তাসলিমা খানম বীথি :
তখনো তাকে দেখিনি, তার আগেই লেখার সাথে পরিচিত হই। কয়ক বছর আগের কথা। কেমুসাসে বইমেলা চলছে। হঠাৎ একজন অপরিচিত লোক এসে আমার খোঁজ করলেন। নাম চেহারার দেখে তেমন পরিচিত মনে হলো না। দেখা হতে লোকটি একটি পার্সেল হাতে তুলে দেয়। প্রেরক, সাংবাদিক জুয়েল সাদত, আমেরিকা ঠিকানা দেখে অবাক হই। জুয়েল ভাই গিফট পাঠাবেন ভাবেনি। পার্সেলটি খুলে আরো অবাক! একডোজন কালারফুল কলম। কলমের মূল্য লেখক ছাড়া কে বুঝবে। তাই খুশি মনে একটি নিজের জন্য রেখে দেই। এত কলম বাসা জমা করে রাখলে নষ্ট হবে। তাই আমার সমসাময়িক তরুণ লেখদের গিফট করি। তার মাঝে গল্পকার বাসিরুল আমীন অবাক হয়ে বলল, আপা এত দামি গিফট তোমার কাছে রাখো। শুনে বলি এই কলম যাদের কাছে যাবার তাদের কাছে যাচ্ছে। আমি যেখানে কাজ করি তার লেখা নিয়মিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিলেট এক্সপ্রেসে দেওয়া হত। আমার কর্মস্থল সুত্রে তার সাথে কথা হয়। তারপর থেকেই একদম ছোট বোনের মতই স্নেহ করেন।
2. সাংবাদিক লেখক জুয়েল সাদত আমেরিকা প্রবাসী হলেও দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করছেন। সেখানে থেকে শত ব্যস্ততা মাঝেও তিনি সবার খোঁজ নেন। পাশে থাকেন। গত বছর দেশে আসলেন। তার সাথে প্রথম দেখা সাংবাদিকতা কর্মশালা। যারা স্নেহ আর ভালোবাসতে জানে, যে কোন প্রান্ত থেকে পারেন। সুযোগ পেলেই আমার কর্মজীবন ব্যক্তিজীবন লেখালেখি খোঁজ নেন। উৎসাহ দেন। লেখা চালিয়ে যাও, বীথি তুমি তো ভালো লিখ। এটাকে ধরে রাখবে। তার কথা কাজে বুঝতে পারি তিনি হৃদয়ে যা লালন করেন তাই প্রকাশ করেন।
3.কার সাথে পথ চল তুমি,
ছায়া সে তো তোমার অগোচরে আমি’। কবিতা লাইনগুলো ভীষণভাবে দোলা দিয়ে যায়। দোঁআশে বসে পুরো বইটি পড়ে ফেলি। ”সাদা মার্জিন’ এই বইয়ের বেশ কয়টি কবিতা চমৎকার লাগলো-
একদিন বৃষ্টি এসেছিল উবারে করে
আমি তখন নির্ঘুম রাতে জানালার পাশে
স্বপ্নরা অপেক্ষা,নিলীমার বিচ্ছুরণে।
লেখক দুঃখের গায়ে হলুদ এর কবিতা বললেন,
অভিমানগুলো আজ দলছুটে পাল্লাচ্ছে
এই শহরে আজ দুঃখের গায়ে হলুদ…।
লেখক জুয়েল সাদত তার কবিতার গ্রন্থটি-সাদা মার্জিন উৎসর্গ করেছেন তার সবচে কাছের প্রিয় মানুষদের। তার প্রিয়তমা স্ত্রী ও সন্তানদের। বইটি প্রকাশ করেছেন দোআঁশ পাবলিকেশন। মূল্য মাত্র 150 টাকা।
4.একজন আলোকিত সাংবাদিক জুয়েল সাদত। আমেরিকায় থেকেও সাংবাদিকতা দাপিযে বেড়াচ্ছেন। আমেরিকার কঠিন বাস্তবতায় সাংবাদিকতাকে শানিত করেছেন। দেশকে অনুভব করেন প্রতিমুহুর্ত। তার লেখায় সেটি ফুটে ওঠে। পরোপকারী হিসাবে প্রবাসী কমিউনিটিতে সরব বিচরন। ৫২ তম বর্ষে পা রাখলেও এখনো তিনি তারুণ্যদীপ্ত । সাহিত্য, সাংবাদিকতায় ৩০ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। প্রথম আলো, ঠিকানা, প্রবাসের নিউজ, আমাদের প্রতিদিন, জালালাবাদ অনলাইন টিভিসহ মিডিয়াতে সরব উপস্থিতি রয়েছে।
বই প্রকাশিত হয়েছে ৬ টি, প্রকাশের অপেক্ষায় তিনটি। বর্তমানে কাজ করছেন, বিশেষ প্রতিনিধি জাতীয় দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ, প্রথম আলো এবং যমুনা টাইমস এর উপদেষ্টা সম্পাদক হিসাবে রয়েছেন। নিজের সাদাত ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইসলামী প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। সহায়তা করেছেন বন্যায়কবলীত মানুষদেরও। বিশ্বনাথে নির্মাণাধীন ওয়ান পাউন্ড হসপিটালের ফাউন্ডার মেম্বার সহ অর্ধ শত প্রতিষ্টানে জড়িয়ে ফেলেছেন নিজেকে।
২০২১ সালে তৈরী করেছেন flyoncall.com.আন্তজাতিক মানের ট্রাভেল বিজনেস। যার কো ফাউন্ডার জুয়েল সাদত। তবে থেমে নেই তার কমিউনিটি ওয়ার্ক সরব। উত্তর আমেরিকার শহরের ইভেন্ট ফোবানাসহ সব মাধ্যমেই অংশগ্রহন করেন। জুয়েল সাদতই একমাত্র সিলেটি সাংবাদিক যিনি ফ্লোরিডায় থাকলেও ডালাস,ওয়াশিংটন, শিকাগো,আটলান্টা ও মিশিগানের নানা অর্গানাইজেশন এ মিডিয়া পার্সন সাংবাদিকতা ভুমিকা রাখেন। কমিউনিটি ওয়ার্ক ও সাংবাদিকতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরুষ্কার পেয়েছেন। ৫২ বছরে তিনি অনেক পথ পাড়ি দিয়ে ভ্রমন করেছেন কানাডা, ইংল্যান্ড, দুবাই, ভারত, তাইওয়ান ও সৌদি আরব। একজন আলোকিত সাংবাদিক লেখক কবি সমাজসেবক প্রবাসী জুয়েল সাদত এর আগামীদিনগুলো আরো তারুণ্যময় হোক। সেই প্রত্যাশায় তার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।