প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: বাসদ

মব সন্ত্রাস বন্ধ, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। (৮ জুলাই) মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা সদস্য,চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, হবিগঞ্জ জেলা বাসদ নেতা শফিকুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর জেলা সহ-সভাপতি শহীদ আহমদ, সংগ্রাম পরিষদের তোফাজ্জল হোসেন,রাজু আহমেদ,আলী হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু,আল আমিন আহমেদ খোকন প্রমূখ।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আর এক মাস পর জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হবে। বাংলাদেশের মানুষ এক অপ্রতিরোধ্য লড়াই আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এক স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল এই জুলাই মাসে। সে সময় মানুষ স্লোগান তুলেছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, লুটাপাট-দূর্নীতি, গুম-খুন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, কর্তৃত্ববাদ ও স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে। মানুষ চেয়েছিল এসব থেকে মুক্ত একটা সমতা ও ন্যায় ভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাজ। কিন্তু বছর না পেরোতেই মানুষের সেই আশা ক্রমশ: ফিকে হয়ে আসছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর থেকেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগ নিয়ে সারা দেশে মব সন্ত্রাস সংঘটিত হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই মবকে নিয়ন্ত্রণ এর চেষ্টা না করে বরং কিছু ক্ষেত্রে উসকানোর ঘটনাও দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। এই মবের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে আছে।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম অগ্রণী শক্তি ছিলেন এদেশের নারীরা। অথচ সেই নারীদের উপরে আক্রমণ নেমে এসেছে সবার আগে। উগ্র ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট শক্তি সারা দেশেই নারীদের স্বাধীন চলাফেরার উপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে, হামলা হয়েছে আদিবাসীদের উপর ও মাজারে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে। এসকল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ধ্বংস করার ঘটনা ঘটে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধ এই জাতির সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যুদ্ধাপরাধী শক্তিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে, জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনের চেতনার সাথে যা সাংঘর্ষিক। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু যে সকল বিষয় নিয়ে সকলের ঐকমত্য আছে সে সকল সংস্কারকে এগিয়ে নিতে সরকার গড়িমসি করছে। আবার ঐকমত্য কমিশনে যে আলোচনা হচ্ছে সেখানে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের কিংবা আদিবাসী, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা নেই। অর্থাৎ শুধু রাষ্ট্রের উপরিকাঠামোতে পরিবর্তন করে কোন কার্যকর পরিবর্তন আনা যাবে না।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সুষ্ঠ, অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করারও দাবি করেন। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন, এটাই এই মুহুর্তে অন্তরবর্তী সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ। অন্যথায় দেশে আরও ভয়াব্হ সংকট দেখা দিতে পারে বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।

শেয়ার করুন