বজ্রপাত ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সিলেট-সুনামগঞ্জে ৮ প্রাণহানি

সিলেটজুড়ে বজ্রপাত ও বিদ্যুৎপৃষ্টে ৮ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ৭ জন বজ্রপাতে ও একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট সদর উপজেলার কাটিমারা গ্রামে একজন, বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের সাড়ইল গ্রাম সংলগ্ন ডুবির হাওরে আরেকজন মারা যান।  

এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারে ২ জন, জামালগঞ্জ ও ছাতক উপজেলায় ২ জন, কোম্পানীগঞ্জে ১ জন পৃথক বজ্রপাতে এবং বিশ্বম্ভরপুরে ১ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছেন।

সিলেটের বিশ্বনাথে নিহত রেদওয়ান আহমদ (১৯) সাড়ইল গ্রামের ওলিউর রহমানের ছেলে ও এমসি কলেজের বিএসএস ১ম বর্ষের ছাত্র, এছাড়া সিলেট সদর উপজেলায় নিহত মফিজ আলী (৫০) পেশায় দিনমজুর।

সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ আহমেদ জানান, গত রাত থেকে সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে বজ্র বৃষ্টি হচ্ছিল। দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মফিজ আলী। তিনি পেশায় দিনমজুর। বজ্রপাতে তার শরীর ঝলসে গেছে।

নিহত রেদওয়ান আহমদের ভাই সুফিয়ান আহমদ জানান, গ্রামের পার্শ্ববর্তী হাওর সংলগ্ন পুকুর সেচকালে বিকট শব্দ হলে আমরা ২ ভাই পুকুর পাড়ে লুটিয়ে পড়ি। তখন সঙ্গীয় অন্যরা পানিতে ঝাপ দেন। জ্ঞান ফিরলে উঠে দেখি রেদওয়ানের মুখের একপাশ ঝলসে গেছে। পরে প্রতিবেশী ও স্বজনদের সহায়তায় তাকে সিলেট নর্থইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, রোববার সকালে ছাতক মল্লিকপুর গ্রামের পাশের হাওরে সুন্দর আলী নামের আরেক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বিশ্বম্ভরপুরে একজন মারা গেছেন।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত মাসুক আহমেদ পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্য রাজনগর গ্রামের কনু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে মাসুক আহমেদ তার বাড়ির পাশের হাওরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। সেখানে বজ্রপাতের ঘটনায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অপরদিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের মতুরকান্দি গ্রাম সংলগ্ন রাতের কোনো এক সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার সকালে স্থানীয় গ্রামের লোকজন ট্রান্সমিটার খুঁটির নিচে সরঞ্জামসহ তার মরদেহ দেখতে পান। তবে, তাৎক্ষণিক তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। গ্রামের লোকজন ধারণা করছেন রাতের আধারে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটার চুরি করতে এসে তার বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৩০), একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৮) বাড়ির পাশের হাওরে মাছ ধরতে যান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে পৃথক বজ্রপাতে শরিফ মিয়া (৩৫) নামের আরেক জেলের মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার কালাগোজা গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে। বাড়ির পাশে রাতে নয়া হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

শেয়ার করুন