আনোয়ার হোসেন মিছবাহ্ :
ভ্রমণের আদি কথা-শরীরের ওজনে বেরোও আর পায়ের ওজনে ফিরো।আগে দেখো,পরে দেখাও।কথাটি আকৃষ্ট করে বলে মগজের কোষে কোষেও বাজে লালনের গান-
“বাড়ির পাশে আরশী নগর/পড়শী বসত করে/আমি একদিনও না/দেখিলাম তারে…”
সেই অভিলাষ বাসনায় ১৪ নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে পন করে বসি;এবার তবে যাচ্ছি তুরুংছড়ায়।কেনো না আগে দেশের সুন্দরম সুগন্ধি নেওয়া,তারপর বিদেশের সুগন্ধি নেওয়া হতে হয় ভ্রামনিকের কাজ।অর্থাৎ আগে নিজের উঠোন দেখা,পরে অন্যের বাড়ি।ছোটলাম,তুরুংছড়ার দিকে।তুরুংছড়ার যাত্রাপথেই উৎমাছড়া অতিক্রম করে বরাবর ডান দিকে পায়ের পদক্ষেপে একেবারেই সরাসরি।যেখানে বর্ষায় থৈ থৈ খেলা করে পাহাড়ি স্ফটিক জল।তুরুং গ্রামের কোলাহল ভেদ করে পাথুরে শরীরে আছড়ে পড়ে হার্টের বিটের মতো আপন আলয়ের জলের ছল ছল,উচ্ছ্বলতা আর জলের উড়াউড়ি।রেফ্রিজারেটর থেকে বের করা কাঁচ বোতলের জলের মতোন হীম জলে গা ধুইয়ে যায়,একান্ত সংগোপনের আপনে।শরীর বাওয়া জলের সাথে দূর থেকে গলা মিলায়,জানা অজানার কুঞ্জবনের পাখি।জঙ্গলের গভীর থেকে ভয়ে বা নির্ভয়েও নির্ভরতা খোঁজে, ভ্রামনিকের মনোনিবেশ।দূরের দেশ থেকে খাবারের খুঁজে আসে- বক,জলহাঁস,পানকৌড়ি। নিরবতায় নামে ১৮ ঘন্টার ঘুম পাগলা শিকারে সুদক্ষ ছদ্মবেশের বুনো বিড়াল।বুনো গাছের ফলের লোভে উড়ে আসে,পাহাড়ি ময়নার দল।চশমা পরে নামে,হনুমান বানর।সবুজ বাহারি লাল ঠোঁটের টিয়া পাখিসহ আরও কতো কী।এখানে কালো,খয়েরী,সাদা কিংবা শ্যাওলার আস্তরণের পাথর খুঁজে,খোয়াড়ির শ্রমিক।বড়ো নিঃসঙ্গতায় দূর থেকে হাত বাড়িয়ে আয় আয় ডাকে,
ভ্রামনিক হৃদয়।সঙ্গীন হৃদয়েও বড়ো একাকী করে দেয়,ছড়ার জলের একাকী ঢেউয়ের দল।ডাকে ক্যামেরার চৌকস চোখ।জামাবদলের হুটহাট আর সেলফির শর্টকাট। তাই দোয়েলের ঠোঁটে রাতের ঘুম বিলি করে ভোরের ভূষন্ডি কাকের পরিচ্ছন্নতার উদারতার স্বাক্ষী হতে হতে রাতের নিরবতায় গুছানো কাঁধের ব্যাগের দিকে মন ফেলে অপেক্ষা করি বাসের টাইম।এরপর ১৫ মিনিট পর পর বাস ছেড়ে গেলেও উঠি না।কারণ,বিআরটিসি বাসের দোতলার পুরোটাই সামনে না বসলে মিস করা হবে,সালুটিকর পার করা ডান বামের নৈসর্গিক ভিউ।বাতাস ভেদ করে চলা বাসের গ্লাস থেকে হুড়মুড় করে আসবে না হাওয়ার পসরা।
এমন মনোজ ইচ্ছায় ৯ টায় বেরিয়ে পড়ি সিলেটের আম্বরখানা মৌজার মজুমদারি এলাকায়।কারণ সেখান থেকে বিআরটিসি বা সাদাপাথর বাস যায় সোজা কোম্পানীগঞ্জে।যায় সিএনজি অটোরিকশাও।তবুও বাস বেছে নিই।কারণ এ বাস আবার মাত্র দেড় ঘন্টার সময়ে ৬০ টাকা ভাড়ায় অতিক্রম করে ২৭ কিলোমিটারের পথ।বাস যখন ধলাইয়ের ব্রীজ বরাবর নামায়,সেখানে অমনিতেই ভিড় করে দয়ারবাজারের ইজিবাইক বা সিএনজি অটোরিকশার চালক।একটু মুলামুলি করে ওঠে পড়লে ২৫ টাকায় যেখানে থামে,সেখান থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় যানবদলের
