ইটালি পাঠানোর নামে জগন্নাথপুরের যুবককে লিবিয়ায় নির্যাতন
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯:৪০ মিনিটইতালি পাঠানোর নামে জগন্নাথপুরের মো. রুবেল মিয়াকে লিবিয়ায় নিয়ে ক্যাম্পে রেখে নির্যাতন ও বড় অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। ভুক্তভোগী রুবেল মিয়ার ছোট ভাই জগন্নাথপুর উপজেলার গলাখাল গ্রামের মরহুম সিকন্দর মিয়ার পুত্র সাহেল আহমদ এ অভিযোগ করেছেন। শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে সাহেল আহমদ বলেন, আমার বড় ভাই মো. রুবেল মিয়াকে ইটালি পাঠানোর জন্য শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের মৃত আশিক মিয়ার পুত্র এনাম তালুকদার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হই। প্রথমে ৭ লাখ টাকা সাব্যস্ত করে ইটালি পাঠানোর কাজ শুরু করি। কিন্তু এনাম আমার ভাইকে সরাসরি ইটালি প্রেরণ না করে প্রথমে দুবাই, পরে লিবিয়ায় নিয়ে তাদের ক্যাম্পে রাখেন। আমার ভাইর কাছ থেকে দুবাই ও লিবিয়ার কথা শুনে এনামের নিকট জানতে চাইলে সে বলে দুবাই এবং লিবিয়া হয়েই তাকে ইটালি পাঠানো হবে। কিন্তু তাকে ইতালি না পাঠিয়ে বিভিন্ন ছলে কৌশলে নির্যাতন করে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে।
সাহেল আহমদ বলেন, লিবিয়ায় থাকাকালীন তাদের ক্যাম্পে আমার ভাইকে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের করে আমাদের কাছ থেকে প্রথমে ৪ লাখ ৫০ হাজার এবং পর্যায়ক্রমে ৫ লাখ, ৪ লাখ ও ২ লাখ টাকা আদায় করে। আমার ভাইকে সেখানে তারা কোনো খাবার না দেওয়ায় বিভিন্ন সময়ে খাবার বাবদ প্রায় ২ লাখ টাকা পাঠিয়েছি।’ ভাইকে নির্যাতনের অভিযোগ করে সাহেল বলেন, আমার ভাইর উপর তাদের অমানসিক নির্যাতন দেখে আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আরও ১ লাখ ৭০ হাজার পাঠাই। সব মিলে আমরা ২৬ লাখ টাকার বেশি প্রদান করি। আমার ভাইকে নির্যাতনের অনেক ছবি ও ভিডিও আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এনাম তালুকদারের শ্যালক জগন্নাথপুর উপজেলার কামারখাল গ্রামের মৃত হাবিব মিয়ার পুত্র রুবেল মিয়ার মাধ্যমে ১৩ লাখ ২০ হাজার এবং বাকি ১৩ লাখ টাকা সরাসরি এনামের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এসব ঘটনার সঙ্গে এনামের চাচা শান্তিগঞ্জ উপজেলার আসামপুর গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র আশরাফ মিয়া ও এনামের স্ত্রী সাবিনা বেগম জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সাহেল।
টাকা নিয়ে ইটালি না পাঠিয়ে এখন উল্টো নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন এনাম- এমন অভিযোগ করে রুবেল মিয়ার ছোট ভাই বলেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত এনাম আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি এডিট করে কুৎসা রটিয়ে আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করছেন। এ ব্যাপারে এনামের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কিছু করতে পারবেন না জানিয়ে আমাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। মানবপাচার চক্রের হোতা এনাম তালুকদার কাছে এলাকার বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন জানিয়ে তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগিতা কামনা করেন। এনামসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশ্ঙ্খৃখা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।