
আবদুল আহাদ, যুক্তরাষ্ট্র, করেসপন্ডেন্টঃ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে জাতিসংঘেরআবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে সমর্থন করে সংস্থাটি। এপ্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিওগুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক বলেছেন, বাংলাদেশের জাতিসংঘ টিমের প্রতি মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের পূর্ণআস্থা রয়েছে। এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয় যে, যদি কোনো সদস্য রাষ্ট্র কোনো প্রতিনিধির বক্তব্যে মনে করে তাদের এ ইস্যুতেকিছু বলার আছে তাহলে তাকে ডেকে করতে পারে। তবে আমাদের বাংলাদেশে টিম যা করছে তাতে জাতিসংঘের পুর্ণ আস্থারয়েছে।
এছাড়া বিরোধী দল বিএনপির দেশব্যাপি সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশি হামলায় ২ জন নিহত এবং হাজারোবিক্ষোভকারী আহত হওয়া প্রসঙ্গে এই মুখপাত্র বলেন, জনগণের কথা বলার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার থাকতেহবে। কর্তৃপক্ষকে জনগণের সে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২১ জুলাই (শুক্রবার) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশ ইস্যুতে করা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র স্টিফেনডোজারিক।
উল্লেখ্য, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশেজাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। ওই ঘটনার প্রতিবাদে গত ২০ জুলাই ঢাকায় জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্তআবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকার।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শেলডন ইয়েটকে তলব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আসাদ আলমসিয়াম। এসময় অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘ যেন প্রকাশ্যে এ ধরনেরমন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে-সরকারের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
গোয়েন লুইস এই মুহূর্তে বাংলাদেশে না থাকায় বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট জাতিসংঘের আবাসিকসমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছেন।
ব্রিফিংয়ে জাস্ট নিউজের জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জানতে চান, “ঢাকা-১৭আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট পোস্ট করায় বৃহস্পতিবারবাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসকে তলব করেছে দেশটির সরকার। বিরোধী দলগুলো এইউপনির্বাচন বয়কট করেছে। হামলার ঘটনায় শুধু জাতিসংঘ নয় বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১২টি দেশ এইহামলার নিন্দা জানিয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন- জাতিসংঘ মহাসচিব কী এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত? একটি সদস্য রাষ্ট্র কেনোজাতিসংঘের প্রতিনিধিকে এভাবে তলব করবে? উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট পোস্ট করায় এভাবে তলব করা যায়?”
জবাবে ডোজারিক বলেন, “এখানে দুটি বিষয় লক্ষনীয় । প্রথমত, বাংলাদেশে জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলে যারা কাজ করছেনতাদের সকলের ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যদি কোনো সদস্য রাষ্ট্র কোনো প্রতিনিধির বক্তব্য শোনার পরমনে করে তাদের এ ইস্যুতে কিছু বলার আছে তাহলে তাকে ডেকে বলতে পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়, যা একটি নিয়মের অংশবলা যায়। সদস্য রাষ্ট্র যদি মনে করে কোনো প্রতিনিধির বক্তব্য তারা সন্তুষ্ট নয় তাহলে তারা দ্বিমত পোষণ করতেই পারে। কিন্তুবাংলাদেশে জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের কাজে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।”
অপর এক প্রশ্নে এই সংবাদদাতা জানতে চান, “আগামী জানুয়ারিত অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহসারাদেশে লাখো মানুষ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। এই বিক্ষোভে বিরোধী দলের দুই জন কর্মীনিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে হাজারো মানুষ। এই পোডিয়াম থেকে আপনি বারবার অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আহবানজানিয়েছেন। আপনি কী মনে করেন বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব?”
জবাবে ডোজারিক বলেন, “আমি মনে করি জনগণের কথা বলার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে।জনগণের সেঅধিকার নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। এটা সকলের জন্য প্রযোজ্য। এবিষয়ে এর আগেও আমরা আলোকপাত করেছি ।নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই আমি এখনই কোনো অনুমান করতে চাইনা।”