পর সোজা ৬ কিলোমিটারের রাস্তার ইতি ঘটে চড়ারবাজারে।চড়ারবাজার নেমে পায়ে হাঁটা পথে ৫ নম্বর রণিখাই ইউনিয়নের বাজারের নানা পসরার দোকানের সারি ফেলে বিন্নাবনের পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা নানা পদের মধ্যবিত্তের উঠান ধরে এগুলেই পাওয়া যায় উৎমাছড়া।এখানে চায়ের কাপে বা ২০ টাকা দামের শরবতের গ্লাসে অকাতরে হাপিয়ে ওঠা জার্নির ক্লান্তি কে কতল করে বোল্ডার বিছানাে সাময়িক সাঁকো অতিক্রম করে যেতে হয়, ডান দিকে।এরপর না চেনা তুরুং গ্রামের জন্য মানুষের সাথে কথা ভাগ করে ফাঁড়িপথে লামারগাঁও গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটারের মতো পথ হাঁটলেই তুরুংছড়া।এখানে বর্ষায় নাপিতখাল হয়ে নৌভ্রমনেও যাওয়া যায়।পৌঁছে মনে হয় এর
সৌন্দর্য শুধু তুরুংছড়ার মতো নয়,অনেকটা উৎমাছড়ার মতো।তাই সমাদরে বলতে ইচ্ছে করে-তুরুংছড়া রে তুরুংছড়া তুই কি তবে উৎমাছড়ার ছোটো ভাই?সে যাক অন্য কথার ভিন্নতা।এবার যাই তুরুংছড়ার জীবন বাখানে।
তুরুংছড়ার অবস্থান ভারতের মেঘালয় রাজ্যকে ঘিরে তুরুং নামক গ্রামে।যার প্রধানতম উৎস হলো বুনো পাহাড়ের ছায়াশীতল ময়দান থেকে আকাশের কান্না একত্র করে দুঃখ ভাগিদার ভ্রামনিকের কাছে নিয়ে আসা।যে জল পাথরের গতর ধুয়ে ধুয়ে হীম থেকে আরও হীমে আয়নার মতো ফিরে আসে।তুরুংছড়ার নেমে আসার সময় শুধু অন্যথা ভিন্ন থাকে।এখানে মেঘালয়ের জল ভারতের ভূমে নেমে ওপারের রাস্তার উপরে দৃশ্যমান ৫ কামরার ব্রীজের তল বেয়ে প্রবেশ করে তুরুং গ্রামের তুরুংছড়ায়।যাকে কেউ নালা বললেও এ আর নালা থাকে না ছড়ায় রূপান্তরিত হয়ে বর্ষার সময় প্রচন্ড বেগে ধেয়ে নামে বাংলাদেশের ভ্রামনিক বরাবর।ভাসায় তুরুং গ্রামের মাঠ,ফসলের ক্ষেত।বয়ে আনে মাছের রাজ্য।যেখানের সাদা জলে দেখা তিরিংবিরিং জিওল আর পাহাড়ি মাছের খেলা।
তুরুং বাংলাদেশের একটি সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম। ব্রিটিশ ভারতের ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সাবেক গঞ্জ বা বাংলাদেশের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার ১২৫৯ নম্বর পিলার বরাবরে তার অবস্থান।আর তুরুং গ্রাম বিস্তৃত যে ছড়া তা ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বেশি তাপমাত্রায় সৃষ্ট উত্তুঙ্গ মেঘের জড়ো করা কান্নার অবিরাম স্ফুরণ।যার অদূরে অদৃশ্যমান ভারতের-গানোল,দারিং,সান্দা,বান্দ্রা,নিতাই,
দারেং,বুপাই,সিমসাং,নদীর সাথে ধলাই নদীর অবস্থান।এ ছড়ায় ভারত থেকে বাহিত পাথরের খোয়াড়ে শ্রমিকের আনাগোনা।যারা শ্রমের-ঘামের বিনিময়ে পাথর উত্তোলন ও বহনকারী।এরা প্রতি সূর্যডোবা সময় নিয়ে পাথর উত্তোলনে এ ছড়ায় বলীয়মান ছিলো বলে ছড়াটির নামই দাঁড়ায়-কুলীছড়া।এতোদিন বর্তমানবাসীরা কুলীছড়া জানলেও এর আদীবাসী খাসি সম্প্রদায়ের হয়তো দায়ের করা নাম-তুরুং।খাসি ভাষায় বিশেষ ধরনের পদ্মফুলের বিশেষণ থেকে তুরুং নাম ধারন করে থাকতে পারে বলে অনুমিত হয়।