেই সময় প্রকাশ্যে এই চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারিনি। এখন প্রফেসর ইউনুস সরকার ক্ষমতায়। তাই দেশের চ্যানেলে সাংবাদিকতায়ও প্রতিবন্ধকতা নেই’।

শেয়ার করুন