কারিগরি শিক্ষা উন্নত দেশ ও জাতি গঠনের রূপকার
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:০৭ মিনিট
পলিটেকনিক শিক্ষা পরিবার গ্রুপের পক্ষ থেকে
ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) এর গৌরবোজ্জ্বল ৫৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের সকল প্রকৌশলীবৃন্দদের শুভেচ্ছা।
কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব :
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সান্নিধ্যে থেকে বাস্তবমুখী ও হাতে-কলমে শিক্ষাই হলো কারিগরি শিক্ষা।
গতানুগতিক সাধারণ শিক্ষার বাইরে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তি, শিল্প, কৃষি এমন কী কলকারখানার যন্ত্রপাতি ব্যবহারে আধুনিক ও বিঞ্জান সম্মত ভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তোলা হয়।
কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে কোন শিক্ষার্থীকেই বেকারত্বে অভিশাপ পোহাতে হয় না। কারন একটি বিষয় আমরা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছি – কর্ম দক্ষ চাকরি প্রার্থীদের চাহিদা তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি দেশের শ্রম বাজারে। কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ এমন কর্মীর অভাব হলে সেরা পর্যায়ের প্রক্রিয়া করন শিল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঘোষনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। বাংলাদেশের বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নতির জন্য কারিগরি শিক্ষা সময়ের দাবি।
অভিভাবক সমাজে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বিশেষ ভাবনা না থাকায় খুব কমসংখ্যক কারিগরি শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা গ্রহন করেন।
এছাড়াও অতীত কাল থেকেই এমন একটি ভ্রান্ত ধারণা মানুষের মধ্যে বদ্ধ মূল পড়ালেখায় তুলনামূলক কম মেধাবী শিক্ষার্থীরাই কারিগরি শিক্ষা গ্রহন করেন। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে এটি সম্পূর্ণ একটি ভূল ধারনা যা আমরা মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছ থেকে বহুবার শুনেছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষার ভাবনা ও শিক্ষার দৃষ্টি ভঙ্গি তার সামগ্রিক রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গি বা আদর্শের সাথে মিল রয়েছে। বিশেষ ভাবে লক্ষ্যনীয় জাতির পিতা কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষা কে গুরুত্ব দিয়ে তৎকালীন সময় কুদরতি-ই খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ২০১৫ সালে কারিগরি শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করে দেশের ৬৪ টি জেলায় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, সরকারি ৪৯ টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন।
কিন্তু আজ অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই বলতে হয় কারিগরি শিক্ষার বেহাল দশা যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে এই শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা আছে, কারিগরিতে প্রতি ১২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো— আছে মাত্র ১৮ শতাংশ শিক্ষক। বাকি ৮২ শতাংশ শিক্ষকের পদ ফাঁকা।
এছাড়াও কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে একটি র্দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল যা ২০২০ সালে ২০ শতাংশ, ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০৫০ সাল নাগাদ এই হার ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হবে বলে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমরা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছি তা ২০ সালেই টার্গেট পূরণ করতে পারে নি। কারিগরি শিক্ষার বেহাল দশার আরেক বাস্তব চিত্রের দেখা মিলে দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গুলোতে নেই উন্নত ল্যাব, সহ যন্ত্রপাতি নেই দক্ষ শিক্ষক।
ফলে আস্তে আস্তে এই শিক্ষা ব্যবস্থা যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষার এই সমস্যা সমাধানে ও উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের সচেতন মহল কে এগিয়ে আসতে হবে। দ্রুত শিক্ষক সংকট সমস্যা সহ আনুষঙ্গিক সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভাবে কারিগরি শিক্ষার প্রতি আরো গুরুত্ব আরোপ করতে হবে সরকার কে।
মনে রাখতে হবে কারিগরি শিক্ষা নিলে দেশ- বিদেশে কর্ম মিলে।
লেখক:-
রায়হান সরকার
সিভিল বিভাগ,ঢাকা পলিটেকনিক
প্রতিষ্ঠাতা – পলিটেকনিক শিক্ষা পরিবার।