কেনো না অত্রাঞ্চলের উত্তর-ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বসবাসকারী আদি খাসি জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচল অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষায় তুরুং শব্দটি পাওয়া যায়,যার অর্থ-বিশেষ ধরনের পদ্মফুল।যদিও অধিবাসী অনেকের কাছ থেকে এর সত্যতা ধার করলেও বর্তমান বাসীদের কাছ থেকে তুরুংয়ের অর্থ পদ্ম থেকে অ বর্তমান।
তুরুংছড়া টি পাথর ব্যবসায়ী,সুড়ুং পথে চোরাকারবারি ও ছড়ায় কুলীদের কাছে কোয়াড়ির পরিচয়ে কোমর সোজা করার প্রচেষ্টা থাকলেও সরকারী নথিতে পর্যটনকেন্দ্রের চিহ্ন নেই।ফলে আজ হতে বিগতে পর্যটকদের কাছে পরিচয়ের সাথে অ বর্ণ টি যুক্ত ছিলো।কিন্তু ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যভাগে সাদাপাথর গায়েবি সংবাদ দেশি বা ভীনদেশী বিভিন্ন মিডিয়ায় চুন দ্বারা জোঁক ছাড়ানোর পর্যায়ে চলে আসলে হৈ চৈ এর মাত্রা সামনের সারিতে আসে।ভ্রামনিকের ভ্রমন বন্ধে উদ্যোগের হেতু খুঁজে উৎমাছড়ার ভূয়া নিষেধের আরও বেশি আকর্ষণে বাংলাদেশের ভ্রামনিক ভ্রমণ মেজাজে উৎমাছড়া কে আরও বেশি কোলাহলে উৎরোল করে দেয়।ভ্রমনে মশগুল হয়ে ছুঁটে আসে নানা প্রান্তের মানুষ।তাঁরা উৎমাকে চেনে।ঘোষিত হয় উৎমাছড়াও আরেক পর্যটনকেন্দ্র।বসে হাট।বসে দোকান।ফুলতে থাকে এলাকার মানুষ ও পরিবেশ।শুধু অবাঞ্চিত রয়ে যায় তুরুংছড়ার নাম।কারণ,তুরুং ম্যাপে আছে তবে রাস্তাহীন।পাশের বাড়ি বিরিয়ানি হলে যেমন গন্ধ আড়ে যায় না তেমনি উৎমায় আসা ভ্রামনিকও বিরিয়ানির গন্ধ তালাশের মতো পাশের বাড়ি খুঁজতে গিয়ে নাগালে আনে তুরুংছড়ার নামও।এতোদিন তুরুং গ্রামে নামের আগে তুরুংছড়া শুধু শুধু গ্রামবাসীর শরীর ধূয়ে যেতো।এখন ছিটেফোটা কতেকজন ভ্রামনিকের শরীর ধোয়ারও স্বাক্ষী থাকে তুরুংছড়া।স্বাক্ষী থাকে কুলীদের শরীর ধোয়া জল।স্বাক্ষী থাকে গ্রামবাসীর উদম গতরের ছড়া।স্বাক্ষী থাকে বর্নালী পাথর ভ্রামনিকের মন।
বাংলাদেশের সিলেট,সুনামগঞ্জ,মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ,
নেত্রকোনা ঘেরা অঞ্চল মেঘালয়।সংস্কৃত শব্দ মেঘ এবং আলয় মানে বাসস্থান এ দুটি শব্দের সৃষ্ট মেঘালয় বা মেঘের বাড়িতে বিরাজন করে তুরুংছড়ারও গান।তুরুংছড়ার অপারে মেঘালয়।এ রাজ্যটি আবার ভারতের সবচেয়ে বেশি আর্দ্র অঞ্চল। এর দক্ষিণ খাসি পাহাড়ের অঞ্চলগুলোতে বছরে ৪৭০ ইঞ্চি বা ১২০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডভূক্ত হয়।আবার চেরাপুঞ্জি বা সোহরা তো পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের জন্য অনন্য উদাহরনও বটে।অদূরে পাহাড়িয়া বনের ভূমিও উত্তর ও দক্ষিনের নিচু অঞ্চলের বন থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যের বিশেষায়িত এলাকার ভূমিও প্রায় ৭০ শতাংশের মতো বিরাজিত।যেখানে রয়েছে প্রায় ১১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত জাতীয় সড়ক।এবং এ রাজ্য উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের একটি,যা আর্কিয়ান শিলার গঠনে সমাদৃত,কয়লা,চুনাপাথর,সিলিমানাইট,
ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধিতে আগুয়ান।সেখানে উত্তুঙ্গ পাহাড়ে বৃষ্টি নির্ভর নদীরও কমতি নেই। বিধায় পাহাড়ে অনেকগুলো গিরিখাত তৈরি করে দেয় বলে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ অভিমুখিন অগুনতি ঝর্ণার।ফলে ঝর্ণা বাওয়া জলের ছড়া বা নদী।নানা উপঢৌকনে ভাসে বাংলাদেশের মানুষ।ফুলে ব্যবসা।বড়ো হয় ছোটো মানুষ।সুন্দরম হয় জল হাওয়া।মনোরম হয় পরিবেশ আর প্রতিবেশ।মানুষ আসে। পাখি আসে।প্রানী আসে।গান হয়।কবিতা হয়।এজন্য পাথুরে ভূমি হিসেবে সীমান্ত পারের সুনাম সর্বজনবিদিত।তাই পাথর উত্তোলন ও পরিবহনে সুবিধার দিক বিবেচনায় ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তুরুং সন্নিকটের ভোলাগঞ্জ রূপওয়ে নির্মিত হয়।ধারাবাহিকতাকেও বহন করে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ বরাবর।রূপওয়ের দৈর্ঘও টানা ১১ মাইল।
আমাদের আলোচ্য তুরুংছড়াও তাই ব্যতীক্রম বহির্ভূত।এটি মেঘালয় রাজ্য শিলং ও চেরাপুঞ্জি বেষ্টিত।এবং ধলাই নদীর উৎস ভূমি।মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে উৎসারিত।যা ১৫৮ টি গ্রাম অধ্যোষিত ২৯৬’৭৬ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে অবস্থিত।১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত পুলিশ ফাঁড়ি ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে উপজেলায় রূপান্তরিত হলে ২০০২ খ্রিস্টাব্দে ৩ নম্বর রণিখাই ইউনিয়ন কে বেইস ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়।পরে ৬ নম্বর দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পর্যন্ত বর্ধিত হয়।বলে আলোচ্য তুরুং গ্রাম ৫ নম্বর রণিখাই ইউনিয়ন বলে স্বীকৃত হয়।বাংলাদেশ ও মেঘালয়ের মধ্যে প্রায় ৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের ৩৫০ কিলোমিটার বেড় দ্বারা ব্যষ্টিত সীমানার মধ্যে তুরুংছড়াও পড়ে।আর সীমানার মধ্যে পড়ে যায় বলে বনজঙ্গলের সবুজ ঠাসবুনটের প্রায় জনমানবহীন তুরুংছড়ায় সীমানার পারে বাঁশের সাঁকো পার না হওয়া মঙ্গল।সাঁকো পর্যন্ত বাংলাদেশের সীমানা মনে করে তুরুংছড়াকে জয়ের নাগালে আনা ভ্রামনিকের জন্য ভালো।আরও ভালো,স্থানীয় জনের পরামর্শ ও আলাপি সঙ্গ হিসেবে নেওয়া।সাথে পরিশুদ্ধ খাবার।নিরাপদ পানি।প্লাস্টিক বা রাবারের স্যান্ডেল।সানগ্লাস।ক্যাপ।ছাতা।পাওয়ারব্যাংক।শর্টস। গামছা।অতিরিক্ত জামা।মেয়েদের জন্য সহনীয় পোশাক।এ ছাড়া যে কোন ভ্রমনের সময় মনে রাখা জরুরি।বেড়ানোর বেলায় যে স্থানকেই নেওয়া হোক,বেছে নিতে হবে-সুবিধার জায়গা।টাকা বা সখের জিনিস একসাথে না রেখে রাখতে হবে ভাগ করে।পার্কিংয়ের জন্য নিতে হবে নিরাপদ স্থান।পৃথক স্থানে রাখতে হবে প্রয়োজনীয় ডকোমেন্টস বা মোবাইল নম্বর।