জগন্নাথপুরে বিএনপি নেতার বাধায় ভূমিমালিকানার প্রতিবেদন পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী


জগন্নাথপুরে বিএনপি নেতা ও আইনজীবি জিয়াউর রহিম শাহীনের বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি করে জায়গা দখলের পায়তারা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে। রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জগন্নাথপুর পৌর শহরের জালালপুর ভরতপুরের মৃত আছলম উল্ল্যাহর স্ত্রী রুপিয়া বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য এপিপি জিয়াউর রহিম শাহীনের দাপটে তিনি ভূমি ক্রয় করে বছরের পর বছর ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে হয়রানির মাত্রা আরও বেড়েছে। তহশিলদার নালিশা ভূমি সরেজমিনে তদন্ত করেও জিয়াউর রহিম শাহীনের ভয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী রুপিয়া বেগম জানান, ১৯৯৩ সালে জনৈক মকবুল আলীর কাছ থেকে ক্রয়কৃত ভরতপুর মৌজায় ১১ শতাংশ জায়গা যার দলিল নং ৮১৪/৯৩, জেএল নং ৪৬. সাবেক দাগ নং ১০৬, হাল দাগ নং ১৭৪, ১৭৫, ডিপি খতিয়ান নং ৩২, একটি টিন সেট দালান কোটা তৈরি করে বসবাস করছেন। বাকী ৫ শতাংশ চারা রকম ভূমিও কার ভোগ দখলে। ২০০০ ওই দলিল নামজারী করতে জিয়াউর রহিম শাহীনের কাছে দেন। প্রায় ৭-৮ মাস পরে জিয়াউর রহিম শাহীন এই দলিল ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, ভেজাল থাকায় নামজারী করা সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে রুপিয়া বেগম জানান, ২০০৪ সালে জিয়াউর রহিম শাহীন তার এই খরিদা জায়গা দখল করতে বেড়া দেন। তিনি বাধা দিলেও এর তোয়াক্কা না করায় বেড়া ভেঙ্গে ফেলেন। পরের দিন পুলিশ এসে কাগজ পত্র নিয়ে তাকে থানায় যেতে বলে। তিনি যথাসময়ে থানায় হাজির হলেও দারোগা জিয়াউর রহিম শাহীনের সাথে পরামর্শ করে বিচারের তারিখ দেওয়ার কথা জানান। ২/৩ বছরেও বিচারের কোন তারিখ না হওয়ায় পরবর্তীতে বদলী হয়ে আসা অন্য দারোগা এসে বিচারের তারিখ নির্ধারণ করেন। এ ব্যাপারে বিচার বসলে বিচারকরা অসঙ্গতি দেখতে পান। একপর্যায়ে নিরুপায় তিনি ঢাকাস্থ ভূমি রেকর্ড ও জরিফ অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে অনুমতি এনে মামলা দায়ের করেন। যার ডাইরি নং ৫২১ তারিখ ২৩/০৩/২০০৯। পরবর্তীতে সিলেট জোনাল ভূমি সেটেলমেন্ট অফিসে তিন-চারবার শুনানীতে উপস্থিত থাকতে পারলেও জিয়াউর রহিম শাহীনের হুমকীর কারণে শুনানীতে উপস্থিত হতে পারেননি। তখন জানতে পারেন, জোনাল সেটেলম্যান্ট অফিসার এই জায়গাটি সরকারের খাস খতিয়ানে সাবেক দাগ ১০৬ হাল দাগ ১৭৫ দশ শতকের একটি ফুট করে রেখে যান। যা প্রেক্ষিতে তিনি কাগজপত্র তুলে দলিল দিয়ে জেলা প্রসাশক সুনামগঞ্জে একটি ট্রাইবুনাল মামলা দায়ের করেন। জেলা প্রসাশক কাগজ পত্র দেখে ৫ শতাংশ জায়গা খাস খতিয়ান থেকে দলিল মোতাবেক তাকে দিয়ে দেন। এল এস টি মোকাদ্দামা নং ৩০১১/২০২০। পরবর্তীতে এই জায়গা রুপিয়া তার নামে নামজারী করে খাজনা পরিশোধ করেন এবং এই জায়গাতে একটি ঘর তৈরি করে ভাউন্ডারী ওয়াল দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। তিনি জানান, জিয়াউর রহিম শাহীন মামলা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে চলেছেন।
১৪৪ ধারা জারি মামলায় তিনি সব কার্যক্রম বন্ধ করে আদালতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। তহশিলদার সরজমিনে এসে বিষয়টি তদন্ত করার তিন মাস হয়ে পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জিয়াউর রহিম শাহীনের ভয়ে রিপোর্ট দাখিল করতে পারছেননা। প্রভাব খাটিয়ে হয়নানির চেষ্টা করেন। এমনকি তার দলের নেতাকর্মীদের লেলিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এ অবস্থায় তার জানমাল রক্ষায় তিনি প্রশাসনের উর্ধতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শেয়ার করুন