
দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নে রশিদপুর গ্রামে আরব আমিরাত প্রবাসী বড় ভাইয়ের সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তারা বাবার মৃত্যুর আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জোরপূর্বক জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন, গ্রামের আরব আমিরাত প্রবাসী আব্দুল নুরের স্ত্রী পপি বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। প্রবাসের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে বাড়িতে যে সম্পদ ক্রয় করেছিলেন সেই সম্পদ এবং তার পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত সম্পদ মা ও আপন তিন ভাই ও বোনের জামাই মিলে আত্মসাৎ করে নিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সম্পদ আত্মসাতের পর বিচার চাওয়ায় এখন তারা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এই অবস্থায় শিশুসন্তান নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।
পপি বেগম বলেন, আমার স্বামীর আপন তিন ভাই আব্দুল মান্নান রুবেল, আব্দুল আহাদ ও আব্দুল হামিদ বাছিত এবং জালালপুর ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমার ননদের জামাই বাবলু মিয়া মিলে আমাদের অজান্তে শ্বশুরের জায়গা সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন। আমরা জেনেছি, বয়োবৃদ্ধ শ্বশুরকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় জোরপূর্বক রেজিস্ট্রারি অফিসে নিয়ে গিয়ে দলিল সম্পাদন করে নেয় তারা।
এমনকি, তারা আমার স্বামীর কষ্টার্জিত অর্থের টাকায় নির্মিত ভবনসহ বসতভিটা নিজেরা ভাগভাটোয়ারা করে নিয়ে নেন। বড় ছেলে ও তার পবিবারের থাকার মতো কোনো জায়গা তারা রাখেননি। আমার শ্বশুর যখন ১৭ বছর আগে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হন তখন থেকেই আমার স্বামী পরিবারের হাল ধরলেও বর্তমানে আমাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই।
তিনি বলেন, আজ ১৬ বছর প্রবাসে কাজ করেও উনার কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাই। মা বাবা আর পরিবারের কথা চিন্তা করে তিনি সব টাকা তার মা ও ছোট ভাই আব্দুল হামিদ বাছিতের নিকট পাঠিয়ে দিতেন। সেই টাকা দিয়ে তারা বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন। অথচ সেই বিল্ডিংয়ে আজ আমাদের থাকার কোনো অধিকার নেই।
একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ছেলে আব্দুল মান্নান রুবেল তার বাবার উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছিল। ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আমার শশুর তাদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন। এখন শ^শুরের সব সম্পদ রুবেলসহ অন্যরা আত্মসাৎ করেছে।
গত বছর সন্তানের জন্মের সময় বাপের বাড়ি থাকায় পপি বেগমের বিয়ের আসবাবপত্র লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, এই নিয়ে পুলিশের নির্দেশে গ্রামের মুরুব্বি এবং ওয়ার্ডের মেম্বারসহ সবাই মিলে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে বাধ্য হয়ে রশিদপুর গ্রামের সব মুরব্বী একত্রিত হয়ে তাদেরকে পঞ্চায়েত থেকে বাদ দেন। প্রবাসী স্বামীর কষ্টার্জিত সম্পদ ফেরত পেতে পপি বেগম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ন্যায় বিচার কামনা করেন।