সরকারের সাফল্য মেয়াদকাল নিয়ে নানাবিধ আশংকা

সরকারের দুই মাসের সাফল্য তেমন কিছু দৃশ্যমান হয়নি! সরকারের সাফল্য মেয়াদকাল নিয়ে নানাবিধ আশংকামোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান

যৌথবাহিনির কার্যক্রমে মনন্তর গতি, শীর্ষ স্থানীয় দূর্নীতিবাজদের ধরা হচ্ছে না। শেয়ারবাজারের লুটপাট যেন থামছে না। হত্যা লুন্ঠনকারী সহজেই দেশের বাহিরে পালিয়ে যাচ্ছে, সরকারকে ব্যর্থ করার প্রয়াস কি ব্যর্থ হবে?
গোলাম মওলা রনি বাংলাদেশের রাজনীতি এবং মিডিয়া জগতের আলোচিত সমালোচিত একজন ব্যক্তি। তার প্রখরমেধা বুদ্ধিদৃপ্ত জ্ঞান ভিত্তিক অতীত দিনের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ যথেষ্ট প্রশংসিত ছিল। তার শব্দ চয়ন ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা বিষয় ভিত্তিক বিশ্লেষণ ছিল অসাধারণ। তিনি যখন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তখনও তাকে সম্মান করতাম। পরবর্তীতে যখন বিএনপির হয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন আরো বেশি খুশি হয়েছিলাম। তিনি আমার একজন প্রিয় বন্ধু শহীদুল ইসলাম কবিরের আপন বড় ভাই সে কারণে তার টক শো পত্রিকায় নিয়মিত কলামের প্রতি আগ্রহটা আমার একটু বেশি ছিল। তার কাছ থেকে কিছু শিখতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু ইদানীং কালে তিনি যেন তার আপন গৌরব ধরে রাখতে পারছেন না। মনে হচ্ছে তিনি এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশটাকে খুব জটিল করে তুলেছেন। সকালে জামাতের পক্ষে বিকেলে বিএনপির পক্ষে কখনও ইন্ডিয়ার পক্ষে কখনও সরকারের পক্ষে। প্রিয় মানুষটির দীর্ঘ দিনের ভালো ইমেজ এই কয়দিনে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। আসলে তিনি কি চান হয়তো সেটা তিনি নিজেও বাঁচাই করতে পারছেন না। সাম্প্রতিক কালে তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ অনেকের কাছে বিশাল প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, তিনি যেন ফরমায়েশি কাজ করছেন। দিন দিন মানুষের কাছে তিনি চরম ঘৃনার পাত্র হতে চলেছেন। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিপিড়ীত নিষ্পেষিত অধিকার বঞ্চিত মানুষের পক্ষে যারা দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে মিডিয়া জগতে ভূমিকা রেখেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ডঃ মাহমুদুর রহমান, সফিক রেহমান, মুশফিকুল ফজল আনসারী, পিনাকী ভট্টাচার্য, ডঃ কনক সারোয়ার, মনির হায়দার, ইলিয়াস হোসেন, শামসুল আলম লিটন, মোস্তফা ফিরোজ সহ আরো অনেকেই। যুগে যুগে বীর শ্রেষ্ঠ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আদনান, রাফি সহ সহস্রাধিক আত্মত্যাগী শহীদের সাথে অনেকেই গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা এবং তার পতিত দোসরদের নানাবিধ ষড়যন্ত্র কিন্তুূ থেমে নেই। হাজারো আশংকা আর কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বিপ্লবী সরকার। মনন্তর গতিতে যৌথ বাহিনির কার্যক্রম! বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে লুটপাটের স্বর্গপুরী যারা করেছিল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারকীয় জঘন্য হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিল তারা সিংহভাগই ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। কাদের সহযোগিতায় কেমন করে শীর্ষ দূর্নীতিবাজ হত্যাকারী দেশের বাহিরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে? ফ্যাসিষ্ট স্বৈরশাসক খুনি হাসিনার দোসর দূর্নীতিবাজ এমপি, মন্ত্রী, আমলা কামলা এবং তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে, এই সরকার মানুষের কাছে আস্থা হারাবে। শক্ত হাতে দেশের হাল ধরতে না পারলে, নিশ্চিত করে বলতে পারি ব্যর্থ হবে বিপ্লব এবং ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস সরকার। বিপ্লবী সরকারের রূপরেখা যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে গঠন করা হয়নি। অনেক উপদেষ্টার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা হতাশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে লক্ষ কোটি মানুষ গভীর উদ্বিগ্ন! মহান বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা অর্জন কি রক্ষা করা যাবে?
সরকারের বিরুদ্ধে গঠনমূলক আলোচনা সমালোচনা সরকারের জন্য অবশ্যই সহায়ক। কিন্তু বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে রাজপথ কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানকে উত্তপ্ত করার বা ধূম্রজাল সৃষ্টির যে কোন চক্রান্ত বা চক্রান্তের প্রয়াস দ্রুত চিহ্নিত করে শক্ত হাতে প্রতিহত করে চক্রান্তকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে দীর্ঘ ১৭বছরের তাদের ব্যর্থতা কি ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিপ্লবের অবিস্মরণীয় আকাঙ্ক্ষা মনে প্রাণে ধারন করতে না পারলে আত্মত্যাগী শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল না হলে দূর্নীতি মুক্ত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। জাতীয় ঐক্য ছাড়া এই সরকার ব্যর্থ হতে পারে।

মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান

উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ ছাতক।
যুগ্ম সাধরণ সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।

শেয়ার করুন