হসপিটালে শুয়ে অসুস্থতার আবেগময় কথা লিখলেন সাংবাদিক মঈন উদ্দিন মঞ্জু


সিলেট এক্সপ্রেস ডেস্ক: সিলেটের সাংবাদিকপাড়ায় পরিচিত মুখ সাংবাদিক মঈন উদ্দিন মঞ্জু হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি কখনো ভাবেনি এমন কঠিন সময় পার করবেন। অসুস্থতার কঠিনমুহুর্ত কথা নিজের ফেসবুকে শেয়ার করলেন যেভাবে।

আল্লাহর অশেষ রহমত এবং
সবার দোয়ায় যেন আবার নতুন জীবন ফিরে পেলাম!
সেদিন মধ্যরাতে (২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা আনুমানিক) আমার শরীরের যে ভয়ানক অবনতি হয়েছিল তা কেউ বিশ্বাস করবেন না। না করাই স্বাভাবিক। কারণ সেইরাতে যখন আমার শরীর এক ঝটকায় হঠাৎ নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল তখন আমি নিজেই নিজের অসহায়ত্ব দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম।
একইসময়ে প্রেসার লো, মারাত্বক ডিহাইড্রেশন, অস্বাভাবিক বমি এবং ফুড পয়জনিং-এ আক্রান্ত হয়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে যখন আমি ডাইনিং রুমের ফ্লোরে পড়ে গিয়েছিলাম, যখন আমার হাত পা ক্রমশ অবশ হয়ে গেল, প্রচন্ড ঠান্ডায় যখন আমার হাত-পা টানা শুরু হয়েছিল, যখন আমার নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল…
তখন আমি শত চেষ্টা করেও কাউকে কোন কিছু বলা তো দূরের কথা নিজের একটু ঠোঁটও নড়ানোর শক্তিটুকু হারিয়ে ফেললাম তখন শুধু একমুহূর্তের জন্য মনে হলো আমি মনে হয় দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছি…।
এরপর ব্ল্যাকআউট। আমার কিছুই মনে নেই। অচেতন হয়ে পড়ি…।
এত কম সময়ের মধ্যে এতকিছু ঘটেছে যে কীভাবে-কী লিখব বুঝতেই পারছি না। পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখব, আজ নিয়ে টানা চারদিন আল হারামাইন হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন অনেকটাই ভালো। যারা বিভিন্নভাবে খোঁজ খবর নিয়েছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। হসপিটালের বেডে শুয়ে শুয়ে লিখছি। এখনো খুবই দুর্বল, ক্লান্ত।
বিশেষ ধন্যবাদ : সেইদিন বাসার নিচের রাস্তায় রাত ১টায় কাকতালীয়ভাবে গাড়ি নিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শ্রদ্ধেয় কামরুল হাসান শাহীন ভাই। লন্ডন থেকে আসা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আমার লন্ডন প্রবাসী চাচাত বড় ভাই জাকির হোসেনকে বাসায় নামিয়ে দিতেই মূলত তিনি সেখানে ছিলেন। আমার ছোটভাই যখন তাদের দুজনকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে আমার জীবন সংকটাপন্ন বলেছিল তখন শাহীন ভাই ও জাকির ভাই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঘরের সামনে ছুটে আসেন। আমার নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর সবাই মিলে তুলেন গাড়ীতে। তারপর সরাসরি হসপিটালে। আমি অচেতন থাকায় এসব কিছুই টের পাইনি। পরে সব কিছু আমি জানতে পারি। শাহীন ভাইয়ের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। শুধু শাহীন ভাই না,
তাঁর বড় ভাই সালেহ আহমেদ খসরু ভাই ও ভাবী আমাকে সবসময় ছোটভাইয়ের মতো স্নেহমমতা দিয়ে আগলে রাখেন। আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তেও সেই পরিবারকে কাকতালীয়ভাবে পাশে পেলাম। এটা আমার পরম সৌভাগ্য!!
একইভাবে আমি চিরকৃতজ্ঞ আমার লন্ডন থেকে আসা চাচাত ভাই সাবেক ছাত্রনেতা জাকির ভাইয়ের প্রতি।
তিনি তার কোলে শুইয়ে আমাকে হসপিটালে নিয়ে এসেছিলেন। যখন ঘরে এসে তিনি দেখলেন আমি কোন রেসপন্স করছিলাম না, শরীর একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে-সবাই যখন অজানা আশংকায় আতংকিত তখনো তিনি মাথা ঠান্ডা করে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে এসেছিলেন।
আজ এতটুকুই। আসলে আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না সামান্য সময়ের মধ্যে আমার জীবন কীভাবে উলট পালট হয়ে গিয়েছিল। সবাই দোয়ার মধ্যে রাখবেন।
আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুন। আমিন।
বি:দ্র: আশা করছি আজ চিকিৎসক বিদায় দিলে
বাড়িতে ফিরে যাবো। যাদের ফোন ধরতে পারিনি তাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি।

শেয়ার করুন