মুসা ও ইউসুফ (আঃ) সহ অসংখ্য নাবী রাসুলের দেশ, পিরামিডের দেশ মিশরে এক সংক্ষিপ্ত সফরে। প্রথমে গেলাম সাড়ে চার হাজার বছর আগে নির্মিত পিরামিড দেখতে!

পিরামিড মূলত সমাধিক্ষেত্র। প্রাচীন মিশরের শাসনকর্তা ফারাওদের কিংবা ফিরআউনেদের মৃত্যুর পর তাদের সমাহিত করা হতো এই বিশাল সমাধিক্ষেত্রে। ফিরআউন একজন ব্যক্তি নন। এ নামটি তখনকার রাজাদের উপাধি ছিলো।

বৃহত পিরামিড ৩টি, কুফু, কাফরা এ মানকারা। প্রথমে গেলাম কুফু দেখতে এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট। এটি ৭৫৫ বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় ২০ বছর এবং শ্রমিক খেটেছিল আনুমানিক ১ লাখ। পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খন্ড দিয়ে। পাথর খন্ডের এক একটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন, আর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ ফুটের মত। এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল দূর দুরান্তের পাহাড় থেকে। পাথরের সাথে পাথর জোড়া দিয়ে পিরামিড তৈরি করা হত।

তারপর গেলাম মিউজিয়ামে, ফেরআউন- যে ২য় রেমেসিস নামে পরিচিত তার চেহারা সুরত দেখতে। হাত দুখানা তার নামাজের স্টাইলে রাখা। অথচ মৃত্যুর আগে নামাজ রোজাকে সে অস্বিকার করেছিলো। চুল সাদা। দেহে নখ, দাঁত সব আছে। শুধু ক্ষমতা নেই। অহংকার নেই। বড়ত্ব নেই। তাকে দেখে নব্য ফিরআউন কারো কারো কথা মনে হলো। বলতে মানা। তাই বললাম না! তবে সেখানে ফিরআউনের মমির সামনে যা লেখা রয়েছে- ইসলামী ইতিহাস কিংবা ধর্মীয় ইতিহাসের মধ্যে তার কোনো মিল নেই। তাকে দেখানো হয়েছে Patriotic, hero হিসেবে!!

তারপর ঘুরে দেখলাম - আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়, জোহরের নামাজ পড়লাম- আমর ইবনুল আস (রাঃ) যেটা আফ্রিকান প্রথম মাসজিদ। ৬৪১ সালে মিশর বিজয় করে খালিফাহ উমার (রাঃ) এর নির্দেশে তা তিনি তৈরি করেন। বহুদিনের শখ ছিলো এ মাসজিদে নামাজ পড়লাম। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ শখটা পূরণ করে দিলেন।

রাস্তা -ঘাট, ঘর-বাড়ি অনেকটা ঢাকার মতো। কায়রো ঘিরে মরভূমি থাকার কারণে ধুলোবালি ফ্রিতে পাওয়া যায়। দালালদেরও কোনো ক্রাইসিস নেই। কায়রো এয়ারপোর্টে নামার পরপরই অন্তত পঞ্চাশ জন লোক এসে নিয়ে নিতে চাইলো আমাকে হোটেলে। তাদের কারো সাথে ট্যাক্সি নেই অথচ তার ট্যাক্সি ড্রাইভার!

সব মিলে কায়রোতে বেশ ভালো সময় কাটলো! আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়র এক শাইখ তাজদীদ আমার সাথে ছিলেন। উনিই অনেক কিছু আমাকে দেখালেন। ইন শা আল্লাহ Ansarey International থেকে মিশরে একটি ট্যুরের plan আছে।

আল্লাহ তা করার তাওফিক দান করুন।

আমিন।

আবুসাঈদ আনসারী

মার্চ ১০, ২০২৪॥ লন্ডন, ইংল্যান্ড ॥