এতে ব্যবহার হতে পারে-ই মেইল,পেনড্রাইভ বা গুগলড্রাইভ।আগলে রাখতে হবে-গাড়ির টিকিট বা আবাসিকের চাবি।সস্তায় পস্তায় মাথায় রেখে পরিত্যাগ করতে হবে অচেনা বা অনিরাপদ আবাসিক।ভ্রমনের জন্য বেছে নিতে হবে-পাবলিক যানবাহন।সাথে নিতে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক নিরাময়ের ওষুধ,জীবানু ও ব্যথানাশক স্প্রে।ব্যাকব্যাগের স্থলে ব্যবহার করতে হবে-ক্রসব্যাগ এবং যেখানে যে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ভালো সে রকম সীম।বিরত থাকতে হবে-কর্ক বা ঢাকনা খোলা পানীয় পানে।বিরত থাকতে হবে-হঠাৎ অতিরিক্ত ভোজনে।ব্যবহার করতে হবে-নিজেকে পাওয়া যায় এমন ট্র্যাকিং ডিভাইস।বাসা বাড়িতে জানিয়ে রাখতে হবে-নিজের এবং ভ্রমণ স্থানের বিশ্বস্থ কারও মোবাইল নম্বর।দরদাম করে মোবাইলে রেকর্ড করে নিতে হবে খাবার,রেস্টোরেন্ট,আবাসিক,
বাজার ও গাড়ির কন্ট্রাক্ট।ধরা যাবেনা-রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া জিনিষ।অপরিচিত কাওয়া পড়ে দেওয়া যাবে না-কাগজ বা মোবাইল,ট্যাবের লেখা।অপরিচিত কারও হাতে দেওয়া যাবে না-হাতের মোবাইল,ট্যাব বা ল্যাপটপ।যানবাহনে ওঠা যাবে না-নম্বরপ্লেট না পড়ে।মন থেকে মোছা যাবে না-গাড়ির বা নিভৃত যায়গায় কেউ রুমাল বা কাগজ বের করার কথা।কারণ,এতে থাকতে পারে স্মৃতি শক্তি বিনষ্টকারী ‘স্কোপোলামিন’ বা ‘হায়োসিন’,যাকে শয়তানের নিঃস্বাসও বলে।মূল্যবান কিছু ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না-বাচ্চাদের হাতে।এন্ড্রোয়েড মোবাইল থাকলে রাখতে হবে-স্পিড বাটন বা লাইভ বাটনে আঙ্গুল।অপরিচিত স্থানে ভরসায় রাখতে হবে- গুগল ম্যাপ।তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে-ভ্রমনের পূর্ব রাত।গাড়িতে ঘুমানো যাবে না- দলাবদ্ধ মানুষ ছাড়া।সন্ধ্যা নামার আগে পরিত্যাগ করতে হবে-ভ্রমনের জায়গা।কথা কম কম বলে মুক্ত থাকতে হবে-টাউট বাটপার বা ছিনতাইকারী হতে।
মনে রাখা ভালো-তুরুংছড়া টি পর্যটন এলাকা হিসেবে এখনও অঘোষিত বিধায় অত্রাঞ্চলে হাতের নাগালে সহজ প্রাপ্তিও নাগাল বহির্ভূত।তা ই নানা বঞ্চিতির এহেন পরিনতির জন্য তুরুংছড়াকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবিটিও জানাতে চাই।আসা করছি দাবিটির প্রতি কর্তৃপক্ষের আশুদৃষ্টি পড়বে।রংয়ে রংয়ে সাজানো হবে-পাহাড়,পানি,চা বাগানের রাজধানীখ্যাত আমাদের সিলেট ভূমি।
জুন মাস থেকে ডিসেম্বর মাস কে ঘিরে বর্ষার গুঞ্জন শুনে অত্রাঞ্চলে আসার সময় নির্ধারিত হলেও নতুন ভ্রামনিকের জন্য জল কমতির মাস আগস্ট থেকে ডিসেম্বর হলে তুরুংছড়া জলসঙ্গমের জন্য ভালো সময়।সিলেটের যেখানেই যারা আসবেন সুরমার ব্রীজ ছুঁয়েই আসতে হবে বিধায় যেখান থেকেই আসুন,আসতে হবে আপনার করে।এরপর পূর্বে ঠিক করা স্থানের যাওয়ার পরিকল্পনা আবারও ভাগ করে নেবেন নিজের বোঝাপড়ায়। করে নেবেন ভ্রমনের নকশা।অর্থাৎ কোথায় কোন জায়গায় যেতে হবে।কবে,কখন!