
জালজালিয়াতি ও পেশীশক্তি ব্যবহার করে সিলেট নগরের প্রাচীনতম ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সুলভ বস্ত্রালয়ের মালিকদের পারিবারিক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ওঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে বারবার অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রবাসী বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডক্টর এম এ মোশতাক।
তিনি অভিযোগ করেন, তার পিতা আব্দুর রউফের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ১৯৬২ সালে নগরে সুলভ বস্ত্রালয় নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটির দিকে কুচক্রী মহলের নজর পড়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের অপকৌশলে লিপ্ত রয়েছে এবং প্রতারণায় আশ্রয় নিয়ে নানানভাবে হয়রানি করছে। এমনকি পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের কারণে পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যদের মধ্যে চরম অশান্তি ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১৯৯৯ সালে বাবার মৃত্যুর সময় সুলভ বস্ত্রালয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার মূলধন এবং বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে আরো ৫০ লাখ টাকা রেখে যান। একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার ছোট ভাইকে প্ররোচিত করে সমস্ত অর্থ-সম্পদ লোপাট করে আমাদের সম্পত্তি দখল করে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে।
প্রবাসী মোশতাক অভিযোগ করেন, সুলভ বস্ত্রালয়ের মূলধন লোপাট করে কুচক্রী মহল তাদের নামে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জায়গা ক্রয় করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- লিচুবাগান মজুমদারিতে সুলভ সার্ভিস সেন্টার, খাসদবির এলাকায় দুটি ফ্লাট ও একটি বাসার জায়গা ক্রয়, সোনারগাঁও প্রকল্পে ডাইরেক্টরশিপ ক্রয়, বিমানবন্দরের পাশে প্রায় ৭০ লাখ টাকা দিয়ে জমি ক্রয়।
তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালে আমার ক্রয় করা বেশ কয়েকটি দোকানের জামানত ও দোকান ভাড়ার টাকা অবৈধভাবে আদায় ও আত্মসাথের ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন শুকরিয়া মার্কেটের বর্তমান কমিটির সদস্যরা। তাদের সাথে রয়েছে সজীবুর রহমান রুবেল, ও তার ভাই শহিদুর রহমান জুয়েল।
পীর মহল্লায় একতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি অবৈধভাবে এই কুচক্রী মহলের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ তার। তাদের হুমকির কারণে দেশে জীবনের নিরাপত্তাবোধ করছেন জানিয়ে মোশতাক বলেন, আমরা দেশে এলে প্রতিপক্ষ আমাদেরকে মিথ্যা মামলা, প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছে। এই ব্যাপারে একাধিকবার সিলেট কোতোয়ালী ও এয়ারপোর্ট থানায় জিডি এন্ট্রিসহ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দেড়কোটি টাকা এরা হাতিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে এম এ মোশতাক বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন সময় পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ করেও প্রতিকার পাইনি। এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে সিলেট জজ আদালতে বেশ কয়টি মামলা রয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগ নিয়ে কুচক্রী মহল অর্থনৈতিকভাবে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তিনি অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন এবং শাস্তির ব্যবস্থা করুন। বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এম এ মোশতাকের সহধর্মিণী নানছি বেগম, ছোট ভাই বাবু মেহবুব, সাবু মাহমুদ, বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম, বীর মুক্তিযুদ্ধা মহিউদ্দীন আহমেদ, বারিষ্টার ফয়েজ আহমেদ, অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান, তারেক আহমেদ, আবুল হাসনাত শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।